সাধের ইনস্টাগ্রাম (Instagram) অ্যাকাউন্টটা যদি একবার ডিলিট হয়ে যায়, তাহলে তা ফিরে পাওয়ার থেকে দুঃসাধ্য কাজ এই দুনিয়ায় আর কিছু নেই। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই। মেটা যদি একবার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়, তাহলে (এক) কালেভদ্রে তা ফেরানো হতে পারে, (দুই) ভুলবশত সেটিকে ফেরাতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি। ওনলিফ্যানস (OnlyFans)-এর নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? লন্ডন ও বিশ্বের অন্যতম নামজাদা কন্টেন্ট ক্রিয়েশন সার্ভিস। সেই ওনলিফ্যানসের এক ক্রিয়েটর, যাঁর নাম কিট্টি লিক্সো নিজের ডিলিট হওয়া ইনস্টা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারে এমনই কাণ্ড ঘটালেন, যা দেখে নেটপাড়ার লোকজনের চক্ষু চড়কগাছে উঠে গিয়েছে। কিট্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইনস্টাগ্রামে যৌন আবেদনমূলক পোস্ট করে আসছিলেন। এহেন কিট্টি লিক্সো সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শো-তে এসে জানিয়েছেন, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি ফিরে পেতে একাধিক ফেসবুক কর্মচারীকে (Facebook Employees) তিনি মেসেজ করেছেন, তারপর তাঁদের সঙ্গে সেক্সও করেছেন। ডিলিট হওয়া ইনস্টা অ্যাকাউন্টটি ফিরে পেতে কিট্টি বেছে নিয়েছিলেন সেক্সকেই। ফলে, তাঁর অনুরোধ কেউ ফেরাতেও পারেননি। আর ফেসবুক কর্মচারীদের সঙ্গে সেক্স করার হাতে গোনা কয়েক দিনের মধ্যেই কিট্টির ডিলিটেড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি রিস্টোরডও হয়ে যায়।
গল্পটার আরও গভীরে প্রবেশ করার আগে একটা বিষয় জেনে রাখা ভাল যে, কিট্টি লিক্সোর হৃত ইনস্টা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারে ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের কর্মচারীরা কিন্তু কখনওই তাঁর কাছে সেক্সের দাবি করে বসেননি। বরং, কিট্টি নিজেই তাঁদের সঙ্গে এক বিছানা শেয়ার করার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। আর সেই ফাঁদেই পড়ে যান মেটা-র কর্মচারীরা। অবস্থা এমনই সংকটজনক হয়ে যায় যে, কেউ কেউ আবার কিট্টির উদ্বেগজনক পোস্টগুলি না দেখেই তাঁর সঙ্গে সেক্সে সম্মতি জানান।
আদাম গ্র্যান্ডমাইসন যিনি আদাম২২ নামেই অধিক পরিচিত, তাঁরই নো জাম্পার পডকাস্ট শো’তে এসে ‘অ্যাকাউন্ট রিস্টোর করার’ পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানান। এই অনলিফ্যানস ক্রিয়েটর দাবি করেছেন, লস অ্যাঞ্জেলসের কোম্পানি ফেসবুকের নিজস্ব ফটো শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামের কর্মচারীদের সঙ্গে সেক্স করার পরই কোম্পানি কর্তৃক ডিলিট করে দেওয়া তাঁর ইনস্টা অ্যাকাউন্টটি রিস্টোর করেছেন।
লিক্সো আরও জানিয়েছেন, এর আগে অন্তত তিন থেকে চার বার তাঁর অ্যাকাউন্টটি তুলে নিয়েছিল ইনস্টাগ্রাম। কিন্তু শত চেষ্টা করার পরেও সেই অ্যাকাউন্ট তিনি পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। লিক্সি বললেন, “আমার একটা বন্ধু ইনস্টাগ্রামে কাজ করে। আর সে যেহেতু বন্ধু, আমার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটা ফিরে পেতে আমি ওঁর সঙ্গেই সেক্স করার সিদ্ধান্ত নিই।” এরপর লিক্সি আরও যোগ করে বললেন, “ও কিন্তু সেটাই করেছিল। আমার অ্যাকাউন্টটা যেমন অবস্থায় ছিল, ঠিক সেই অবস্থাতেই ফিরিয়ে দিয়েছিল। সত্যিই ওঁর মতো ভাল ছেলে আর হয় না।”
ওই ওনলিফ্যানস ক্রিয়েটর জানালেন, তাঁর বন্ধু একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা করে দেখেছেন। ডেইলি ডট ওয়েবসাইটের কাছে লিক্সো দাবি করেছেন, “প্রথম যে ব্যক্তির সঙ্গে আমি হুক-আপ করেছিলাম, সে একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা করার পর আমাকে জানিয়েছিল যে, গুচ্ছের যৌন আবেদনমূলক পোস্টের জন্যই আমার অ্যাকাউন্টটা ডিলিট করা হয়েছিল। তারপরই সে ইনস্টা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের আবেদন জানায়, কারণ অ্যাকাউন্টটিতে আর কোনও যৌন আবেদনমূলক পোস্ট ছিল না। কেবল মাত্র আমার বায়োতেই অনলিফ্যানস-এর লিঙ্কটি একটি লিঙ্কট্রি আকারে দেওয়া হয়েছিল, যা বেশির ভাগ মহিলাই করে থাকে।”
তিনি জানান যে, তাঁর আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বন্ধু যেহেতু ইনস্টাগ্রামে কাজ করেন তাই একটি নতুন ‘কেস ওপেন’ করা হয়। লিক্সো যোগ করলেন,”নতুন করে কেস খোলার পরে এমন একজনকে আমি পাই, যিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোলসা করেন। তিনি বলেন যে, যৌন আবেদনমূলক পোস্টের জন্য নয়। বরং, আমার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে গিয়েছিল। তারপরই আমি সব রিসেট করি।”
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে ইনস্টাগ্রামের কর্মীদের খোঁজ পেলেন লিক্সো? তিনি জানিয়েছেন, লিঙ্কডইনে ইনস্টাগ্রামের ইন্টিগ্রিটি ডিপার্টমেন্টের খোঁজ নেন প্রথমে। সেখান থেকে অনেককেই পেয়ে যান, যাঁরা তাঁর কাজে আসতে পারেন। আর যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ইনস্টাগ্রামে নিজের ব্যাকআপ অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁদের স্টক করতে থাকেন। তাঁর কথায়, “তারপর আমাদের দেখা হয় এবং তাঁদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেই আমি সেক্স করি। পরিবর্তে যে দুই থেকে তিন বার আমার ইনস্টা অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছিল, ততবারই ওঁরাই আমার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করেছিল।”
ওনলিফ্যান স্রষ্টা শেষ পর্যন্ত তাঁর অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, ডিলিট বা ব্যান করা হয়েছে এমন কোনও ইনস্টা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারে একজন ইউজারকে ক্রমাগত পর্যালোচনা করতে হবে। লিক্সোর কথায়, “হাল ছাড়লেই মুশকিল। চেষ্টা করে গেলে শেষমেশ অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়া যাবেই।”
তবে কিট্টি লিক্সো ইনস্টাগ্রাম কর্মচারীদের সঙ্গে যা করেছেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে কোম্পানির নীতিবিরোধী। ইনস্টাগ্রামের কমিউনিটি গাইডলাইন বলছে, এই প্ল্যাটফর্মে কোনও ভাবেই ন্যুডিটি অনুমোদিত নয়। নির্দেশিকা অনুযায়ী সেই তালিকায় রয়েছে, “ছবি, ভিডিয়ো এবং ডিজিটালি ক্রিয়েট করা হয়েছে এমন কন্টেন্ট যা নগ্নতা এবং যৌনসঙ্গম, এমনকী যৌনাঙ্গের ক্লোজ়-আপ ছবি।” ২০২০ সালে ইনস্টাগ্রাম তার টার্মস অফ ইউজ় পলিসি ঢেলে সাজায়। আর তার ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বহু ওনলিফ্যানস ক্রিয়েটররা।