অটল বিহারী বাজপেয়ী যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তাঁর বয়স হত 99 বছর। 1924 সালের 25 ডিসেম্বর গোয়ালিয়রে জন্মগ্রহণ করেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিন বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। 2004 সালে বাজপেয়ী যখন লখনউ থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, সে সময় তিনি একটা অ্যাম্বাস্যাডর গাড়ি ব্যবহার করতেন। নির্বাচনী হলফনামাতেও এই গাড়িটি উল্লেখ করা হয়েছিল। এমনকি, তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখনও সেই অ্যাম্বাস্যাডর গাড়িতে চলাফেরা করতেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ব্যবহৃত সেই অ্যাম্বাস্যাডর গাড়িটি সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
65 বছর আগের কথা
65 বছর আগে 1958 সালে ভারতে অ্যাম্বাস্যাডরের পথচলা শুরু হয়। পরবর্তীতে এই গাড়িই এতটা জনপ্রিয়তা পায় যে, সাধারণ মানুষ থেকে প্রধানমন্ত্রী সকলেই তা কিনতে চাইতেন। এই গাড়িতে চড়েই একটি বিরল রেকর্ডও করেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। দেশের শেষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যাম্বাস্যাডর ব্যবহার করতেন তিনি। আবার এহেন বাজপেয়ীই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি BMW 7 সিরিজ় ব্যবহার করেছিলেন।
লুক ও ডিজাইনের কারণে অ্যাম্বাসেডর গাড়িটি মানুষের বিশেষ প্রিয় হয়ে উঠেছিল। দীর্ঘ সময় ধরে পরিষেবা দেওয়ার পর 2014 সালে হিন্দুস্তান মোটরস এই গাড়ির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। তবে আজও যাঁদের গ্যারাজে একটা অ্যাম্বাস্যাডর রয়েছে, তাঁরা আর সেটিকে বিক্রি করেননি। বহাল তবিয়তেই রেখে দিয়েছেন। সম্প্রতি বাংলায় ফের হিন্দুস্তান মোটরসের অপারেশন চালু করার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেই অ্যাম্বাস্যাডরেরও এক্কেবারে নয়ারূপে কামব্যাক করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
অ্যাম্বাস্যাডরের দাম কত ছিল
কলকাতায় তৈরি অ্যাম্বাস্যাডর পেট্রোল ও ডিজ়েল দুই ইঞ্জিনের অপশনই থাকত। অটল বিহারী বাজপেয়ীর অ্যাম্বাসেডর গাড়িটি এনকোর মডেল, যার এক্স-শোরুম দাম ছিল 4 লাখ 80 হাজার টাকা। এই 5 সিটার গাড়িটিতে 1817cc, 4 সিলিন্ডার, OHC পেট্রোল ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে।
এই অ্যাম্বাস্যাডর গাড়িতে 5টি ম্যানুয়াল গিয়ার দেওয়া হয়েছিল, যা 10 Kmpl এর মাইলেজ দিতে পারে। 54 লিটারের একটি ফুয়েল ট্যাঙ্ক দেওয়া হয়েছিল। ক্রিস্টাল হোয়াইট, লুনার সিলভার, একরু বেইজ, ফায়ার ব্রিক রেড, অয়েস্টার ব্লু এবং জেট ব্ল্যাকের মতো একাধিক রঙে পাওয়া যেত গাড়িটি। পরে হিন্দুস্তান মোটরস অ্যাম্বাস্যাডর গাড়ির একটি সিএনজি ভ্যারিয়েন্টও চালু করেছিল। কিন্তু দিন যতই ঘনাতে থাকে, কম দামের গাড়ি দেশের বাজারে এক-এক করে নিয়ে আসতে থাকে একাধিক কোম্পানি। ফলে, মানুষও অ্যাম্বাস্যাডরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন। শেষমেশ 2014 সালে এই গাড়িটির উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।