বয়স মাত্র ১৪। ভারতীয় অ্যাথলিটদের মধ্যে প্যারিস অলিম্পিকে সবচেয়ে কম বয়সী। জাতীয় স্তরে একাধিক পদক জিতেছেন। নজরে এ বার অলিম্পিক পদক। সাঁতারে নামছে ধিনিদি দেশিংহু। অথচ জলেই যত ভয় ছিল ধিনিদির। শুরুর দিকে কোনও কম্পিটিশন থাকলে আরও পরিস্থিতি খারাপ হত। সবটাই মানসিক। কখনও টুর্নামেন্টের আগের দিন জ্বরে কাঁবু হয়ে পড়ত, আবার কখনও টুর্নামেন্টের দিন বমি হত। জলই যেন ছিল তার সবচেয়ে বড় শত্রু। সেই জলই হয়ে উঠছে সবচেয়ে ভালো বন্ধু। সাঁতারের শুরুটা ছিল নেহাতই কাকতালীয়। সেটাই এখন হয়ে উঠেছে তার উত্তরণের পথ। কী ভাবে শুরু হল তার জল-চলা?
তখন ধিনিদির তিন বছর। সাধারণত এই বয়সের বাচ্চারা কথা বলতে শিখে যায়। ধিনিদি স্পষ্ট করে কথা বলতে পারত না। বেশির ভাগ সময় চুপচাপই থাকত। স্পষ্ট করে কথা বলা অনেক দেরিতে শুরু। তবুও খুব কম। মা জেসিতার মনে হয়েছিল, কোনও খেলার ওকে জুড়ে দিল ভাল হতে পারে। নতুন বন্ধু হবে। হয়তো আরও কথা বলবে। কোন খেলায় যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে বেশি ভাবতে হয়নি। বাড়ির কাছেই ছিল সুইমিং পুল। সেটাই প্রথম মাথায় আসে। তাকে সুইমিংয়ে দেওয়া হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ধিনিদি বলেছেন, ‘জল আমার চূড়ান্ত অপছন্দের ছিল। নামতে পছন্দ করতাম না। আমার কাছে খুবই কষ্টকর ছিল। তখন বোধ হয় আমার ছয় বছর। তখনও আমার ভয় লাগত। সাঁতার শেখানোর আগে, আমাকে শুধু পুলের কাছে নিয়ে যাওয়া হত। যাতে বারবার একই জায়গায় গিয়ে আমি একটু ধাতস্থ হতে পারি। এই থেকেই শুরু।’
সেই ছোট্ট ধিনিদি এখনও ছোটই বলা যায়। মাত্র ১৪ বছরেই নামছে প্যারিস অলিম্পিকে। সঙ্গী অভিজ্ঞ শ্রীহরি নটরাজ। ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে নামতে চলেছে ধিনিদি। জলের সঙ্গে বন্ধুত্ব হলেও টুর্নামেন্টে নামার আগে বাড়তি চাপ নিতে পারত না ধিনিদি। সেই মেয়েই এখন অলিম্পিকের মঞ্চে। জাতীয় গেমসে সাতটি সোনার পদক জিতেছে। যা রেকর্ড।
২০২২ সালে হানঝাউ এশিয়ান গেমসেও অংশ নিয়েছিল ধিনিদি। প্যারিস অলিম্পিকে জোড়া টার্গেট ধিনিদির। পদক না এলেও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের জন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। প্রথম টার্গেট অবশ্য পদকই।