IPL 2021: ওয়ার্নারদের হারিয়ে চিপকে চমক বাংলার শাহবাজের
জোড়া ম্যাচ জিতে আইপিএল টেবিলের শীর্ষে বিরাট কোহলির দল। রবিবার নাইটদের বিরুদ্ধে নামবে আরসিবি।
অভিষেক সেনগুপ্ত
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ১৪৯/৮ (২০ ওভারে) সানরাইজার্স হায়দারাবাদ: ১৪৩/৯ (২০ ওভারে)
করোনা নিয়ে ফের জারি হচ্ছে নতুন সতর্কতা। ফিরে আসছে নানা বিধিনিষেধ। মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। সারা দেশের মতো করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ ঝাপটা মারছে চেন্নাইয়েও। সে সব সযত্নে এড়িয়ে যদি পা রাখা যায় চিপকে, এক আশ্চর্য সতর্কতার খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। রান তাড়া করতে নেমেছে যে টিম, তারা যেন ডেথের ছ’ওভার আগেই খেলাটা শেষ করে ফেলে। না হলে কিন্তু বিপদ আছে!
চিপকের শেষ ছ’টা ওভার সত্যিই বিষাক্ত হয়ে উঠছে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে এই চিপকই হজম করে ফেলেছে কেকেআরকে। চব্বিশ ঘণ্টা পর তার নতুন শিকার হায়দরাবাদ। ডেভিড ওয়ার্নারের হাত ধরে সূর্য উঠব-উঠব করেও গ্রহণে হারিয়ে গেল। আরসিবির ১৪৯/৮ তাড়া করতে নেমে ১৪৩/৯ থামতে হল এসআরএইচকে।
Glenn Maxwell with the well deserved Man of the Match award as #RCB register their second win of #VIVOIPL 2021.
Scorecard – https://t.co/kDrqkM24yz #SRHvRCB #VIVOIPL pic.twitter.com/eDaiAIzv5p
— IndianPremierLeague (@IPL) April 14, 2021
টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ডেথ টাইম মানে, শেষ ৩০টা বল। মঙ্গলবারের ম্যাচে রোহিত শর্মাদের বিরুদ্ধে ইওন মর্গ্যানদের লক্ষ্য ছিল ৩১। বুধবার বিরাট কোহলির টিমের বিরুদ্ধে ওয়ার্নারদের করতে হত ৪২। কুড়ি-বিশের ম্যাচে ৪২ কোনও রানই নয়। বরং বোলিং টিমের কাছে হাড়হিম করা পরিস্থিতি। হারের আতঙ্ক তখনই চেপে ধরে। এই চিপক ‘খেলা’ দেখাচ্ছে শেষ ৩০ বলেই। মুম্বই-কেকেআর ম্যাচে ওই ডেথেই রাহুল চাহার নামের ২১ বছরের এক তরুণকে হিরো বানিয়ে দিয়েছিল চিপক। এ দিন আবার তুলে ধরল শাহবাজ আহমেদ নামের আর এক নতুন মুখ।
বাংলার হয়ে গত মরসুমে চমৎকার পারফর্ম করা বাঁ হাতি অলরাউন্ডারকে গত বছরই টিমে নিয়েছিল আরসিবি। আমিরশাহিতে দুটো ম্যাচ খেলেওছিলেন শাহবাজ। সে ভাবে ছাপ রাখতে পারেননি। কিন্তু বুধবার চেন্নাইয়ে উত্থান হল তাঁর। তিন নম্বরে নেমে ১৪ রান করেছিলেন। ডেথে নিজের দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে ঘুরিয়ে দিলেন খেলাটাই। মণীশ পাণ্ডে (৩৮), জনি বেয়ারস্টো (১২) ও আব্দুল সামাদের (০) উইকেট নিলেন বাঁ হাতি স্পিনার। সব মিলিয়ে ২ ওভার বল করে ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ম্যাচের সেরা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বদলে শাহবাজকেও বাছা যেতে পারত। বাকি খেলাটা শেষ করলেন হর্ষল প্যাটেল আর মহম্মদ সিরাজ মিলে।
ম্যাচের শুরুটা কিন্তু অন্য গল্পই বলছিল। বিরাট কোহলি ২৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হতেই আরসিবি কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। দেবদত্ত পাড়িক্কল (১১) ও বাংলার শাহবাজ আহমেদ (১৪) দ্রুত ফিরে যান৷ এবি ডে ভিলিয়ার্সকে (১) ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রশিদ খান। বল তখন থেকেই ঘুরতে শুরু করেছে চিপকে। জেসন হোল্ডার, রশিদদের দিয়ে রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন ওয়ার্নার। শুধু ম্যাক্সওয়েল লড়াই করেছিলেন ওই পর্বে। সেই ২০১৬ সালে শেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন আইপিএলে। পাঁচ বছর পর আবার অজি অলরাউন্ডারের ব্যাটে মোটামুটি রান দেখতে পাওয়া গেল৷ ৪১ বলে ৫৯ রানের ইনিংসটা না খেললে বিরাটদের লড়াই করার মতো পুঁজিই থাকত না৷
আরও পড়ুন:IPL 2021: কিং খানকে ঠান্ডা করলেন রাসেল
রান তাড়া করতে নেমে ওয়ার্নার রানের ফুলঝুরি ছোটাতে শুরু করেছিলেন। তখন মনেই হয়নি হায়দরাবাদ ম্যাচটা হারতে পারে। বরং আরসিবির হারের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। ভাবনায় ঢুকে পড়েছিল, আইপিএলের বয়স এখন ১৪। আর কয়েক বছর পর ভোট দেওয়ার বয়স হয়ে যাবে। তবু বোধহয় ট্রফি জয়ের স্বপ্নপূরণ হবে না। ৩৭ বলে ৫৪ করে ওয়ার্নার আউট হতেই গল্পে মোচড়।
আইপিএল এমনই। টুইস্টের গল্প। উত্থান-পতনের গল্প। চার-ছয়ের গল্প। অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতার গল্প। এই আইপিএলের কাহিনিতে নতুন টুইস্ট এনেছে চিপক। কিসসা ডেথ কা! শেষ ৩০ বল— যো ডর গ্যয়া, সমঝো ওহ্ মর গ্যয়া! চিপককে চোখে চোখ রাখবে, এমন টিম কি আইপিএলে নেই?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ১৪৯/৮ (ম্যাক্সওয়েল ৫৯, বিরাট ৩৩, শাহবাজ ১৪, হোল্ডার ৩/৩০, রশিদ ২/১৮, ভুবি ১/৩০)। সানরাইজার্স হায়দারাবাদ ১৪৩/৯ (ওয়ার্নার ৫৪, মণীশ ৩৮। রশিদ ১৭, শাহবাজ ৩/৭, সিরাজ ২/২৫, হর্ষল ২/২৫)।