Water on Mars: মঙ্গলগ্রহের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে গোপন জলের রিজার্ভারের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

আসলে লালগ্রহের মাটির একদম সর্বোচ্চ স্তরে হাইড্রোজেনের ঘনত্ব পর্যবেক্ষণের পরই Trace Gas Orbiter (TGO)- র FREND (Fine Resolution Epithermal Neutron Detector) জলের সন্ধান করেছিল।

Water on Mars: মঙ্গলগ্রহের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে গোপন জলের রিজার্ভারের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা
ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি টুইটারে এই ছবি শেয়ার করেছে।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 16, 2021 | 9:33 PM

জলের হদিশ পাওয়া গিয়েছে মঙ্গলগ্রহে! শোনা গিয়েছে, ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির এক্সোমার্স লালগ্রহের গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে গোপন রিজার্ভারের খোঁজ পেয়েছে। মঙ্গলগ্রহে রয়েছে সুবিশাল ক্যানিয়ন সিস্টেম, যার নাম Valles Marineris। একে পৃথিবীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তবে পৃথিবীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন মঙ্গলগ্রহের Valles Marineris- এর তুলনায় ১০ গুণ ছোট এবং ৫ গুণ অগভীর। মঙ্গলগ্রহের ক্যানিয়ন সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় ক্যানিয়ন এবং লালগ্রহের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গঠন।

বিজ্ঞানীদের অনুমান এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্যে জল সঞ্চিত ছিল। মাটির নীচে গোপনে সঞ্চিত ছিল এই জল। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং Roscosmos- এর সহযোগী ExoMars Trace Gas Orbiter (TGO) মঙ্গলগ্রহের ওই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অন্তঃস্থলে বেশ ভাল পরিমাণ জলের সন্ধান পেয়েছে।

আসলে লালগ্রহের মাটির একদম সর্বোচ্চ স্তরে হাইড্রোজেনের ঘনত্ব পর্যবেক্ষণের পরই Trace Gas Orbiter (TGO)- র FREND (Fine Resolution Epithermal Neutron Detector) জলের সন্ধান করেছিল। আর তার  ফলেই ওই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্যে জলের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ হাইড্রোজেনের ঘনত্ব সবসময়ই জলের উপস্থিতি জানান দেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলগ্রহে জল রয়েছে কিন্তু মেরু অঞ্চলে অর্থাৎ পোলার রিজিয়নে এবং ফ্রোজেন বা বরফ আকারে, এতদিন এমনটাই জানা গিয়েছিল। সেই সঙ্গে এই তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছিল যে মঙ্গলগ্রহের নিম্ন অক্ষাংশে এবং পৃষ্ঠদেশের কাছাকাছি অঞ্চলে জলের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তবে এবার জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে অন্য জায়গায়।

এই গবেষণার মূল প্রবক্তা ইগর মিত্রোফ্যানোভ জানিয়েছেন, TGO- র সাহায্যে মঙ্গলগ্রহের ধুলোময় পৃষ্ঠদেশের নীচে এক মিটার পর্যন্ত দেখা সম্ভব এবং মঙ্গলগ্রহের নীচে ঠিক কী চলছে সেটাই বোঝার চেষ্টা করা যায়। আর সেই পর্যবেক্ষণের সময়েই আবিষ্কার হয়েছে জল সমৃদ্ধ মরুদ্যান, যা এর আগে কোনও যন্ত্রাংশের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে আবার Trace Gas Orbiter (TGO)- র FREND (Fine Resolution Epithermal Neutron Detector)- এর পর্যবেক্ষণের ফলে গবেষকরা বিশ্বাস করছেন যে, মঙ্গলগ্রহের ওই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে থাকা প্রচুর পরিমাণ হাইড্রোজেন জলের অণুতে আবদ্ধ রয়েছে। এর অর্থ হল জল এই অংশের পৃষ্ঠদেশের কাছাকাছি উপাদানের (region’s near-surface material) প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি করেছে।

২০১৮ সালের মে মাস থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত FREND (Fine Resolution Epithermal Neutron Detector)- এর পর্যবেক্ষণ নিয়ে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারপর তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মঙ্গলগ্রহের ক্যানিয়নে পাওয়া জলের সঙ্গে পৃথিবীর পার্মাফ্রস্ট এলাকার সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব। এই পার্মাফ্রস্ট অঞ্চলে আসলে শুষ্ক মাটির নীচে স্থায়ীভাবে থাকে আইস ওয়াটার বা বরফ আকারে জল থাকে এই অংশে। তবে এই ওয়াটার আইস বিষয়টি লালগ্রহের নিম্ন অক্ষাংশে দেখা যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ এই অঞ্চল এতটাই উষ্ণ যে অতিরিক্ত তাপের কারণে ওয়াটার মলিকিউল বা জলের অণুগুলি বাষ্পীভূত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লালগ্রহের ভ্যালেস মেরিনারিসে জলের একটি জলাধার আবিষ্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ মঙ্গলগ্রহের নিম্ন অক্ষাংশে আগামী দিনে অনুসন্ধানের জন্য অনেকগুলি মিশন হবে।

আরও পড়ুন- NASA’s Parker Probe: সূর্যের করোনাকে ছুঁয়ে ফেলেছে নাসার মহাকাশযান পার্কার, ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী মানবজাতি