ইলেকট্রিক বিল (Electricity Bill) জমা দেওয়ার কাজটা যথেষ্ট ঝক্কির। আবার দেরি হলেও বিপদ! লেট ফাইন দিতে হয়। তাই, আমরা সহজ উপায়ের খোঁজ করে থাকি ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে। আর তা করতে গিয়েই হ্যাকারের খপ্পরে পড়তে হতে পারে। কেন এ কথা বলছি? হ্যাকাররা আপনার কষ্টার্জিত অর্থ লুঠ করার একটি অভিনব পন্থা নিয়ে হাজির হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে (WhatsApp Scam) অজ্ঞাত নম্বর থেকে মেসেজ পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, আপনার ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার ডিসকানেক্ট করা হবে। কারণ, হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে যে, আপনি নাকি গত মাসের বিলটাই ক্লিয়ার করেননি। পাশাপাশি একটা নম্বর দিয়ে সেখানে কলও করতে বলা হচ্ছে। এখন আপনি সেই নম্বরে ফোন করলে সব শেষ! মুম্বইয়ের এমন একটা উদাহরণ আমাদের সামনে এসেছে। তবে, শুধু মুম্বই নয়। কলকাতার অনেক মানুষও হোয়াটসঅ্যাপে এমন বিভ্রান্তিকর বার্তা পেয়েছেন। বিষয়টি খুবই উদ্বিগ্নের। কারণ, খুব টেক স্যাভি লোকজনও এই ভুয়ো মেসেজের পাল্লায় পড়ে মোটা টাকা খুইয়েছেন।
সম্প্রতি একটি ট্যুইট ভাইরাল হয়েছে। সচরাচর ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কেন্দ্রের তরফে যেমন বিল মেটানোর মেসেজ পাঠানো হয়ে থাকে, তার থেকে কোনও অংশে আলাদা নয় ট্যুইটারে ভাইরাল হওয়ার সেই বার্তাটি। হোয়াটসঅ্যাপ বা এসএমএস করে সাধারণত বার্তাটি পাঠানো হচ্ছে ব্যবহারকারীদের কাছে। সেখানে থাকছে একটি নম্বর, যা স্ক্যামারের। কাউকে যদি বলা হয় যে, আপনার বাড়ির কানেকশনটি কেটে দেওয়া হবে। তাহলে তিনি ভয়ে যে নম্বরই হোক না কেন, তা যাচাই না করে সেখানে ফোন করে বসবেন। এটা, সেটা করতে বলার পর দিয়ে ফেলবেন ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যা আপনি ছাড়া আর দ্বিতীয় কারও জানার কথা নয়। এখানেও ঠিক সেই ফাঁদই পাচা হচ্ছে। এই প্রতারণাচক্র ব্যাপক ভাবে চলছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব এবং ওড়িশায়। অন্তত অভিযোগ এই রাজ্যগুলি থেকেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে জমা হয়েছে।
মেসেজটি ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে, যার বাংলা রূপান্তর করলে দাঁড়ায়, “প্রিয় উপভোক্তা, আপনার ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার ডিসকানেক্ট করা হবে। আজ রাত 9:30-এ ইলেকট্রিক অফিস থেকেই। দয়া করে আমাদের ইলেকট্রিসিটি অফিসারের সঙ্গে 8260303942 এই নম্বরে শীঘ্রই যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।” বিভিন্ন নম্বর থেকে এই মেসেজটি পাঠানো হচ্ছে, যা কোনও ভাবেই কোনও ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের নয়। কারণ, অথরাইজ়ড সোর্সের থেকে মেসেজ এলে সেখানে নম্বরের পরিবর্তে বোর্ডের নাম লেখা থাকবে, কলকাতায় হলে তা ‘WBSEDCL’ এবং দিল্লিতে ‘BSES DL’।
এই মেসেজ যে ভুয়ো, তা বোঝার আর একটি উপায় হল তার ভাষা। ভাল করে খেয়াল করে দেখবেন, ইংরেজিতে লেখা হলেও সেই মেসেজের বাক্যগুলি যথাযথ ভাবে লেখা হয়নি। সব কিছুই বড় এলোমেলো ভাবে লেখা হয়েছে। পাশাপাশি সেই মেসেজে জ্যোতিচিহ্নগুলিও ঠিক ভাবে দেওয়া হয়নি। ফুল স্টপ ঠিক ভাবে ব্যবহৃত হয়নি এবং ছোট হাতের ও বড় হাতের অক্ষরও ভুল জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের সাইবার সেল এই ধরনের ভুয়ো মেসেজ থেকে মানুষকে সতর্ক থাকতে বলেছে। মেসেজটি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ, ইলেকট্রিক বিল সময় মতো দেওয়া না হলে বা তার জন্য লেট ফাইন বা কানেকশন কেটে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করাটা খুব স্বাভাবিক। স্ক্যামাররা মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকে। এখন তারা ফাঁদ পেতেছে এই ইলেকট্রিক বিলের নামে। তাই সতর্ক থাকা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই।