খোঁজ পাওয়া গেল অষ্টম মহাদেশের। নাম ‘জিল্যান্ডিয়া’। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকার পরে, ভূবিজ্ঞানীদের একটি দল আবিষ্কার করেছে বিশ্বের অষ্টম মহাদেশ। 18.9 লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই মহাদেশের 94 শতাংশ সমুদ্রের নিচে। আর 6 শতাংশ নিউজিল্যান্ডের চারপাশের দ্বীপ নিয়ে গঠিত। আজকের নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড থেকে শুরু করে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, বল’স পিরামিড কিংবা নিউ ক্যালেডোনিয়া এই সবটা নিয়েই তৈরি হয়েছে অস্টম মহাদেশ জিল্যান্ডিয়া। অর্থাৎ টুকরো টুকরো অংশ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই নতুন মহাদেশ।
কীভাবে পাওয়া গেল জিল্যান্ডিয়াকে?
1642 সালে এটি প্রথম আবেল তাসমান নামের এক ডাচ নাবিক আবিষ্কার করেছিলেন। তবে তিনি সঠিকভাবে এই জায়গাটি খুঁজে পাননি। তাসমান একটি মহাদেশ খুঁজে পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেটা ছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে খোঁজ থামেনি। তারপরে অনেক ভূবিজ্ঞানী এক বিভিন্ন খোঁজ দিয়েছিলেন। এর পরে, বিজ্ঞানীরা 2017 সালে জিল্যান্ডিয়া মহাদেশ আবিষ্কার করেন। প্রায় 375 বছর অনুসন্ধানের পরে, বিজ্ঞানীরা অবশেষে সাফল্য পেয়েছেন।
জ্বালানির যোগান দেবে অস্টম মহাদেশ:
ভূবিজ্ঞানীদের দাবি, এই নতুন মহাদেশে রয়েছে বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি। আর তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে, ভবিষ্যতে তা অন্যান্য মহাদেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারবে।
মানচিত্র তৈরি করেছেন ভূবিজ্ঞানীরা:
কয়েক দিন আগে, ভূবিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল টেকটোনিক্স জার্নালে জিল্যান্ডিয়ার একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। সমুদ্রতল থেকে প্রাপ্ত পাথরের নমুনা নিয়ে গবেষণা করে এই মহাদেশের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের মতে, এই মহাদেশটি গন্ডোয়ানা নামে একটি সুপারমহাদেশের অংশ ছিল। জিল্যান্ডিয়া প্রায় 105 মিলিয়ন বছর আগে গন্ডোয়ানা থেকে পৃথক হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের দাবি, 55 কোটি বছর আগে এই মহাদেশটি গন্ডোয়ানা নামে একটি মহাদেশের অংশ ছিল। আর 13 কোটি বছর আগে তা অ্যান্টার্কটিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া ও জিল্যান্ডিয়া আলাদা হয়ে যায়। যদিও তখনও পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ও জিল্যান্ডিয়া একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় ছিল। শেষমেশ প্রায় 6 থেকে 8 কোটি বছর আগে অস্ট্রেলিয়া জিল্যান্ডিয়া থেকে আলাদা হয়ে যায়। আর তখনই জিল্যান্ডিয়া সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করে। তারপর এই সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে থাকা মহাদেশের খোঁজ পান ভূবিজ্ঞানীরা।