‘কবরস্থান’ কিংবা ‘গোরস্থান’, নামটা শুনলেই কেমন যেন গা ছমছমে একটা ভাব আসে। তবে পৃথিবীতে এমন একটি জায়গা আছে, যাকে ‘উপগ্রহের কবরস্থান’ বলা হয়। যে স্যাটেলাইটগুলি মহাকাশে তাদের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাদেরকে এই জায়গায় নিয়ে এসে ‘সমাধি’ দেওয়া হয়। আপনি একে স্যাটেলাইট কবরস্থান নামেও ডাকতে পারেন। একে পৃথিবীর সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন স্থানও বলা হয়। অর্থাৎ চাইলেই যে আপনি একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারবেন, তা একেবারেই নয়। এটি ভুপৃষ্ঠ থেকে 2700 কিলোমিটার নীচে। এই জায়গায় পৌঁছতে একজন মানুষের অনেক দিন সময় লাগবে। এই অঞ্চলে মাত্র কয়েকটি ছোট দ্বীপ রয়েছে, যেখানে পাখি ছাড়া আর কোনও প্রাণী বাস করে না। একই জায়গায় ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস) ‘কবর’ দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে এই মহাকাশ স্টেশনটি আর কাজ করবে না।
স্যাটেলাইট কবরস্থানের নাম কী?
স্যাটেলাইটের কবরস্থান হিসেবে পরিচিত এই জায়গাটির নাম পয়েন্ট নিমো, যা প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত। এটিকে দুর্গম মেরুও বলা হয়, যেখানে চাইলেই কোনও মানুষ সহজে পৌঁছাতে পারে না। ইস্টার দ্বীপের দক্ষিণে এবং অ্যান্টার্কটিকার উত্তরে অবস্থিত। পয়েন্ট নিমোর যেদিকেই আপনি তাকাবেন, সেদিকই শুধু সমুদ্রের জলে ঘেরা। এই এলাকার গড় গভীরতা 13,000 ফুট (4,000 মিটার) এরও বেশি, যেখানে এমনকি সবচেয়ে বড় জাহাজটিও মুহূর্তের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।
কতগুলি স্যাটেলাইটের ‘কবর’ সেখানে?
1970 এর দশক থেকে পয়েন্ট নিমোতে 300 টিরও বেশি খাবার হয়ে যাওয়া, কিংবা অবসরপ্রাপ্ত উপগ্রহ এবং মহাকাশ স্টেশনকে রাখা হয়েছে। এখানের স্যাটেলাইটগুলি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) পয়েন্ট নিমোতে নামিয়ে আনবে। আইএসএস গত 25 বছর ধরে মহাকাশে রয়েছে। 357 ফুট (109 মিটার) লম্বা এবং 419,725 কিলোগ্রাম ওজনের পরিমাপ। তাই যদি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটিকে এই ‘কবরস্থান’-এ এনে রাখা হয়, তবে তা সেখানে থাকা বৃহত্তম মহাকাশ যন্ত্র হবে।