James Webb Telescope: এক বছর হয়ে গেল মহাকাশে চরকিপাক খেয়ে চলেছে আধুনিক প্রজন্মের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। বিগত কয়েক মাসে জেমস ওয়েব, মহাকাশের একঝাঁক গ্রহ নক্ষত্রের অবিশ্বাস্য কিছু ছবি তুলে ধরেছে। এবার যে প্রকৃত অর্থেই প্ল্যানেট হান্টার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হল টেলিস্কোপটি। তার কারণ, বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী অবজ়ারভেটরিটি আমাদের সৌরজগতের বাইরেও এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছে, যা দেখতে হুবহু পৃথিবীর মতো।
গ্রহটিকে এর আগে LHS 475b হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছিল, যার ব্যাস পৃথিবীর ব্যাসের সঙ্গে 99% মিলে যায়। নাসার ট্রানজ়িটিং এগজ়োপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (টিইএসএস) পর্যবেক্ষণ ডেটাতে প্রথম দেখার পরে গ্রহটিকে ওয়েব দ্বারা পর্যবেক্ষণ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য গ্রহের তুলনায় এই LHS 475 b পৃথিবীর অনেক কাছের। পৃথিবী থেকে মাত্র 41 আলোকবর্ষ দূরে কনস্টিলেশন অক্টেনে এই গ্রহের অবস্থান।
এই গ্রহটিকে নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন লাস্টিগ ইয়েগার নামের এক মহাকাশ বিশেষজ্ঞ। তিনি দাবি করেছেন, “এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, এমন গ্রহ আছে। এখন অনেক বছর পিছনে গিয়ে ওয়েব টেলিস্কোপ সেই বিষয়টাই আরও পরিষ্কার করে দিল। তবে এটাও ঠিক যে, গ্রহটি আকারে খুবই ছোট এবং পাথুরে।” লাস্টিগ ইয়েগার ছাড়াও ওই গবেষণা দলে আছেন কেভিন স্টিভেনসন, যাঁরা দুজনেই জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ফিজ়িক্স ল্যাবরেটারির প্রফেসর।
A whole new world!
41 light-years away is the small, rocky planet LHS 475 b. At 99% of Earth’s diameter, it’s almost exactly the same size as our home world. This marks the first time researchers have used Webb to confirm an exoplanet. https://t.co/hX8UGXplq2 #AAS241 pic.twitter.com/SDhuZRfcko
— NASA Webb Telescope (@NASAWebb) January 11, 2023
যে কারণে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি অন্যান্য টেলিস্কোপের থেকে আলাদা তা হল, এটি পৃথিবীর আকারের এগজ়োপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডলকেও চিহ্নিত করতে সক্ষম। এখন ওই গবেষণা দলটি ওই গ্রহের ট্রান্সমিশন স্পেকট্রাম বিশ্লেষণ করে দেখছে, ওই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে কী রয়েছে। যদিও ওই এগজ়োপ্ল্যানেটে বায়ুমণ্ডল রয়েছে কি না, গবেষণা দলটি এখনও তা বুঝতে পারেনি।
নাসা হেডকোয়ার্টার্সের অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স ডিভিশন ডিরেক্টর মার্ক ক্ল্যাম্পিন বলছেন, “পৃথিবীর আকারের পাথুরে গ্রহটির এই প্রথম পর্যবেক্ষণমূলক ফলাফলগুলি তার বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে জানার জন্য ভবিষ্যতের অনেক সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরে আর এক পৃথিবীর সম্পর্কে অনেক রহস্যের উদঘাটন করবে, যে মিশনটা ওয়েবের হাত ধরেই শুরু হয়ে গেল।”
তবে গবেষণা দলটি বলছে, পৃথিবীর মতো দেখতে হলেও এই এগজ়োপ্ল্যানেটে পৃথিবীর মতোই বায়ুমণ্ডল থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। গবেষকরা অনুমান করছেন, এখানে শনির টাইটানের মতো মিথেন ডমিনেটেড বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে।
তার থেকেও মজার বিষয়টি হল যে, গ্রহটি তার নক্ষত্রের চারপাশে মাত্র দুই দিনে একটি কক্ষপথ সম্পূর্ণ করে। নাসা বলেছে, LHS 475b আমাদের সৌরজগতের যে কোনও গ্রহের তুলনায় তার নক্ষত্রের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। তবে এর লাল বামন নক্ষত্রটি সূর্যের তাপমাত্রার অর্ধেকেরও কম। তাই, গবেষকরা মনে করছেন যে, এই গ্রহে এখনও বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে। ইয়েগার যোগ করলেন, “আমরা এই ছোট পাথুরে এগজ়োপ্ল্যানেটটি সম্পর্কে রিসার্চ করতে অনেকটাই কাছাকাছি চলে এসেছি। এর বায়ুমণ্ডল কেমন হতে পারে, আমরা সবে তার উপরিভাগ স্ক্র্যাচ করতে শুরু করেছি।”