
নতুন বছরে স্মার্টফোন কেনার পরিকল্পনা থাকলে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। কারণ, আগামী দিনে স্মার্টফোনের দাম প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। অর্থাৎ, আজ যে ফোনের দাম ২০ হাজার টাকা, অল্প সময়ের মধ্যেই তার দাম পৌঁছতে পারে প্রায় ৩০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
ভারতের স্মার্টফোন বাজার নিয়ে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিজনেস রিসার্চ করছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই এই তথ্য জানা গিয়েছে। মূল কারণ, বিশ্ববাজারে চিপের জোগান কমতে শুরু করেছে। তার জেরে চিপের দাম প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি প্রিমিয়াম স্মার্টফোন তৈরির মোট খরচের প্রায় ২০ শতাংশই যায় চিপের পিছনে। কমদামী ফোনের ক্ষেত্রে এই অনুপাত আরও বেশি। কারণ, সেখানে প্রিমিয়াম ফোনের মতো অতিরিক্ত ফিচারের খরচ থাকে না। ফলে, ম্যানুফ্যাকচারিং কস্ট যদি ২০ শতাংশ বাড়ে, তাহলে সেটি পাইকারি ও খুচরো বাজার ঘুরে শেষ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই সমস্যা শুধু স্মার্টফোনেই সীমাবদ্ধ নয়। চিপের ঘাটতি হলে গাড়ি, কম্পিউটার, এলইডি টিভি সহ চিপ নির্ভর সব পণ্যের দামই বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বাজার বিশ্লেষকেরা।
প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ করে চিপের জোগান কমছে কেন? এর পিছনে রয়েছে চিনের ভূমিকা। চিপ তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় জার্মেনিয়াম, সিলিকনের মতো সেমি-কন্ডাক্টর, যেগুলির বিশ্ববাজারে বড় অংশের উপর চিনের একচেটিয়া দখল রয়েছে। বেশি মুনাফার লক্ষ্যে চিন এই বাজারকে নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করছে বলেই অভিযোগ। এর ফলেই সেমি-কন্ডাক্টরের জোগানে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, কমছে চিপ উৎপাদন এবং বাড়ছে দাম।
তবে এই সংকটের সমাধান যে একেবারে নেই, তা নয়। আশার কথা, ভারত সরকার এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে উদ্যোগী হয়েছে। যদিও স্বল্পমেয়াদে খুব বেশি সুফল মিলবে না, তবু দীর্ঘমেয়াদে দেশ এই পরিস্থিতি থেকে লাভবান হবে বলেই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সব মিলিয়ে, বাজার পরিস্থিতি বলছে, স্মার্টফোন বা চিপ-নির্ভর কোনও পণ্য কেনার পরিকল্পনা থাকলে, এখনই কেনাই সবচেয়ে নিরাপদ।