
আপনি এত দিন জানতেন, আপনার হাতের দশটি আঙুলের ছাপ একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গত প্রায় ১০০ বছর ধরে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা আমাদের এটাই বলে এসেছেন। কিন্তু কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ বাফেলোর একদল গবেষক সেই তত্ত্বকে এবার ভুল প্রমাণ করলেন। তার সৌজন্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
গবেষক গ্যাবে গুও এবং তাঁর দল প্রায় ৬০ হাজার আঙুলের ছাপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘ডিপ লার্নিং’ সিস্টেমে আপলোড করেছিলেন। প্রথাগত পদ্ধতিতে পুলিশ কেবল ‘Minutiae’ বা আঙুলের রেখার শেষ প্রান্তগুলি দেখে। কিন্তু AI দেখল অন্য কিছু। এটি আঙুলের মাঝখানের যেখানে রেখাগুলো গোলাকার হয়ে গিয়েছে সেই জায়গা ও রেখার কার্ভেচার বিশ্লেষণ করে ৭৭ শতাংশ নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারছে যে, দুটি ভিন্ন আঙুল একই ব্যক্তির কি না। এ ছাড়াও একাধিক নমুনা ব্যবহার করলে এই নির্ভুল হার ৯৯.৯৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
ভাবুন, একটি অপরাধস্থলে আপনি তর্জনীর ছাপ পেলেন আর অন্য একটি জায়গায় পেলেন বৃদ্ধাঙ্গুলের ছাপ। বর্তমান ফরেনসিক সফটওয়্যার এই দুটির মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পায় না। কিন্তু এই নতুন AI মডেল সন্দেহভাজনের তালিকা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ছোট করে দিতে পারে। এর ফলে অনেক ‘কোল্ড কেস’ বা অমীমাংসিত মামলার জট খুলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও ফরেনসিক সাইন্সের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এই গবেষণাকে এখনই ধ্রুবসত্য মানতে নারাজ। তবে প্রযুক্তির এই জয়যাত্রা ভবিষ্যতে অপরাধ দমনে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলেই আশা করছেন অনেকে। তবে এই পদ্ধতি কতদিনে সব দেশের পুলিশ ব্যবহার করোতে পারবে, সেদিকেই নজর রয়েছে।