যে কোনও ধরনের কেলেঙ্কারিই আজকাল প্রচুর পরিমাণে হচ্ছে। তবে তালিকায় কুরিয়ার কেলেঙ্কারি বা কুরিয়ার স্ক্যাম কোনও দিক থেকে পিছিয়ে নেই। প্রায় প্রতিদিনই কোনও কোনও খবর উঠে আসে। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে বেঙ্গালুরুতে। একজন 66 বছর বয়সী ব্যক্তি 1 কোটি টাকারও বেশি হারিয়েছেন এই কুরিয়ার স্ক্যামের ফাঁদে পড়ে। কী এমন ঘটনা ঘটল? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কী করে ঘটল এমন ঘটনা?
বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা দেবাশীষ দাসের কাছে একটি ফোন আসে। কার্তিকেয় নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ফোন পেয়েছিলেন যিনি নিজেকে বিখ্যাত কুরিয়ার ফার্ম, FedEx-এর কর্মী বলে দাবি করেছিলেন। কার্তিকেয় ফোনে বলেছিলেন, দেবাশীষ দাসের বিরুদ্ধে মুম্বাইতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যাতে তাকে তাইওয়ানে 5টি মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট, 6টি ক্রেডিট কার্ড এবং 950 গ্রাম নিষিদ্ধ পদার্থ পাঠানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
Indian Express-এর প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথমে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা দেবাশীষ দাস এই কথা বিশ্বাস করেননি। কিন্তু তার জন্য ফোনের ওপারে থাকা স্ক্যামার স্কাইপ কলের মাধ্যমে আন্ধেরির এক পুলিশ অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করানোর জন্য বলে। তারপরে সেই ব্যক্তির ফোনে একটি লিঙ্ক পাঠায়। লিঙ্কটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে, তিনি নিজেকে মুম্বাই সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ পুলিশের ‘প্রদীপ সাওয়ান্ত’ হিসাবে পরিচয় দেন। সেখানে সেই নকল ব্রাঞ্চ পুলিশ বলেন, তিনি যদি মামলা থেকে তার নাম মুছে ফেলতে চান, তবে তাকে সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ পুলিশ কমিশনারের কাছে দিতে হবে। এরপর পুলিশ অফিসার সেই ব্যক্তিকে তার সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বলে। পুলিশ অফিসারকে বিশ্বাস করে, 66 বছর বয়সী লোকটি তার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে RTGS-এর মাধ্যমে একটি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 1.52 কোটি টাকা ট্রান্সফার করেছে। টাকা ট্রান্সফার করার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতারকরা। এমন ভুল আপনার সঙ্গেও হতে পারে। তাই যাতে কোনওভাবে এই ধরনের স্ক্যামের ফাঁদে না পড়েন, তার জন্য কিছু বিষয় নজরে রাখা প্রয়োজন।
ভুলেও করবেন না এসব কাজ…
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি যদি কোনও ধরনের আইটেম অর্ডার করে থাকেন বা কোথাও পাঠিয়ে থাকেন, তাহলে তার বিবরণ কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। কেউ কল বা এসএমএসে নিজেকে কুরিয়ার অফিসার দাবি করলে অফিসে গিয়ে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে হবে। অর্থাৎ ফোনে কোনও ব্যবস্থা নেবেন না।
যদি কেউ আপনাকে কলে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়ে বলে, তবে বুঝতে হবে যে যিনি ফোন করেছেন, তিনি একজন প্রতারক। কোনও অবস্থাতেই কারও সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।
আপনি যদি কোনও অপরিচিত নম্বর থেকে এই ধরনের কল বা এসএমএস পান, তাহলে অবশ্যই ব্লক করুন এবং রিপোর্ট করুন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, যাতে সবাই এটি সম্পর্কে জানতে পারে।