আসাদ মল্লিক
টেবিল ফ্যান (Table Fan), ভারত বিশেষত বাংলার মানুষের খুব কাছের একটি সামগ্রী। গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে বাঁচাতে টেবিল ফ্যানই ভরসা বহু মানুষের। যে কোনও স্থানে একবার প্লাগ-ইন করলেই হল, মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একই সঙ্গে বহু মানুষকে ঠান্ডা করে দিতে পারে এই যান্ত্রিক পাখা। সেই অপরিহার্য যন্ত্র থেকে সেরার সেরা কার্যকারিতা প্রাপ্তির উপায়গুলি জানা আছে আপনার? টেবিল ফ্যানের হাওয়ায় ঠান্ডা তো হলেন, এবার সেই ফ্যান যদি হয় উইন্ডো ফ্যান (Window Fan), তাহলে বলুন তো, ঘরের বাইরের দিকে না ভিতরের দিকে, কোন দিকে মুখ করে রাখা উচিত ফ্যানটিকে? ঘরের গুমোট গরমে ভেন্টিলেশনের (Ventilation) কাজ যেমন করে, তেমনই হাওয়া দিয়ে শরীর ঠান্ডাও করে টেবিল পাখা।
উইন্ডো ফ্যানকে সাধারণ ভাবে দেখলে আপনার হয়তো ইচ্ছে করবে, স্যুইচ অন করে সোজাসুজি নিজের দিকেই ফ্যানটিকে ঘুরিয়ে নিতে। আদতে ছোট্ট ছোট্ট কিছু বিষয় নিয়ে ভাবলে আপনার এই ভাবনা বদলে যেতেই পারে এক লহমায়।
প্রথমেই ভাবুন আপনার বাড়ির অবস্থান নিয়ে। বাড়ির বেশ কিছু ঘর এবং বেশ কিছু অংশ দিনের অধিকাংশ সময়ে আলোকিত থাকে। সে ক্ষেত্রে দরজা, জানলার অভিমুখ এবং দিনের দৈর্ঘ্যও মাথায় রাখতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘরের ঠিক বাইরে গাছ থাকার কারণে ঘরে সরাসরি সূর্যের আলো এসে পড়লেও ততটা গরম লাগে না।
এবার ভেবে দেখুন তো, কোন দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকা উচিত আপনার উইন্ডো ফ্যানের? যে ঘরগুলি অপেক্ষাকৃত উষ্ণ, সেগুলিতে টেবিল ফ্যানের মুখ হওয়া উচিত বহির্মুখী। সে ক্ষেত্রে ঘরের গরম হাওয়াকে বাইরে ঠেলে দিয়ে ভেন্টিলেশনের কাজ করবে ফ্যান। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত শীতল ঘরগুলিতে ফ্যানের মুখ হওয়া উচিত আপনার দিকে, ফলে বাইরের শীতল হাওয়ার বেশ কিছুটা হয়তো এসে পড়বে ঘরের ভিতরেও।
ছোটবেলার বিজ্ঞান বইয়ে নিশ্চয়ই পড়েছেন যে উষ্ণ বায়ু উপরে থাকে এবং শীতল বায়ু মাটির কাছাকাছি। ফলে, আপনার বাড়ির যদি একাধিক তলা থাকে, সে ক্ষেত্রে নিচের তলায় অপেক্ষাকৃত গরম কম থাকার কথা। তাই, উপর তলায় টেবিল ফ্যান চালিয়ে রেখে দিন জানালায়, মুখ থাকবে বহির্মুখী। নিচের তলায় সরাসরি টেবিল ফ্যানের সামনে বসে আপনি হাওয়া খেতেই পারেন।
অতএব, মাথায় রাখুন টেবিল হোক বা উইন্ডো ফ্যান, সন্ধ্যায় মুখ রাখুন ভিতরে এবং দিনের উষ্ণ সময়ে বাইরের দিকে। এই প্রক্রিয়ায় ঘর ঠান্ডা হবে দ্রুত, ঘরে বাড়বে টাটকা শ্বাসবায়ুর পরিমাণ এবং প্রবল গরমেও আপনি থাকবেন তরতাজা।