অনেক সময় এমন কিছু তথ্য উঠে আসে, যা কল্পনারও বাইরে। বিজ্ঞানীদের পক্ষে বোধ হয় অসাধ্য সাধনও সম্ভব। ভাবছেন তো কী হল? সাধারণত হিরে বিশুদ্ধ কার্বন দিয়ে তৈরি। বেশিরভাগ হীরে 1 থেকে 300 কোটি বছর আগে পৃথিবীর পৃষ্ঠের নীচে তীব্র তাপ এবং উচ্চ চাপের কারণে গঠিত হয়েছিল। তীব্র তাপ এবং চাপের দীর্ঘদিন ধরে থেকে তা শক্ত হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পদার্থ পরিণত হয়েছিল। পৃথিবীতে পাওয়া বেশিরভাগ হিরেই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে। তারপরে তাকে মেশিনে ফেলে তৈরি করার পদ্ধতি শুরু হয়েছিল। এই প্রযুক্তি, প্রথম 1950-এর দশকে শুরু হয়েছিল। তাতে উচ্চ চাপ এবং উচ্চ তাপমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়েছিল। কার্বন উৎসের উপাদান সাধারণত 2300°C-এর বেশি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়। এবার সেই পদ্ধতিতেই একটু নতুনত্য আনা হয়েছে। শ্মশানের ছাই থেকে তৈরি করা হচ্ছে চকচকে হিরে। কিন্তু কীভাবে?
শ্মশানের ছাই থেকে তৈরি হচ্ছে চকচকে হিরে:
হিরে তৈরি করতে কার্বন প্রয়োজন। মানুষের এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। মানবদেহের প্রায় 18.5 শতাংশ কার্বন দ্বারা গঠিত এবং শ্মশানে সাধারণত প্রতিদিন 2.5 থেকে 8.5 মিলিগ্রাম তৈরি হয়। যেহেতু একটি কৃত্রিম হিরে তৈরি করতে মাত্র 1 মিলিগ্রাম কার্বন প্রয়োজন। সেটাই মানবদেহ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে আকর্ষণীয় বটে।
কীভাবে তৈরি করা হচ্ছে হিরে?
দাহ করা হাড়ের কার্বন, কার্বনেট আকারে উপস্থিত থাকে, একটি লবণে একটি কার্বন এবং তিনটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে। কার্বনেটের কিছু অংশকে আলাদা করার জন্য প্রথমে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, তারপর উচ্চ তাপমাত্রা এবং কম অক্সিজেনযুক্ত পরিবেশ ব্যবহার করে কার্বনেট বিশুদ্ধ কার্বনে রূপান্তরিত হয়।
কিন্তু তাতে খরচ কত?
যে কোনও সিন্থেটিক হিরের (হিরের একটি প্রকারভেদ) মতো HPHT প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার আগে তাতে প্রথমেই কার্বন যোগ করা হয়। পরীক্ষাগারগুলি যে পরিমাণে জেনেরিক কার্বন যোগ করে। তার খরচ অনেকটাই পড়ে। তবে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, জেনেরিক কার্বন দেহাবশেষ থেকে পাওয়া যায় না। এর কারণ হল ছাইতে যে কার্বন থাকে, তা হিরের রঙকে পাল্টে ফেলতে পারে। দাহ করা মানুষের দেহাবশেষ থেকে জেনেরিক কার্বন তৈরি করতে খরচ আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি হবে। তখন একটি ছোট হিরের দাম হতে পারে $750 (ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় 62,317 টাকা) থেকে $20,000 (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় 16,61,807 টাকা) পর্যন্ত।