AI দিয়েই প্রজেক্ট থেকে প্রেজেন্টেশন সারছেন, অজান্তেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন কিন্তু…

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Feb 13, 2025 | 2:46 PM

Artificial Intelligence Threat: গুগল সার্চ আর এআই সার্চের মধ্যে তফাত কোথায়। গুগল বা অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনে আপনি যখনই কিছু টাইপ করে সার্চ করেন তখন এই সংক্রান্ত একাধিক লেখা আপনাকে পরপর সাজিয়ে দেয়। আপনি পরপর ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন।

AI দিয়েই প্রজেক্ট থেকে প্রেজেন্টেশন সারছেন, অজান্তেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন কিন্তু...
প্রতীকী চিত্র।
Image Credit source: Pixabay

Follow Us

প্যারিসে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে এক বিপদের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জিনিসটা কী তা মোটামুটি সবাই জানেন। এর লাভ হল, বিভিন্ন কাজ অনেক সহজে হয়ে যাচ্ছে। আর ক্ষতির দিকটা হল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আগামিদিনে হাত থেকে কাজ কেড়ে নিতে পারে। নষ্ট করে দিতে পারে মানুষের ক্রিয়েটিভিটি। সহজ কথায় বলতে গেলে, আজ এআই (AI) কাজ সহজ করে দিচ্ছে। কাল, সব কাজটা ও একাই করে দেবে। ফলে আমাকে আর কাজের জন্য দরকার পড়বে না। আর যদি দেখা যায়, এআই দিব্যি কবিতা লিখে দিচ্ছে, তাহলে আগামিদিনে কবিকে আর কে কদর করবে। তবে, এর চেয়েও একটা বড় বিপদ রয়েছে। যেটা তুলনায় কম আলোচিত। প্যারিসে এআই অ্যাকশন সামিটে প্রধানমন্ত্রী সেটাই বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, আমাদের এমন ওপেন সোর্স সিস্টেম তৈরি করতে হবে, যা বিশ্বাস ও স্বচ্ছতাকে বাড়াবে। আমাদের কোয়ালিটি ডেটা সেন্টার তৈরি করতে হবে। (We must develop open source systems that enhance trust and transparency. We must build quality data centres free from biases)।

সহজ কথায় বলতে গেলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে হতে হবে স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য এবং পক্ষপাত-মুক্ত। যাঁরা বিষয়টা সম্পর্কে খুব বেশি ওয়াকিবহাল নন, তাঁদের জন্য প্রথমে বলি, গুগল সার্চ আর এআই সার্চের মধ্যে তফাত কোথায়। গুগল বা অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনে আপনি যখনই কিছু টাইপ করে সার্চ করেন তখন এই সংক্রান্ত একাধিক লেখা আপনাকে পরপর সাজিয়ে দেয়। আপনি পরপর ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন।

আমরা স্বাভাবিকভাবেই ওপরের দিকে আসা কয়েকটা লেখা পড়ি। বাকিগুলো খুলে দেখি না। ওই ওপরে থাকা লেখাগুলোর ভিত্তিতেই আমাদের জানা, আমাদের মতামত তৈরি হয়। কোন ওয়েবসাইটের লেখা প্রথম দিকে আসবে আর কোনগুলো শেষের দিকে আসবে সেসবই ঠিক করে গুগলের নিজস্ব অ্যালগারিদম। যার রহস্য কেউ জানে না। আমরা শুধু দেখতে পাই গুগল কী দিচ্ছে। কেন দিচ্ছে জানি না। সবাই চায় তার ওয়েবসাইটে লেখা গুগল সার্চে ওপরের দিকে আসুক। যাতে ভিউ বেশি হয়। এজন্য এক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় যাকে বলে Search engine optimization।

তবে আমরা শুধু চেষ্টাই করতে পারি। সিদ্ধান্ত গুগলের অ্যালগারিদমই নেয়। এইবার আসা যাক, এআই সার্চের কথায়। ধরা যাক, জেমিনি বা কো-পাইলটের মতো অ্যাপ্লিকেশন। আপনি ব্রাউজারে খুলবেন। তারপর টাইপ করে কিছু জানতে চাইবেন। ওরা আপনাকে একটা লেখা তৈরি করে দিয়ে দেবে। বড় লেখা চাইলে বড় দেবে। সিনপসিস চাইলে ছোটো লেখাই দেবে। কোথা থেকে তথ্য নিয়ে জেমিনি বা কো-পাইলট লেখাটা তৈরি করল, তা আপনি সবসময় জানতে পারবেন না। মানে, আপনি যদি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন বলে সার্চ দেন। তাহলে, গুগল আপনাকে পঞ্চাশটা আর্টিকল দেবে। সেখান থেকে সব পড়ে আপনাকে বের করতে হবে। আর, এআই আপনাকে একটা প্যারাগ্রাফ তৈরি করে দেবে। যেটা আপনি অনেক সহজেই বুঝে যাবেন। চিন্তাটা এখানেই।

গুগলের অ্যালগারিদম আপনি দেখতে পান। বুঝতে পারেন না। এআই-এর অ্যালগারিদমও আপনি দেখতে পাবেন না। বুঝতেও পারবেন না। ফলে, এখানেই একটা অসত্য কথা, ভুয়ো তথ্য, পক্ষপাতিত্বে ভরা তথ্য সামনে চলে আসার আশঙ্কা থাকছে। সেক্ষেত্রে আমরা ভুল জানব। ভুল বুঝব। যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী এবং খুব খারাপ। কেউ পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ তৈরিতে এআই-কে ব্যবহার করতে পারে। কেউ বিজনেসে আন-ডিউ অ্যাডভান্টেজ নিতে একই জিনিস করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমার-আপনার মতো অসংখ্য মানুষ নিজেদের অজান্তেই প্রতারিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী এজন্যই এআই-এর অ্যালগারিদমকে free from biases করার ওপর জোর দিয়েছেন।