GPT-4 এসে গিয়েছে, যা AI ভিত্তিক চ্যাটবট ChatGPT-র এক্কেবারে নবতম সংস্করণ। আর এই নতুন চ্যাটবটটি আসার ফলে শিয়রে সংক্রান্তি দেখছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা। এর আগেই বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছিলেন যে, চ্যাটজিপিটি বহু মানুষের চাকরি খেয়ে নিতে পারে। এখন GPT-4 আসার ফলে একপ্রকার হাতেকলমে প্রমাণিত, একাধিক সেক্টরের মানুষ কর্মহারা হতে পারেন এই জিপিটি-4 এর কারণে। সম্প্রতি এক টুইটার ব্যবহারকারী স্ক্রিনশট দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, অত্যাধুনিক AI Chatbot কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের জায়গা দখল করতে পারে। সেই স্ক্রিনশটে দেখা গিয়েছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর চ্যাটবট GPT-4 মোট 20টি চাকরি অনায়াসে করতে পারে কোনও মানুষের সাহায্য ছাড়াই। প্রসঙ্গত, GPT-4 হল চ্যাটজিপিটি নামক জনপ্রিয় ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের নতুন সংস্করণ, যা তৈরি করেছে Open AI।
GPT-4 যে 20টি কাজ করতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে ডেটা এন্ট্রি ক্লার্ক, কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজ়েন্টেটিভ, প্রুফরিডার, বুককিপার, ট্রানস্লেটর, কপিরাইটার, মার্কেট রিসার্চ অ্যানালিস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার, টেলিমার্কেটার, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, ট্রান্সক্রিপশনিস্ট, ইমেল মার্কেটর, কন্টেন্ট মডারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, শিক্ষক (টিউটর), টেকনিক্যাল সাপোর্ট অ্যানালিস্ট, সাংবাদিক এবং রিক্রুটার। অর্থাৎ কোনও কোম্পানি যদি এখন GPT-4 এর সাহায্য নিতে শুরু করে তাহলে সেই সংস্থার এই 20টি ভিন্ন দফতরের প্রফেশনালদের জন্য আর বেতন দিতে হবে না। কারণ, প্রতিটি কাজই করে দেবে GPT-4 নামক AI Chatbot। সারা বিশ্বে বহু মানুষই রয়েছেন, যাঁরা এই কাজগুলি করে থাকেন। এখন, তাঁদের জন্য GPT-4 যেন সত্যিই উদ্বেগজনক।
GPT-4 এর মধ্যে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা তাকে মানুষকে প্রতিস্থাপন করার মতো বিরাট ক্ষমতা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যে মানুষটা ডেটা এন্ট্রির কাজ করবেন, তাঁর টাইপিং স্পিড খুব ভাল হওয়া জরুরি এবং সেই সঙ্গেই টাইপিংয়ে যাতে কোনও গলদ না বেরোয়, সেই বিষয়টিও তাঁকে নিশ্চিত করতে হবে। GPT-4 কিন্তু নিমেষের মধ্যে কোনও বিষয় টাইপ করে দিতে পারে এবং কতটা সঠিক ভাবে যে সে সবকিছু নামিয়ে দিতে পারে, তা তো সন্দেহাতীত। তাই, GPT-4 তার অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির কারণেই এই সব তালিকভুক্ত চাকরিতে খুব সহজেই প্রতিস্থাপনযোগ্য।
যদিও এই কৃত্রিম মেধা ভিত্তিক চ্যাটবটটিকে অনেক মানুষের চাকরির নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে হলেও, এটি কিন্তু কেবলই মানুষের ভাষার অনুকরণ করে। AI Chatbot-এর মধ্যে মানুষের মান ও হুঁশের এক ফোঁটাও বৈশিষ্ট্য নেই। এটি শুধুই মানুষের ভাষার অনুকরণ করতে পারে এবং সে নিজে কী বলে, সে সম্পর্কে এক ফোঁটাও সচেতন নয়। তবে GPT-4 যেমন একাধিক মানুষকে কর্মহারা করতে পারে, তেমনই তার LLM (Large Language Model) কিন্তু আগের তুলনায় অনেক বেশি সৃজনশীল এবং সহযোগিতামূলক।
এখানেই চ্যাটবটটি চাকরির ক্ষেত্রে বহু মানুষকে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগাতে পারে। তবে, বিশেষজ্ঞমহলের দাবি, মানুষকে সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপন করা থেকে অনেকটাই দূরে আছে AI। যদিও তারা নির্দিষ্ট কিছু কাজকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারলেও, যে কোনও কাজের ক্ষেত্রেই জটিল সমস্যার সমাধান থেকে শুরু করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সৃজনশীলতা, বিশেষ করে মানসিক বুদ্ধিমত্তা প্রয়োজনীয় যে সব কাজে, সেখানে কিন্তু কোনও ভাবেই মানুষের চিন্তাভাবনা ও তাঁর উপস্থিতিকে কোনও ভাবেই প্রতিস্থাপিত করতে পারে না চ্যাটবটটি।
তাই, মনে রাখা জরুরি যে, AI হল এমনই একটা টুল যা মানুষের ক্ষমতা বাড়াতে পারে, মানুষকে প্রতিস্থাপন করতে তার ব্যবহার করলেই তাতে বিপদ আসতে পারে।