AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Roger Federer Retires: টেনিস, তোমায় ছেড়ে যাব না কোনওদিন; রজারের খোলা চিঠি…

অবশেষে ঘনিয়ে এল সেই দিন। আশা, আশঙ্কায় ভুগতে থাকা টেনিস বিশ্বকে আকস্মিকভাবে বিদায় জানালেন রজার ফেডেরার। অবসরকালে তুলে নিলেন কলম। লিখলেন দীর্ঘ এক চিঠি। তুলে ধরল TV9 Bangla।

Roger Federer Retires: টেনিস, তোমায় ছেড়ে যাব না কোনওদিন; রজারের খোলা চিঠি...
Image Credit: Twitter
| Edited By: | Updated on: Sep 15, 2022 | 8:27 PM
Share

টেনিস পরিবার এবং অন্যরা…

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টেনিস আমাকে প্রচুর উপহার দিয়ে চলেছে। এই টেনিস থেকে যে প্রচুর প্রাপ্তি, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমার বন্ধুদের, প্রতিদ্বন্দ্বীদের, যে ভক্তদের ছাড়া টেনিস অপূর্ণ, তাদের একটা খবর দিতে চাই।

গত তিনটে বছর ধরে চোট এবং অস্ত্রোপচারের কারণে আমাকে বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। আমি নতুন করে ফিরে আসার জন্য হার্ডওয়ার্ক করেছি। যাতে তীব্র প্রতিযোগী হতে পারি। কিন্তু এটাও মানতে হচ্ছে যে, আমার শরীরের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। দেরিতে হলেও আমার শরীর যে বার্তা দিয়েছে, তা মানতেই হবে। এখন ৪১ বছর বয়স আমার। গত ২৪ বছর ধরে দেড় হাজারেরও বেশি ম্যাচ খেলেছি। আমি নিজে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি রোমাঞ্চ আমি টেনিস থেকে পেয়েছি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, এ বার থামতে হবে আমাকে। শেষ করতে হবে আমার কেরিয়ার।

আগামী সপ্তাহে লন্ডনে লেভার কাপ হতে চলেছে আমার শেষ এটিপি ইভেন্ট। আগামী দিনে আমি হয়তো অনেক অনেক টেনিস ম্যাচ খেলব। কিন্তু সেগুলো আর গ্র্যান্ড স্লাম কিংবা ট্যুর ইভেন্ট হবে না।

এই অবসর নেওয়া আমার কাছে বিরাট একটা সিদ্ধান্ত। কারণ, এতদিন যা পেয়েছি, এর পর আমি সবই মিস করব। আবার একই সঙ্গে তৃপ্তিও থাকবে, ফিরে দেখাও থাকবে। এটা যখনই ভাবছি, নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে। অন্য ধারার প্রতিভা হিসেবে টেনিস আমাকে গ্রহণ করেছিল। যে পর্যায়ে আমি খেলেছি, সেটা কোনও দিনই ভাবতে পারিনি।

আমার স্ত্রী মির্কাকে আলাদা করে ধন্যবাদ দিতেই হবে। ও প্রতিটা মুহূর্তে আমার সঙ্গে কাটিয়েছে। যে কোনও ফাইনালের আগে ও আমাকে উষ্ণতা দিয়েছে। এমনকি, আট মাসের প্রসূতি হওয়া সত্ত্বেও ও গ্যালারিতে বসে আমার ম্যাচ দেখেছে। আমার যে কোনও ছেলেমানুষিকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে গত ২০ বছর ধরে। আমার সন্তারদেরও ধন্যবাদ দিতে হবে। যে কোনও ম্যাচ জেতার পর গ্যালারিতে ওদের দেখতে পাওয়া আমার কাছে বরাবরই অন্যরকম তৃপ্তিু ছিল।

আমার বাবা-মা ও বোনকে আলাদা করে ধন্যবাদ দিতে হবে। আমি পারব কি পারব না, না জেনেই সব সময় আমাকে সাপোর্ট করে গিয়েছে। আমার যত প্রাক্তন কোচ, যারা আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাব। সুইস টেনিসকেও আলাদা করে ধন্যবাদ দিতে হবে, তরুণ এক টেনিসকে তার সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

আমার টিমকেও ধন্যবাদ দেব। ইভান ড্যানি, রোল্যান্ড, সিভ, পিয়েররা বরাবর আমার পাশে থেকেছে, প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিয়েছে। টনি গত ১৭ বছর ধরে আমার ব্যবসাটা ম্যানেজ করেছে। ওদের সবাইকে আরও একবার ধন্যবাদ।

টেনিস কোর্টে আমার প্রতিপক্ষ যারা, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। ওরা না থাকলে কেরিয়ার জুড়ে কিছু ঐতিহাসিক ম্যাচ খেলার সুযোগ করার পাইনি। ওই ম্য়াচগুলো ভোলার নয়। আমরা সেরা তাগিদ দিয়ে ম্যাচগুলো খেলেছি। আমি সব সময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। যাতে টেনিস ইতিহাসকে সম্মান জানাতে পারি। আমি এবং আমার প্রতিপক্ষরা একে অপরকে তাতাতাম। ওদের সঙ্গে মিলে টেনিসের একটা নতুন মান তৈরির চেষ্টা করতাম।

সব কিছুর উপরে উঠে স্পেশাল কৃতজ্ঞতা আমার অবিস্মরণীয় ভক্তদের। ওরা জানে না, কী মাত্রায় ভরসা আর শক্তি জুটিয়েছে। গ্যালারি ভরা স্টেডিয়ামে পা দিলেই বাড়তি প্রেরণা পেয়ে যেতাম। ওটাই ছিল আমার জীবনের সেরা রোমাঞ্চ।

গত ২৪টা বছর আমার কাছে একটা অ্যাডভেঞ্চারের মতো। মনে হয়, যে এই তো গতকালকের কথা এ সব। এমন তৃপ্তি জীবনভর থেকে যাবে। ৪০টা আলাদা দেশে এইরকম দর্শকদের সামনে খেলার সুযোগ পেয়েছি। আমি হেসেছি, কেঁদেছি, সাফল্যের আনন্দ পেয়েছি, হারের যন্ত্রণা পেয়েছি।

যখন আমি টেনিস শুরু করেছিলাম, বলবয় ছিলাম। আমার শহর বাসেলে যে সব টেনিস প্লেয়ার খেলতে আসত, তাদের বিস্ময় নিয়ে দেখতাম। ওদের দেখতে দেখতেই একসময় টেনিস প্লেয়ার হওয়ার স্বপ্নটা দেখতে শুরু করেছিলাম। ওই স্বপ্নই আমাকে হার্ডওয়ার্ক করিয়েছিল। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে শিখিয়েছিল। কিছু সাফল্য আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল। সেগুলোই তৈরি করে দিয়েছিল আমার একান্ত নিজস্ব পথ।

টেনিস, আমি তোমাকে বড্ড ভালোবাসি। তোমাকে ছেড়ে যাব না কোনও দিন।

রজার ফেডেরার