Milk Adulteration KIT India: দুধে কতটা পরিমাণ ভেজাল রয়েছে, তা সনাক্ত করবে ছোট্ট একটি পেপার-বেসড ডিভাইস। IIT Madras-এর গবেষকরা এই থ্রি-ডাইমেনশনাল পেপার-বেসড পোর্টেবল ডিভাইসটি তৈরি করেছে, যা দুধের মধ্যে ভেজাল রয়েছে কি না, 30 সেকেন্ডেই ধরতে পারবে। এই পরীক্ষাটি আপনি বাড়িতে বসেই করতে পারবেন। ইউরিয়া থেকে শুরু করে সাবান, স্টার্চ, হাইড্রোজেন পেরক্সাইড, সোডিয়াম হাইড্রোজেন কার্বোনেট সহ একাধিক ভেজাল জিনিস সনাক্ত করতে পারবে ডিভাইসটি। এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন পল্লব সিনহা মহাপাত্র, যিনি IIT Madras-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। তাঁর কথায়, “এই ডিভাইসের অভিনবত্ব হল, এটি একই সঙ্গে একাধিক ভেজাল পদার্থকে দুধ থেকে সনাক্ত করতে পারে। ইউরিয়া থেকে শুরু করে ডিটারজেন্ট, হাইড্রোজেন পেরক্সাইড ডিটেক্ট করতে পারে দুধের স্যাম্পেল থেকে। পাশাপাশি রং মেশানো হলে সেটাও সনাক্ত করতে পারে।”
প্রফেসর পল্লব সিনহা মহাপাত্রকে এই গবেষণায় সাহায্য করেছেন শুভাশিস পাটারি এবং প্রিয়ঙ্কন দত্ত নামের দুই রিসার্চ স্কলার। দুধের ভেজাল সনাক্তকরণ সংক্রান্ত তাঁদের এই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি পিয়ার-রিভিউড জার্নাল ‘Nature’-এ প্রকাশিত হয়েছে। কালারিমেট্রিক ডিটেকশন পদ্ধতির সাহায্যে প্রতিটি ভেজাল সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বিভিন্ন লিকুইড স্যাম্পেল থেকে। প্রফেসর মহাপাত্র বললেন, “এর আগে একাধিক তদন্ত থেকে অনুমান করা হয়েছে, বিকারক (রাসায়নিক) কেবল এই পদ্ধতিতেই নির্দিষ্ট ভেজালের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে, দুধের কোনও উপাদানের সঙ্গে নয়।”
ভেজাল সনাক্ত করতে স্যাম্পেল টেস্টের জন্য এক মিলিলিটার দুধ ব্যবহার করতে হবে। ডিভাইসের 3D ডিজ়াইনটি একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ গতিতে ঘন তরল চলাচলের জন্য ভাল ভাবে কাজ করে। কাগজটি বিকারক বা রিএজেন্ট দিয়ে ট্রিট করা হয় এবং শুকানোর জন্য কিছুক্ষণ রেখে দেওয়া হয়। দ্রবণীয়তার উপর নির্ভর করে সমস্ত বিকারক পাতিত জল বা ইথানলে দ্রবীভূত হয়।
মহাপাত্র যোগ করলেন, “দুধ কতটা খাঁটি তার প্রথাগত পরীক্ষাগার পদ্ধতিগুলির বেশিরভাগই খরচসাপেক্ষ এবং অনেকটা সময়ও নিয়ে নেয়। নতুন প্রযুক্তিটি সেই জায়গায় খুব সস্তার, মাত্র 30 সেকেন্ড সময় লাগে। দুধের পাশাপাশি জল এবং ফ্রেশ জুসেও ভেজাল থাকলে তা পরীক্ষা করতে পারে।” একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে IIT Madras-এর তরফ থেকে বলা হচ্ছে, “এই অ্যানলিটিক্যাল টুলটি তরল খাদ্যদ্রব্যের সুরক্ষার বিষয়টি তদারকি করতে সাহায্য করবে। এর ফলে দূরবর্তী স্থানগুলিতেও দূষিত দুধ খুঁজে পাওয়ার কাজটিও সহজ হবে। ভারত, পাকিস্তান, চিন, ব্রাজ়িলের মতো দেশগুলিতে দুধে ভেজাল মেশানোর পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে, তা এখন মানুষের সাধারণ জীবনযাপনের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।”
সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “ভেজাল দুধ পান করলে মানুষের শরীরে কিডনির সমস্যা থেকে শুরু করে শিশু মৃত্যু, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল জটিলতা, ডায়রিয়া, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।” এই কাগজের যন্ত্রটি এখনও পর্যন্ত বাজারে আসেনি। তবে তা একবার এসে গেলে দাম খুব কম হবে বলেই জানা গিয়েছে।