ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA) এবং রাশিয়ার Roscosmos যৌথভাবে পর্যবেক্ষণ চালাবে মঙ্গলগ্রহে। এর জন্য দুই দেশের তরফে একত্রিত হয়েই একটি মার্স রোভার পাঠানো হবে লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে। জানা গিয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA) এবং রাশিয়ার Roscosmos তাদের যৌথ মঙ্গল অভিযান (মার্স রোভার মিশন) চালু করবে। আগে অবশ্য শোনা গিয়েছিল যে ২০২০ সালেই লালগ্রহে পাঠানো হবে এই রোভার। তবে তা পিছিয়ে গিয়েছিল অনেকগুলো কারণে। তার মধ্যে প্রধান হল পৃথিবী এবং মঙ্গলগ্রহের অবস্থান। অর্থাৎ যে সময় এই গ্রহগুলি উপযুক্ত কৌণিক অবস্থানে অবস্থান করে, সেই সময়েই পৃথিবী থেকে মঙ্গলগ্রহে রোভার পাঠানো সম্ভব।
ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি এবং রাশিয়ার স্পেস এজেন্সি একত্রিত হয়ে মঙ্গলগ্রহে যে মার্স রোভার পাঠাচ্ছে তার নাম ExoMars “Rosalind Franklin” vehicle। ইতিমধ্যেই এই যন্ত্র লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে পাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন ইউরোপ এবং রাশিয়ার স্পেস এজেন্সি কর্তৃপক্ষ। ইনস্টাগ্রামে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির তরফে একটি পোস্ট শেয়ার করে ওই মার্স রোভারে থাকা ExoMars ক্যামেরা কীভাবে মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশ পর্যবেক্ষণে সাহায্য করবে, ওই ক্যামেরায় কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। কিছু ছবি আর ভিডিয়ো শেয়ার করে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির তরফে বলা হয়েছে যে, ওই ExoMars আসলে চোখ হিসেবে মঙ্গলগ্রহে নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে ExoMars নামক মার্স রোভারের ক্যামেরা প্যানোরমা এবং ক্লোজ-আপ টেকনিকের সাহায্যে ছবি তুলতে সক্ষম। এছাড়াও থ্রিডি ম্যাপ এবং একটি হুইল সেলফিও নিয়েছে ওই ExoMars ক্যামেরা। বর্তমানে এই রোভারের ফটো সেটিংসের ওয়াইড রেঞ্জের পরীক্ষ-নিরীক্ষা চলছে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে যে এই ক্যামেরার সিস্টেমের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়াররা যতটা সম্ভব বিজ্ঞানের ব্যবহার করেছেন। তার ফলে এই ক্যামেরার সেটিংস এবং ফিচার অত্যন্ত উন্নত, আধুনি, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর হয়েছে। মঙ্গলগ্রহ পর্যবেক্ষণ আশানুরুপ ভাবেই সাহায্য করবে ExoMars ক্যামেরা।
ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহে মার্স রোভার পাঠিয়েছে নাসা। মার্কিন স্পেস এজেন্সির ওই রোভারের নাম পারসিভের্যান্স। এই রোভারের মধ্যে আবার ছিল একটি মার্স হেলিকপ্টার যার নাম ingenuity। এই প্রথম পৃথিবীর বাইরে কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার উড়েছে। বর্তমানে রোভার পারসিভের্যান্স এবং হেলিকপ্টার ingenuity একত্রিত হয়েছে মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করছে। মার্সিয়ান রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি চলছে জলের সন্ধানও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুধু আমেরিকা নয়, মঙ্গলগ্রহে অভিযানের জন্য মার্স রোভার পাঠিয়েছে চিনও। তাদের পাঠানো এই রোভারের নাম ঝুরং। চিনের অগ্নি দেবতার নামানুসারে এই রোভারের নামকরণ করা হয়েছে। মূলত লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে জলের সন্ধান করছে চিনের পাঠানো মার্স রোভার ঝুরং।
আরও পড়ুন- Moon’s Oxygen: চন্দ্রপৃষ্ঠের রেগোলিথে সঞ্চিত যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন, কাজে লাগবে ৮ বিলিয়ন মানুষের