Exoplanet: সৌরজগতের বাইরের গ্রহে কার্বনের স্তূপ, লুকিয়ে রয়েছে প্রাণের স্পন্দন?

Aug 27, 2022 | 3:58 PM

WASP-39 b: ওয়াসপ-৩৯বি সৌরজগতের বাইরের একটি এক্সোপ্ল্যানেট। বৃহস্পতি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ। বৃহস্পতির আয়তনের তিনভাগের মাত্র একভাগ আয়তন এই ওয়াসপ-৩৯বির।

Exoplanet: সৌরজগতের বাইরের গ্রহে কার্বনের স্তূপ, লুকিয়ে রয়েছে প্রাণের স্পন্দন?

Follow Us

পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে পৌঁছে গিয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ (James Webb Telescope)। সম্প্রতি সৌরজগতের বাইরে নানা গ্রহ, উল্কা এবং নিউট্রন নক্ষত্র খতিয়ে দেখছিল এই টেলিস্কোপ। আর তখনই যে তথ্য খুঁজে পেল জেমস ওয়েব, তাতে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় বিজ্ঞানীদের। এই প্রথম সৌরজগতের বাইরের কোনও গ্রহে খোঁজ মিলল কার্বন ডাই-অক্সাইডের। যদিও গ্যাস জায়ান্ট হওয়ার দরুণ ‘ওয়াসপ-৩৯বি’ (WASP-39 b) নামক এই গ্রহে প্রাণের আভাস পাওয়া যে দুষ্কর, তা সাফ জানিয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

সূত্রের খবর, আমাদের নীল গ্রহ থেকে প্রায় ৭০০ আলোকবর্ষ (Light Years) দূরে অবস্থিত এই ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ (Exoplanet)। সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলোকে মূলত এক্সোপ্ল্যানেট বলা হয়। গত কয়েক দশক ধরে নাসা এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর চেষ্টায় অবতীর্ণ হয়েছে। সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত গ্রহগুলোতে প্রাণের খোঁজে বারংবার চেষ্টা চালিয়েছে টেলিস্কোপ, এবারের এই সন্ধান যে মহাকাশ গবেষণায় নতুন পথ দেখাবে, তা বলাই বাহুল্য। বিজ্ঞানভিত্তিল জার্নাল ‘নেচার’-এ (Nature) এই এক্সোপ্ল্যানেটের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

কীভাবে খোঁজ মিলল কার্বনের?

কার্বন মানেই প্রাণের আভাস, প্রাণের স্পন্দনের অবশেষ। ‘নেচার’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়েবের নিয়ার-ইনফ্রারেড স্পেকটোগ্রাফ (Near-Infrared Spectrograph) ব্যবহার করে সৌরজগতের বাইরের এই গ্রহে ৪.১-৪.৬ মাইক্রন উচ্চতার একটি ছোট্ট পাহাড়ের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিপূর্বে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ (Hubble Space Telescope) এই গ্রহেই জলীয় বাষ্প, সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের অস্তিত্ব সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারণা দেয়। “কার্বন ডাই-অক্সাইড এক্সোপ্ল্যানেটে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, এই তথ্য দেখে চমকে গিয়েছিলাম আমি”, বলেছেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (Johns Hopkins University) ছাত্র জাফর রুস্তামকুলভ। বিজ্ঞানী দলের প্রধান নাটালি বাতালহার মতে, “ওয়াসপ-৩৯বি গ্রহে কার্বন থাকলে সৌরজগতের বাইরের এই রকমের গ্রহ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব হবে।”

ওয়াসপ-৩৯বি সম্পর্কে জানেন?

ওয়াসপ-৩৯বি সৌরজগতের বাইরের একটি এক্সোপ্ল্যানেট। বৃহস্পতি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ। বৃহস্পতির আয়তনের তিনভাগের মাত্র একভাগ আয়তন এই ওয়াসপ-৩৯বির। শনির আয়তনের প্রায় সমতুল্য ওয়াসপের আয়তন। এই গ্রহের তাপমাত্রা প্রায় ৯০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। জেমস টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ওয়াসপ ও সে প্রদক্ষিণ করে যে নক্ষত্রকে, তাদের দূরত্ব আদতে, সূর্য এবং বুধের দূরত্বের মাত্র এক-অষ্টমাংশ। যদিও নক্ষত্রকে একবার সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে এই এক্সোপ্ল্যানেটের সময় লাগে প্রায় ৯৬ ঘণ্টা।

বিজ্ঞানীদের দাবি, এই গ্রহকে প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় ২০১১ সালে। কোনও নক্ষত্রের আশেপাশে প্রদক্ষিণরত গ্রহ থাকলে ঘূর্ণনের জেরে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য কমতে ও বাড়তে থাকে। এই তথ্যকে মাথায় রেখে জেমস টেলিস্কোপ খুঁজে বার করে ওয়াসপ-৩৯বি। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা গোছগাছ শুরু করে দিয়েছেন। না, এই এক্সোপ্ল্যানেটে যাওয়ার উদ্দেশে নয়। জেমস টেলিস্কোপ মারফত প্রাপ্ত তথ্য খতিয়ে দেখে প্রাণের সন্ধানে নতুন উদ্যমে গবেষণা শুরু করতে চলেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা, এমনই খবর ‘নেচার’ সূত্রে।

Next Article