Latest Science News: আগুন জ্বলছে ভারতের একের পর এক জঙ্গলে। দেশের বিভিন্ন জঙ্গল দাবানলের শিকার হয়েছে গ্রীষ্মকাল আসার আগেই। গত 12 দিনে দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে 42,799 বার আগুন লেগেছে। এখনও সেভাবে গ্রীষ্মের দাপট শুরু হয়নি, কিন্তু এখনই জঙ্গল পুড়ছে। গত বছরের অর্থাৎ 2022-এর মার্চ মাসের তুলনায় চলতি বছরে আরও 19,929টি বনে দাবানল হয়েছে। ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Forest Survey of India)-র রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে দেশের 23টি রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে আগুন লেগেছে। এত পরিমাণে দাবানল বাড়ার কারণ কী? বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে কী বলছেন? ভারতে এভাবে দাবানলের পরিমাণ বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে কতটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক সবিস্তারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, “এই পরিসংখ্যান ভীতিজনক। চলতি বছরের 1 মার্চ থেকে 12 মার্চ পর্যন্ত, বনে দাবানল 115 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ফেব্রুয়ারিতে যতটা বৃষ্টি প্রয়োজন ছিল তা হয়নি। মাত্র 7.2 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তার উপর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল।”
আবহাওয়া অধিদফতরের মতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে, মধ্য ভারতে 99 শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমে 76 শতাংশ কম, দক্ষিণ উপদ্বীপে 54 শতাংশ এবং পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে 35 শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 29.66 ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে অনেক বেশি। চলতি মাসে সারা দেশে 772টি বড় জঙ্গলে আগুন লেগেছে। এফএসআইয়ের (FSI) তথ্য অনুযায়ী, শুষ্ক জমি ও তাপের কারণে জঙ্গলে আগুন লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।
দেশের কোথায় কোথায় আগুন লেগেছে দেখে নিন:
এফএসআই (FSI) অনুসারে, ওড়িশায় 202টি জায়গায় সর্বাধিক সংখ্যক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মিজোরামে 110
ছত্তিশগড়ে 61
মণিপুরে 59
অন্ধ্রপ্রদেশে 52
আসামে 48
তেলেঙ্গানায় 33
মধ্যপ্রদেশে-মহারাষ্ট্রে 27-27
নাগাল্যান্ড-ঝাড়খণ্ডে 23-23
কর্ণাটকে 20
অরুণাচল প্রদেশে 20
পশ্চিমবঙ্গে-তামিলনাড়ু 13
কেরালায় 6
বিহারে 4
ত্রিপুরা-উত্তরাখণ্ড-উত্তরপ্রদেশ-গুজরাট-সিকিমে একটি করে জঙ্গলে আগুন ধরেছে।
এমন দ্রুত হারে দাবানলের পরিমাণ বাড়তে থাকলে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দাবানলের ফলে প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সব দিক থেকেই গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। এগুলি অসংখ্য প্রজাতির জীববৈচিত্র্য এবং আবাসস্থলকে গ্রাস করতে পারে। অর্থ সম্পত্তি এবং এমনকি মানুষের জীবনও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে দাবানল ঠেকানোর কোনও উপায় নেই। তবে এর হাত থেকে বাঁচতে হলে সেই এলাকার মানুষ ও মূল্যবান সামগ্রীগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ নেই। ভবিষ্যতে দাবানলকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।