নতুন এক ডায়নোসরের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার চিলিতে। জানা গিয়েছে, চিলির সাব-আর্কটিক অঞ্চল থেকে এই ডায়নোসর ফসিলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। একে বলা হচ্ছে ankylosaur। বিভিন্ন ধরনের ডায়নোসরদের জীবাশ্ম বরাবরই গবেষকদের আকর্ষণ করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে খোঁজাখুঁজির পর নতুন প্রজাতির এই ডায়নোসরের জীবাশ্ম চিলিতে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এই প্রজাতির ডায়নোসরদের মধ্যে এক বিশেষ ধরনের ল্যাজ দেখতে পাওয়া যায়। একে বলা হচ্ছে armoured আকৃতিক ল্যাজ।
এই ল্যাজের বিশেষ নাম Stegouros elengassen। আদতে এটি একটি লম্বা এবং ফ্ল্যাট বা পেতে থাকা ল্যাজ। তবে চমক রয়েছে ল্যাজের শেষের অংশে। সেখানে রয়েছে সাত জোড়া ব্লেড। অত্যন্ত ধারালো এইসব ব্লেডের মতো অংশ। বিজ্ঞানীদের অনুমান, হয়তো আত্মরক্ষার জন্যই ওই বিশেষ প্রজাতির ডায়নোসরদের এই অদ্ভুত ধরনের শক্তিধালী। ধারালো ল্যাজ ছিল। তবে এই ডাউনসোল ankylosaur গোত্রের হলেও, তাদের থেকে কিছুটা আলাদা। ডায়নোসরদের ল্যাজের এই ধারালো গঠনই তাদের অন্যান্য ankylosaur- এর থেকে আলাদা করেছে। তবে এই প্রজাতির ডায়নোসরদের মাথার খুলি কিন্তু ankylosaur-দের মতোই। এক্ষেত্রে বিশেষ ফারাক লক্ষ্য করা যায়নি।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চিলি থেকে খুঁজে পাওয়া এই ডায়নোসরের জীবাশ্ম অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রায় ২ মিটার লম্বা এই ডায়নোসরের জীবাশ্ম। ক্রিটেশাস যুগের শেষ পর্যায়ে, প্রায় ৭১.৭ থেকে ৭৪.৯ মিলিয়ন বছর আগে চিলির একদম দক্ষিণ ভাগে Magallanes এলাকায় এই বিশেষ প্রজাতির ডায়নোসরদের দেখা যেত। বায়োজিয়োগ্রাফির নিরিখে এই অঞ্চল পশ্চিম অ্যান্টার্টিকার সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নেচার জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে নতুন করে আবিষ্কার হওয়া বিশেষ প্রজাতির ডায়নোসরের ল্যাজের আকৃতি এমন অদ্ভুত হওয়ার পিছনে হয়তো প্রাথমিক বিবর্তনীএয় বিভাজনই দায়ী।
এই Stegouros ডায়নোসরদের frond-like tail বা ল্যাজকে Aztec war club- এর সঙ্গে তুলনা করেছেন প্যালিওলজিস্টরা। এর একটি বিশেষ নামও দিয়েছেন তাঁরা, macuahuitl। ছোট ল্যাজের সঙ্গে Stegouros শরীরে তথা জীবাশ্মে ছোট হাতের হদিশও পাওয়া হয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই চমক দিচ্ছে Ankylosauria- এর এই নতুন প্রজাতি। তবে এর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার Kunbarrasaurus এবং অ্যান্টার্কটিকার Antarctopelta- র সঙ্গে এর অনেক মিল রয়েছে। এর ফলে তৈরি হচ্ছে একটি গন্ডোয়ানা অ্যাঙ্কিলোসরাস, যা অন্যান্য অ্যাঙ্কিলোসরাসের থেকে একদম আলাদা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যেসব প্রজাতির ডায়নোসরদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা চর্চা করছেন, তার মধ্যে অ্যাঙ্কিলোসরাস নিয়ে গবেষণা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাদের শক্ত খোলসে মোড়া দেহ, দেহের আবরণ, হাড়ের গঠন সব নিয়েই গবেষণা করেছেন প্যালিওলজিস্টরা।