চাঁদ থেকে নাকি দেখা যাচ্ছে রহস্যময় আলো! রাতের আকাশে তার শান্ত, পরিচিত রূপে মুগ্ধ হয়ে যাই আমরা। তবে সেই চাঁদ যদি হয়ে ওঠে রহস্যময়? চাঁদ থেকে ঠিকরে ঠিকরে আসছে আলো। সেখানে কি ভিনগ্রহীরা নেমে এল? এলিয়ানশিপের সবুজ আলো চাঁদ থেকে ছিটকে বেরচ্ছে? চাঁদের গায়ে কলঙ্ক হিসাবে যে ক্রেটারগুলো দেখা যায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের মনে কৌতূহল অনেকদিন ধরেই। তবে সেই ক্রেটারগুলোকে নাকি ঢেকে দিচ্ছে রহস্যময় আলো। তাহলে কি নিজের ত্বকের ব্রণ ঢাকতে নতুন ‘কনসিলার’ কিনল চাঁদ?
চাঁদের বুকে ঘটে চলা এই অদ্ভুত ঘটনাগুলোকে বলা হয় ‘ট্রানজিয়েন্ট লুনার ফেনোমেনা’, সংক্ষেপে TLP। চাঁদে খুব ক্ষণিকের জন্যই এই ঘটনা দেখা যায়। তবে এই ঘটনা কিন্তু নতুন নয়, আজ থেকে শত শত বছর আগেও মানুষ এই আলো দেখেছে। ১১২৫ সালের বহু প্রাচীন নথি বা ১৪০০ সালের অনেক ছবিতেও এই রহস্যজনক আলোর উল্লেখ পাওয়া গেছে। ১৭৮৭ সালে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্যার উইলিয়াম হার্শেল চাঁদের অন্ধকার অংশে তিনটে লালচে আলোর ঝলক দেখেছিলেন। এই মহাকাশবিজ্ঞানীই ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। এমনকি ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনের নভোচারীরাও চাঁদের দিগন্তে একটি উজ্জ্বল আভা লক্ষ্য করেন। এখন পর্যন্ত, ৩,০০০ এরও বেশি টিএলপি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
চাঁদের কিন্তু আমাদের পৃথিবীর মতো কোনও বায়ুমণ্ডল নেই। ফলে পৃথিবীর মতো নিজের শরীরকে রক্ষা করতে পারে না আমাদের ছোট্ট উপগ্রহ। মহাকাশের ছোট ছোট পাথর বা উল্কা যখন ঘণ্টায় লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার বেগে চাঁদের মাটিতে এসে আছড়ে পড়ে, তখন প্রচণ্ড তাপ আর আলোর ঝলক তৈরি হয়। এই ঝলকগুলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বেশিরভাগ টিএলপি এই কারণেই ঘটে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি অর্থাৎ ESA-এর ‘নেলিয়োটা’ (NELIOTA) প্রকল্পের মতো অত্যাধুনিক পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা এই ধরনের শত শত আঘাতের ঝলক ক্যামেরায় ধরেছেন।
চাঁদের বুকে এহেন মহাজাগতিক ঘটনার নেপথ্যে আর একটা কারণ বেশ অবাক করার মতো। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, চাঁদের ভেতরের ফাটল বা গর্ত দিয়ে কখনও কখনও গ্যাস বাইরে বেরিয়ে আসে। এই গ্যাস যখন সূর্যের আলোয় আসে, তখন তা চকচক করে বা মৃদু আলো দেয়। অনেকটা আগ্নেয়গিরির গ্যাসের মতো, কিন্তু অনেক শান্তভাবে। এই আলো বেশিক্ষণ থাকতে পারে, হয়তো কয়েক ঘণ্টা ধরেও দেখা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের ভূত্বকের ফাটল বা বড় বড় গর্ত, যেমন ‘অ্যারিস্টার্কাস’ বা ‘প্লেটো’ ক্রেটারের আশেপাশে, মাঝে মাঝে আটকে থাকা গ্যাস বেরিয়ে আসে। এই গ্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রেডন-আর্গন। এই গ্যাস মহাকাশে বেরিয়ে আসার পর সূর্যের আলোয় চকচক করে যা পৃথিবী থেকে লালচে, হলুদ বা হালকা মেঘের মতো আভা হিসাবে দেখা যায়। এই ধরনের আভা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যদি এই গ্যাস নির্গমন সত্যি হয়, তবে এটি প্রমাণ করে যে চাঁদকে আমরা যতটা নিথর মনে করি, সে আসলে ততটা নিথর নয়।
মোটকথা, এই আলো বা ঝলকগুলো আমাদের গ্রহের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী চাঁদ সম্পর্কে অনেক কিছু জানায়— যেমন চাঁদের ভূ-তত্ত্ব, তার ভিতরের কার্যকলাপ এবং মহাকাশ থেকে তার উপর কী ধরনের আঘাত আসছে! এখনও চাঁদের সব রহস্য পুরোপুরি ভেদ হয়নি। বিজ্ঞানীরা আধুনিক টেলিস্কোপ আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। ভবিষ্যতে চাঁদে বসতি স্থাপন মানুষের জন্য কতটা নিরাপদ হবে, সে বিষয়ে আভাস পেতে এই গবেষণা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এখনও বেশ কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, এসব TLP-এর আড়ালে বেশ কিছু তীব্র আলো দেখা যাচ্ছে যার কারণ স্পষ্ট নয়। তাহলে কি সত্যিই এলিয়ানরা টর্চ জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চাঁদের ভূপৃষ্ঠে? কী মনে হয় আপনার?
চাঁদ থেকে নাকি দেখা যাচ্ছে রহস্যময় আলো! রাতের আকাশে তার শান্ত, পরিচিত রূপে মুগ্ধ হয়ে যাই আমরা। তবে সেই চাঁদ যদি হয়ে ওঠে রহস্যময়? চাঁদ থেকে ঠিকরে ঠিকরে আসছে আলো। সেখানে কি ভিনগ্রহীরা নেমে এল? এলিয়ানশিপের সবুজ আলো চাঁদ থেকে ছিটকে বেরচ্ছে? চাঁদের গায়ে কলঙ্ক হিসাবে যে ক্রেটারগুলো দেখা যায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের মনে কৌতূহল অনেকদিন ধরেই। তবে সেই ক্রেটারগুলোকে নাকি ঢেকে দিচ্ছে রহস্যময় আলো। তাহলে কি নিজের ত্বকের ব্রণ ঢাকতে নতুন ‘কনসিলার’ কিনল চাঁদ?
চাঁদের বুকে ঘটে চলা এই অদ্ভুত ঘটনাগুলোকে বলা হয় ‘ট্রানজিয়েন্ট লুনার ফেনোমেনা’, সংক্ষেপে TLP। চাঁদে খুব ক্ষণিকের জন্যই এই ঘটনা দেখা যায়। তবে এই ঘটনা কিন্তু নতুন নয়, আজ থেকে শত শত বছর আগেও মানুষ এই আলো দেখেছে। ১১২৫ সালের বহু প্রাচীন নথি বা ১৪০০ সালের অনেক ছবিতেও এই রহস্যজনক আলোর উল্লেখ পাওয়া গেছে। ১৭৮৭ সালে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্যার উইলিয়াম হার্শেল চাঁদের অন্ধকার অংশে তিনটে লালচে আলোর ঝলক দেখেছিলেন। এই মহাকাশবিজ্ঞানীই ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। এমনকি ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনের নভোচারীরাও চাঁদের দিগন্তে একটি উজ্জ্বল আভা লক্ষ্য করেন। এখন পর্যন্ত, ৩,০০০ এরও বেশি টিএলপি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
চাঁদের কিন্তু আমাদের পৃথিবীর মতো কোনও বায়ুমণ্ডল নেই। ফলে পৃথিবীর মতো নিজের শরীরকে রক্ষা করতে পারে না আমাদের ছোট্ট উপগ্রহ। মহাকাশের ছোট ছোট পাথর বা উল্কা যখন ঘণ্টায় লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার বেগে চাঁদের মাটিতে এসে আছড়ে পড়ে, তখন প্রচণ্ড তাপ আর আলোর ঝলক তৈরি হয়। এই ঝলকগুলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বেশিরভাগ টিএলপি এই কারণেই ঘটে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি অর্থাৎ ESA-এর ‘নেলিয়োটা’ (NELIOTA) প্রকল্পের মতো অত্যাধুনিক পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা এই ধরনের শত শত আঘাতের ঝলক ক্যামেরায় ধরেছেন।
চাঁদের বুকে এহেন মহাজাগতিক ঘটনার নেপথ্যে আর একটা কারণ বেশ অবাক করার মতো। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, চাঁদের ভেতরের ফাটল বা গর্ত দিয়ে কখনও কখনও গ্যাস বাইরে বেরিয়ে আসে। এই গ্যাস যখন সূর্যের আলোয় আসে, তখন তা চকচক করে বা মৃদু আলো দেয়। অনেকটা আগ্নেয়গিরির গ্যাসের মতো, কিন্তু অনেক শান্তভাবে। এই আলো বেশিক্ষণ থাকতে পারে, হয়তো কয়েক ঘণ্টা ধরেও দেখা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের ভূত্বকের ফাটল বা বড় বড় গর্ত, যেমন ‘অ্যারিস্টার্কাস’ বা ‘প্লেটো’ ক্রেটারের আশেপাশে, মাঝে মাঝে আটকে থাকা গ্যাস বেরিয়ে আসে। এই গ্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রেডন-আর্গন। এই গ্যাস মহাকাশে বেরিয়ে আসার পর সূর্যের আলোয় চকচক করে যা পৃথিবী থেকে লালচে, হলুদ বা হালকা মেঘের মতো আভা হিসাবে দেখা যায়। এই ধরনের আভা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যদি এই গ্যাস নির্গমন সত্যি হয়, তবে এটি প্রমাণ করে যে চাঁদকে আমরা যতটা নিথর মনে করি, সে আসলে ততটা নিথর নয়।
মোটকথা, এই আলো বা ঝলকগুলো আমাদের গ্রহের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী চাঁদ সম্পর্কে অনেক কিছু জানায়— যেমন চাঁদের ভূ-তত্ত্ব, তার ভিতরের কার্যকলাপ এবং মহাকাশ থেকে তার উপর কী ধরনের আঘাত আসছে! এখনও চাঁদের সব রহস্য পুরোপুরি ভেদ হয়নি। বিজ্ঞানীরা আধুনিক টেলিস্কোপ আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। ভবিষ্যতে চাঁদে বসতি স্থাপন মানুষের জন্য কতটা নিরাপদ হবে, সে বিষয়ে আভাস পেতে এই গবেষণা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এখনও বেশ কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, এসব TLP-এর আড়ালে বেশ কিছু তীব্র আলো দেখা যাচ্ছে যার কারণ স্পষ্ট নয়। তাহলে কি সত্যিই এলিয়ানরা টর্চ জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চাঁদের ভূপৃষ্ঠে? কী মনে হয় আপনার?