জীবাশ্ম থেকে 8 পায়ের ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের 3D ছবি ডেভেলপ করলেন বিজ্ঞানীরা, কীভাবে শিকার করত, উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

জুরাসিক যুগের জীবাশ্মের 3D ইমেজিংয়ের মাধ্যমে, বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে জুরাসিক ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের মতো একটি প্রাণী শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য সুপারসাকার ব্যবহার করেছিল।

জীবাশ্ম থেকে 8 পায়ের ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের 3D ছবি ডেভেলপ করলেন বিজ্ঞানীরা, কীভাবে শিকার করত, উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
জুরাসিক ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের 3D ছবি।

| Edited By: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়

Jun 28, 2022 | 7:40 AM

জুরাসিক যুগের একটি অজ্ঞাত জীবাশ্মের 3D ইমেজিংয়ে সক্ষম হয়েছে বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের একটি দল আবিষ্কার করেছে, জুরাসিক ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের মতো একটি প্রাণী, শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে সুপারসাকার ব্যবহার করেছিল। Vampyronassa Rhodanica Suckers-কে গভীর ভাবে দেখার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথম বারের মতো 3D ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। ভ্যাম্পাইরোনাসা রোডানিকা হল, আজকের ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের (Vampyroteuthis Infernalis) বিলুপ্ত আত্মীয়।

সম্প্রতি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে বিজ্ঞানীরা তাদের রিসার্চ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছেন। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে ওই ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের আভ্যন্তরীণ অ্যানাটমি সম্পর্কেও বিশদে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, যা এর আগে একাধিক বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।


16.4 মিলিয়ন বছর পুরানো সাইট থেকে জীবাশ্ম পাওয়া গেছে

অনুসন্ধানে যে জীবাশ্মদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, সেগুলি দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সে অবস্থিত একটি জীবাশ্ম সাইট লাউল্ট-সুর-রোন লেগারস্টেট ( La Voulte-sur-Rhône Lagerstätte) থেকে পাওয়া গিয়েছিল। এই সাইটটি প্রায় 16.4 মিলিয়ন বছরের পুরানো। অর্থাৎ, এটি জুরাসিক যুগের মাঝামাঝি (20.13 মিলিয়ন থেকে 14.55 মিলিয়ন বছর আগে) এবং এতে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্মের ভান্ডার রয়েছে। এই সাইটটি বিজ্ঞানীদের জন্য খুবই বিশেষ কারণ এখানকার নমুনাগুলো 3D তে সংরক্ষিত আছে।

এর আগে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি

Annales de Paléontologie জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিজ্ঞানীরা 2002 সালে এই জীবাশ্মগুলি প্রথম পরীক্ষা করেছিলেন। তখন তাঁরা বলেছিলেন যে, এই প্রাণীগুলি কিছু অজানা প্রজাতির। প্রতিবেদনটিতে গবেষকরা আট পা বিশিষ্ট একটি অক্টোপাসের মতো প্রাণীর কথা জানিয়েছেন এবং সিরি নামক সূক্ষ্ম কাঠামো ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই সময়ে এটা স্পষ্ট হয় যে, প্রতিটি পায়ের উভয় পাশে সিরি দ্বারা বেষ্টিত সাকার ছিল। কিন্তু তাদের সঠিক গঠনটি তখন বোঝা যথেষ্ট কঠিন ছিল।

এক্স-রে প্রযুক্তি থেকে প্রাপ্ত অনন্য তথ্য

শক্তিশালী এক্স-রে দিয়ে এই জীবাশ্মগুলি পুনরায় পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপরই গবেষকরা প্রাণীটির অভ্যন্তর সম্পর্কে অনন্য তথ্য খুঁজে পান। এক্স-রে বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণা দলটি উচ্চ রেজ়োলিউশনে এই প্রাণীটির সাকারগুলির পুনর্গঠন করেছে। সেগুলি একটি ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের আকারে হলেও অনেকটাই বড়। তবে, তারা সংখ্যায় বেশি এবং একসঙ্গে অনেকটাই কাছাকাছি ছিল বলে জানা গিয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রাণীটি সমুদ্রে শিকার করেছে এবং এটি তার শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তার বড় সাকার এবং বিশেষ পা ব্যবহার করে।

ভ্যাম্পায়ার স্কুইডরা তাদের শিকারকে জলের স্রোত থেকে বের করে আনতে দীর্ঘ এবং আঠালো ফিলামেন্ট ব্যবহার করে। কিন্তু গবেষকরা, ভি. রোডানিকা(Vampyronassa rhodanica) অর্থাৎ প্রাপ্ত ওই স্কুইড জীবাশ্মে এই ফিলামেন্টের কোনও প্রমাণ পাননি। এটা হতে পারে যে, জুরাসিক যুগের জীবের এমনতর কাঠামো ছিল না। এছাড়াও, ফিলামেন্টের অনুপস্থিতি আরও একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, ভি. রোডানিকা আসলে ভ্যাম্পায়ার স্কুইডের চেয়ে আধুনিক অক্টোপাসের কাছাকাছি। কারণ, অক্টোপাসেও ফিলামেন্ট থাকে না।