জয়দীপ দাস
কমনওয়েলথ গেমসে (Commonwealth Games) প্রতিবারই বড় সাফল্যের মুখ দেখে ভারত (India)। কিন্তু, অলিম্পকের ফল দেখেই মন খারাপ হয়ে যায় ক্রীড়াপ্রেমীদের। আর সে কথা মাথায় রেখেই এ বার ভারতের পদকজয়ের সংখ্যা বাড়াতে মাঠে নামছে আইআইটি মাদ্রাজ। সঙ্গে থাকছে ইন্সপায়ার ইন্সটিটিউট অব স্পোর্টস বা আইআইএস। টোকিও অলিম্পিকের রেশ কাটতে কাটতেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল আগামীর লক্ষ্যমাত্রা। আর সে কারণেই এ বার বড় নজর থাকছে বক্সিংয়ে। ২০২৪ সালের অলিম্পিকে সামগ্রিকভাবে কমপক্ষে ৫০ টি পদক জিততে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক।
নজর প্যারিস অলিম্পিকে
২০২১ সালে সাতটি পদক জেতা ভারত কয়েক বছরের মধ্যে পঞ্চাশের সংখ্যা কি ছুঁতে পারবে? আপাতত এমন প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে অনেকেরই মনেই। সেই ভাবনাকেই এবার আক্ষরিকভাবে সফল করতে যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়েছে আইআইটি মাদ্রাজ ও আইআইএস। মুষ্টিযুদ্ধে ভারতকে ‘মেডেল দৌড়ে’ এগিয়ে দিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকেই হাতিয়ার করেছে তারা। সূত্রের খবর, খেলোয়াড়দের জন্য একটি বিশ্লেষণমূলক মঞ্চ তৈরির ব্যবস্থা করছে এই দুই সংস্থা। সে ক্ষেত্রে হাতিয়ার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক সফটওয়্যারকে। এই সফটওয়্যারের মধ্য দিয়ে মুষ্টিযোদ্ধাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট, শরীরের গতিবিধি পরিমাপ, কোচিংয়ে সাহায্য সহ নানা কাজ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে স্মার্ট-বক্সার?
সূত্রের খবর, বক্সিং রিংয়ের চারপাশে থাকবে ভিডিয়ো ক্যামেরা। সেই ক্যামেরার হাত ধরেই বক্সারের সামগ্রিক গতিবিধি, তাঁর শরীরের রিফ্লেক্সশন, আক্রমণের ধরন, শরীরী ভঙ্গিমাগুলির পরিমাপ করা হবে। বিশেষভাবে নজর রাখা হবে বক্সারদের দুই হাতের গতিবিধি। খেলোয়াড়দের শরীরের গতিবিধি রেকর্ড করার জন্য থাকছে ওয়্যারলেস ইএমজি সেন্সর। তাঁর নড়াচড়া রেকর্ড করার জন্য থাকছে বিশেষ পরিমাপক ইউনিট। এই সমস্ত তথ্যই রেকর্ড হবে স্মার্টবক্সার বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্মে। আইআইটি মাদ্রাজ ও আইআইএসের গবেষকদের দাবি এই বিশেষ সফটওয়্যারের মধ্য দিয়েই খেলোয়াড়রা নিজেদের দৈনিক প্র্যাকটিসের মধ্যে দিয়েই তাঁদের দুর্বলতাগুলিকে খুঁজে পেতে সক্ষম হবেন। একইসঙ্গে এই অত্যাধুনিক যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে ঠিক কোন খাতে নিজেদের উন্নতি প্রয়োজন তা আন্দাজ করতে পারবেন যোদ্ধারা। পাশাপাশি, শারীরিক দুবর্লতা যা হয় তো আগামীতে বাধা হতে পারে সেই বিষয়টিকেও চিহ্নিত করবে এই যন্ত্র।
এ প্রসঙ্গে আইআইটি মাদ্রাসের রসায়ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রঙ্গাথন শ্রীনিবাসন বলেন, “এই প্রযুক্তিটি খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষকের মধ্যে একটি ভাবনার সেতু তৈরি করবে। বুঝতে সাহায্য করবে কোন খাতে তাদের সবথেকে বেশি উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁদের কোচিংয়ের কাজ আরও সহদ করে দেবে।” আগামীদিনে এই বিশেষ সফটওয়্যারের হাত ধরেই অলিম্পিকের ময়দানে ভারতের পদক জয়ের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে বলে আশাবাদী দুই প্রতিষ্ঠানের গবেষকরাই। এখন দেখার এই ‘বুদ্ধিমান’ সফটওয়্যার ভারতে আর কত নতুন মেরি কমদের জন্ম দেয়।