জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জীবন যে সবসময় খুব রহস্য রোমাঞ্চে ভরপুর তা কিন্তু নয়। বরং অনেকসময়েই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে খুব জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও ফলস্বরূপ কিছুই পাওয়া যায় না। তখন হতাশায় ভোগা খুব স্বাভাবিক। ঠিক তেমনই মাঝেমধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এমন সব বিষয় আবিষ্কার করে ফেলেন যে চমকে যায় সাধারণ মানুষ। তেমনই এক আবিষ্কার সম্প্রতি হয়েছে Supermassive Black Hole বা কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাও আবার একজোড়া। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে রয়েছে এই দু’টি কৃষ্ণগহ্বর। এই Supermassive Black Holes Pair আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার ইতিহাস বদলে দিতে পারে। সেই সঙ্গে সুস্পষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে ভবিষ্যতেও।
এই Supermassive Black Holes Pair পর্যবেক্ষণের জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা European Southern Observatory’s Very Large Telescope (ESO’s VLT) ব্যবহার করেছেন। এই স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা এই Supermassive Black Holes Pair দেখা গিয়েছে। এর আগেও এমন কৃষ্ণগহ্বরের জোড়া বা পেয়ার নজরে এসেছে। তবে তাদের মধ্যে ব্যবধান এত কম ছিল না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দুই অবজেক্টের মধ্যে যে ক্ষুদ্র বা কম ব্যবধান রয়েছে, এর আগে এমনটা কখনও দেখা যায়নি। সম্ভবত এই দুটো ব্ল্যাক হোল একসঙ্গে মিশেও যাবে আগামী দিনে, এমনটাই ধারণা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশের সবচেয়ে রহস্যময় ক্ষেত্রে হল ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর। বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় এই ব্ল্যাক হোল এলাকায় মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই তীব্র যে কোনও কিছু এমনকি আলোও এখান থেকে বাইরে যায় না, বা বলা ভাল যেতে পারে না। একটি ক্ষুদ্র বা সংকুচিত এলাকায় অনেক পরিমাণ পদার্থ চেপে রাখার ফলেই ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরে উচ্চ মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থাকে। আর সাধারণ মানুষ খালি চোখে কখনই ব্ল্যাক হোল দেখতে পাবেন না কারণ এর মধ্যে দিয়ে আলোও প্রবেশ করতে বা যাতায়াত করতে পারে না। কিন্তু স্পেস টেলিস্কোপের বিশেষ যন্ত্রাংশের মাধ্যলে ব্ল্যাক হোল খুঁজে বার করা সম্ভব। সাধারণত মৃত নক্ষত্র দ্বারা তৈরি হয় এই ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, NGC ৭৭২৭ গ্যালাক্সিতে দুটো এই সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল দেখা গিয়েছে। এই NGC ৭৭২৭ গ্যালাক্সি রয়েছে Aquarius constellation বা অ্যাকোয়ারিস নক্ষত্রপুঞ্জে। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৮৯ মিলিয়ন আলোকবর্ষ হলেও, এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে রয়েছে। এর আগে যে Supermassive Black Holes Pair পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল তার দূরত্ব ছিল পৃথিবী থেকে ৪৭০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। তবে নতুন Supermassive Black Holes Pair- এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে মাত্র ১৬০০ আলোকবর্ষ।
আরও পড়ুন- Earth Water: পৃথিবীতে জল এসেছিল কোথা থেকে? নতুন গবেষণায় কী তথ্য পেলেন বিজ্ঞানীরা…