
কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টা। তারপরই পাল্টে যাবে ক্যালেন্ডার। নতুন বছরে পা রাখবে পৃথিবী। ফেলে যাওয়া বছরে প্রাপ্তি অনেক। অপ্রাপ্তিও। সঙ্গে বিতর্কও। এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে এই ২৫এ, যা ভোলা যাবে না নতুন বছরে। হয়তো স্মৃতিতে থেকে যাবে অনেকদিন। কী সেই বিতর্ক? তুলে ধরল টিভি নাইন…
২০১১ সালে প্রথমবার কলকাতায় পা রেখেছিলেন লিওনেল মেসি। সেবার এসেছিলেন ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি খেলতে। আবার এলেন ফুটবলের রাজপুত্র। এবার অন্য রূপে। কিন্তু মেসির এই কলকাতা সফর কলঙ্কিত হয়ে থাকল। যুবভারতীতে মেসি পা রাখার পরই ধরা পড়ে অব্যবস্থার ছবি। মাঠে অযাচিত লোকজনের ভিড়। সেলফি তোলার ভিড়। নেতা, মন্ত্রীদের আত্মীয় পরিজনদের হামলে পড়া। গ্যালারিতে বিপুল টাকা খরচ করে মেসিকে দেখতে যাওয়া ভক্তরা ঈশ্বরের দর্শনই পেলেন না। রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গ্যালারি। মেসি মাঠ ছেড়ে চলে যেতেই যুবভারতী ধংস্বস্তুপে বদলে যায়। এর জেরে ক্ষমতা চাইতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিতর্কে পড়ে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন অরূপ বিশ্বাস। তাতেও কি বিতর্ক কমেছে। ভারত ভ্রমণের যে ছবি মেসি তাঁর ইন্সটাগ্রামে তুলে ধরেছেন, তাতে উল্লেখই নেই কলকাতার। ভারতীয় ফুটবলের মক্কা এই লজ্জা কি ভুলতে পারবে কোনও দিন?
মেসির কলকাতা সফর
আইপিএলের ট্রফি জয় এই প্রথম। সেলিব্রেশনের মাত্রা যে আকাশ ছোঁবে, আন্দাজই করা গিয়েছিল। কিন্তু তাতে যে লাগাম পরানোর চেষ্টা থাকবে না, তা ভাবা যায়নি। বিরাট কোহলি ও আরসিবির ট্রফি সেলিব্রেশন দেখতে গিয়ে চিন্নাস্বামীতে প্রাণ হারালেন ১১ জন। বেঙ্গালুরু পুলিশের অব্যবস্থা এসেছিল খবরে। তার থেকেও বেশি চর্চায় এসেছিল আরসিবির কর্তাদের বোঝাপড়ার অভাব। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম সংকীর্ণ গেটের কথা আগে থেকে ভাবা হয়নি। সেলিব্রেশন নিয়ে আগাম বৈঠক হয়নি। পুলিশও আন্দাজ করতে পারেনি সেলিব্রেশনের বহর। তারই জন্য ১১ তাজা প্রাণ চলে যায়। আরসিবি এবং সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ওই পরিবারের, তা কি কোনও দিন পূরণ করা সম্ভব?
বেঙ্গালুরুতে হারিয়ে গেল ১১ তাজা প্রাণ
কোন পোশাক পরে বিয়ে করতে যাবেন, ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কারা নিমন্ত্রিত, সেই তালিকাও তৈরি। কার্ডও চলে গিয়েছিল। একেবারে শেষ মুহূর্তে বিয়ে বাতিল হয়ে যায় স্মৃতি মান্ধার। ভারতীয় ক্রিকেট তো বটেই, কোনও সেলিব্রিটির বিয়েতে এমন অকস্মাৎ কিছু ঘটেছে কিনা, স্মৃতি খুঁজে বের করা মুশকিল। কিন্তু এই স্মৃতিই চিরকাল থেকে যাবের স্মৃতির স্মৃতিতে। সুরকার পলাশ মুচ্ছলের সঙ্গে পিঁড়িতে উঠতে উঠতে বিয়ে বাতিল করার এই ঘটনার পিছনে অনেক কিছু উঠে এসেছে তারপর। এমনও বলা হয়েছে, পলাশ ঠকিয়েছেন স্মৃতিতে। ঘটনা যাই হোক না কেন, স্মৃতির কাছে এ ছিল এক কঠিন সময়। যতই নতুন বছরে পা দিন স্মৃতি, সহজে ভুলতে পারবেন অন্ধকার সময়, মনে হয় না।
বিয়ের আগেই বিচ্ছেদ
রাজনীতির জের মাঠে ময়দানে কম পড়েনি। কিন্তু তা যে খেলার উর্ধ্বে উঠে গিয়েছে, তা কখনও হয়নি। এশিয়া কাপে তাই দেখা গিয়েছে। নবম এশিয়া কাপ জয় নিয়ে ভারত যত না সেলিব্রেট করেছে, তার থেকে বেশি বিতর্কে পড়েছে। এশিয়া কাপ জয়ের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকার করে। নাকভিও কাপ না দিয়ে ট্রফি নিয়ে চলে যান। অভিযোগ ছিল, পাকিস্তানের জঙ্গিরা পহেলগাওয়ে হামলা চালিয়েছে। তার প্রতিবাদে পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেননি সূর্যকুমার যাদবরা। এও থেকে যাবে চর্চায়।
ট্রফি বিতর্ক
ইরানে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র ম্যাচ খেলতে না যাওয়ার জন্য মোহনবাগানকে দুই মরসুম নির্বাসিত করেছে এএফসি। ভারতের কোনও ক্লাবকে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। একে ভারতীয় ফুটবলে চরম অন্ধকার। আইএসএল হবে কিনা, তা নিয়ে তীব্র সংশয়। তার মধ্যে এশিয়ান ফুটবলে মোহনবাগানের এই নির্বাসনের ফলে ভারতীয় ফুটবলকে খারাপ বিজ্ঞাপনের মুখে পড়তে হয়েছে, বলার অপেক্ষা রাখে না।
নির্বাসিত মোহনবাগান