Uranus And Neptune: একটা পড়ন্ত বিকেলে আমরা যখন ব্যালকনিতে আরামকেদারায় বসে কফি কাপে চুমুক দিই, তখন খুব ভাল লাগে আমাদের! আরও ভাল লাগে তখন যদি আকাশ কালো করে ঝুপ করে বৃষ্টি নামে! কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো, যদি বৃষ্টির সময় জলের পরিবর্তে হিরের অবারিত ধারা নেমে আসে। মানে জল নয়, জলের পরিবর্তে বৃষ্টিতে হিরে পড়তে শুরু করল। তখন আর আপনি বোধহয় বাড়ির জানলা বন্ধ করতে যাবেন না! আরও বেশি করে হিরের বৃষ্টিতে ভিজতে চাইবেন, চাইবেন কুড়িয়ে নিতে। কিন্তু সে বৃষ্টি আর পৃথিবীতে সম্ভব কোথায়? আগে একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, ইউরেনাস ও নেপচুনের মতো বরফ গ্রহগুলিতে হিরের বৃষ্টিপাত হয়। এখন একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই বরফের দৈত্যগুলিতে হিরের বৃষ্টিপাত খুবই ঘনঘন হতে পারে।
নেচার অ্যাস্ট্রনমি নামক একটি ম্যাগাজ়িনে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ইউরেনাস এবং নেপচুনের মতো গ্রহগুলির অভ্যন্তরে থাকা প্রচণ্ড চাপ হাইড্রোজেন এবং কার্বনকে ভিতরে চাপা দেওয়ার ফলে হিরের বৃষ্টির বিকাশ ঘটে, যা শক্ত হিরে তৈরি করে এবং ক্রমাগত ভিতরে গভীর ভাবে ডুবে যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের স্ট্যানফোর্ড ন্যাশনাল অ্যাক্সিলারেটর ল্যাবরেটরিতে ম্যাটার ইন এক্সট্রিম কন্ডিশনস (MEC) ডিভাইসটি এই গ্রহগুলির অভ্যন্তরে পাওয়া পরিবেশের ধরনকে অনুকরণের মাধ্যমে প্লাস্টিকের শক তরঙ্গ তৈরি করতে একটি তীব্র লেজার ব্যবহার করে।
গবেষকরা PET প্লাস্টিক ব্যবহার করে এই গ্রহগুলির গঠন পুনরায় তৈরি করেছেন, যা প্রায়শই খাবারের পাত্রে, প্লাস্টিকের জলের বোতল এবং বাক্সে ব্যবহৃত হয়। রস্টক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পদার্থবিদ এবং অধ্যাপক ডমিনিক ক্রাউস একটি প্রেস রিলিজে বলেছেন যে, বরফ গ্রহের (ইউরেনাস ও নেপচুন) ক্রিয়াকলাপগুলিকে অনুকরণ করার জন্য কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের মধ্যে PET-এর একটি চমৎকার ভারসাম্য রয়েছে।
তাঁরা ‘ছোট কোণ বিচ্ছুরণ’ (Small Angle Scattering) নামে পরিচিত একটি কৌশল ব্যবহার করে সেই অঞ্চলগুলির বৃদ্ধির হার এবং আকার পরিমাপ করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, এই হিরের অঞ্চলগুলি আকারে কয়েক ন্যানোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। ন্যানো হিরেগুলির পদার্থে উপস্থিত অক্সিজেনের কারণে পূর্বের পরীক্ষাগুলি থেকে পর্যবেক্ষিত কম তাপমাত্রা এবং চাপে বিকশিত হতে সক্ষম হয়েছিল।
তবে এই আবিষ্কার আরও একটি সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত করেছে, তা হল কৃত্রিম উপায়ে হিরে তৈরির সহজ কৌশল। এই লেজ়ার চালিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হিরে তৈরির সম্ভাবনাও এই আবিষ্কারের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে।