Penis Plants: মহিলারা ‘স্পর্শ’ করায় জারি নিষেধাজ্ঞা, কাম্বোডিয়ার ‘পেনিস প্ল্যান্ট’ নিয়ে কেন এত কড়াকড়ি?
Cambodia Penis Tree: গত কয়েক দিন আগে পেনিস ট্রি হাতে কাম্বোডিয়ার কয়েক জন মহিলার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হয়েছিল। সেই গাছে জনসাধারণ এবং বিশেষ করে মহিলাদের হাত দিতে নিষেধ করে সে দেশের সরকার। কিন্তু কেন?
একটা গাছও যে বিতর্কের কারণ হতে পারে, কখনও ভাবতে পেরেছিলেন? কিন্তু সেই গাছের গড়ন যদি হয় একটু উদ্ভট ধরনের, তাহলেও কী বিতর্ক হতে পারে? আর বিতর্ক যদি হয়ও, তাহলে তা কোন পর্যায়ে যেতে পারে? কাম্বোডিয়ায় (Cambodia) কিন্তু বিতর্কের জল বহু দূর পর্যন্ত গড়িয়েছে। এতটাই যে, সে দেশের নাগরিকদের একটি বিশেষ গাছে হাত দিতে বারণ করা হয়েছে। কী এমন গাছ যে নাগরিকরা হাতই দিতে পারবেন না? সম্প্রতি কাম্বোডিয়ার বেশ কিছু মহিলাকে দেখা গিয়েছিল নেপেন্থেস হোল্ডেনি নামের একটি গাছ হাতে নিয়ে ছবি তুলতে। রীতিমতো পোজ় দিয়ে সেই গাছের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন কাম্বোডিয়ার মহিলারা। ছবিগুলি খুব ভাইরাল (Viral) হয়েছিল। আর সেখানেই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত। কারণ, সেই গাছটা দেখতে হুবহু পুরুষাঙ্গের মতো। এমন অদ্ভুত গঠনের জন্য গাছটির আর এক নাম পেনিস প্ল্যান্ট (Penis Plants)।
কাম্বোডিয়ার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম Khmer Times-এর তরফ থেকে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে বলা হয়, সে দেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের তরফে মহিলারা হাতে এই পেনিস প্ল্যান্ট ধরে রয়েছেন, এমন অনেক ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। সেই পোস্টে লেখা হয়েছে, “তাঁরা যা করছেন, তা খুবই খারাপ। ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ আর কখনও করবেন না। প্রাকৃতিক সম্পদকে ভালবাসার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু ফসল কাটবেন না যাতে এটি নষ্ট হয়ে যায়।”
মহিলারা গাছের যে অংশটি নিয়ে ছবি পোস্ট করছেন, সেটি আসলে ওই নেপেন্থেস হোল্ডেনি গাছের ফুল। এই প্রথম বার নয়। এর আগেও বহু বার সে কাম্বোডিয়ার সরকারের তরফে পর্যটক এবং সে দেশের মানুষজনকে গাছটির গায়ে হাত দিতে এবং তার ফুল ছিঁড়তে বারণ করা হয়েছিল। তার অন্যতম কারণ হল, ধীরে ধীরে এই নেপেন্থিস স্পিসিস বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে।
নেপেন্থেস স্পিসিস
মূলত পশ্চিম কাম্বোডিয়ার গ্রীষ্মপ্রবণ অঞ্চলে দেখা যায় এই ধরনের গাছ। এই গাছগুলি কম পুষ্টিসমৃদ্ধ মাটির অঞ্চলে বেড়ে ওঠে এবং তারা পোকামাকড়ের মাধ্যমে তাদের পুষ্টির চাহিদা মেটায়। মূলত শিকারকে প্রলুব্ধ করার জন্য তাদের মিষ্টি রস এবং ঘ্রাণ ব্যবহার করে।
প্রাথমিক ভাবে পোকামাকড়গুলিকে গাছের মিষ্টি রস খাওয়ানোর জন্য প্রলুব্ধ করা হয়। যখন কীটপতঙ্গেরা গাছটির ভিতরে পড়ে, তখন তারা আর উড়তে পারে না। কারণ, তাদের শরীরে উদ্ভিদের পাচক তরলে আবৃত হয়ে যায়। আর এই প্রক্রিয়াতেই উদ্ভিদ পুষ্টি শোষণ করে।
তবে ইদানিংকালে কৃষ্টি সম্প্রসারণের পাশাপাশি পর্যটনের বৃদ্ধি এই বিরল উদ্ভিদ প্রজাতিকে পতনের দিকে পরিচালিত করেছে।
বিরলতম প্রজাতি
এই গাছটি অনেকের কাছেই মজাদার মনে হতে পারে। কিন্তু নান্দনিকতার উপরে ভিত্তি করে সেই গাছই এখন বিলুপ্তির পথে। আসলে এই গাছটি নেপেন্থেস বোকোরেনসিস নামক একটি প্রজাতির খুবই কাছাকাছি, ফ্রিল্যান্স ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার জ়েরেমি হোল্ডেন অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন। এই প্রজাতিটি তিনিই সর্বপ্রথম লক্ষ্য করেছিলেন এবং সেই সময় এর নাম দিয়েছিলেন ফ্রাঙ্কোইজ় মে। লাইভসায়েন্স-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বটানিক্যাল ইলাসট্রেটর ফ্রাঙ্কোইজ় দুটো প্রজাতি সম্পর্কেই ব্যাখ্যা করেছিলেন।
এই দুই প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য কী
হোল্ডেনি এবং বোকোরেনসিস দুটিই প্রায় এক দেখতে এবং এরা একই জায়গা থেকে এসেছে। হোল্ডেনি হল এই দুই প্রজাতির মধ্যে সবথেকে বিলুপ্তপ্রায়। এখন প্রায় এমনই অবস্থায় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, নেপেন্থেস হোল্ডেনি প্রজাতিটি কাম্বোডিয়ার কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে, তার উত্তর সে দেশের মানুষজনের জানা নেই।