Uttar Dinajpur News: ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে ঘুরছেন জীবিত বৃদ্ধ!
"কাদম্বিনী মরিয়াই প্রমান করিলো সে মরে নাই" করনদিঘির আব্দুলের কাহিনী যেনো রবিঠাকুরের বিখ্যাত ছোটো গল্প জীবিত ও মৃত' র সেই লাইনগুলোকেই মনে করাচ্ছে বার বার। নিজের মৃত্যুর সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে প্রশাসনের দরজায় দরজায় দরজায় নিজেকে জীবিত প্রমানের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধ। ঘটনা করনদিঘি ব্লকের।
“কাদম্বিনী মরিয়াই প্রমান করিলো সে মরে নাই” করনদিঘির আব্দুলের কাহিনী যেনো রবিঠাকুরের বিখ্যাত ছোটো গল্প জীবিত ও মৃত’ র সেই লাইনগুলোকেই মনে করাচ্ছে বার বার। নিজের মৃত্যুর সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে প্রশাসনের দরজায় দরজায় দরজায় নিজেকে জীবিত প্রমানের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধ। ঘটনা করনদিঘি ব্লকের। অভিযোগ বৃদ্ধকে মৃত বানিয়েছে তার নিজের ছয় ছেলে। বাবার জমি নিজেদের নামে রেকর্ড করতেই এই চক্রান্ত বলে অভিযোগ৷
তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে বলে দাবী বৃদ্ধের৷ বৃদ্ধের আরও অভিযোগ, ডেথ সার্টিফিকেট তৈরিতে তার নিজের ছেলেদের সাথে যোগসাজশে আছেন তার খুড়তুতো ভাই তথা তৎকালীন স্থানীয় প্রধান মহঃ বাদিরুদ্দিন। তবে তৎকালীন প্রধানের দাবী ওয়ারিশ ও মৃত্যুর সার্টিফিকেট নকল করেছে কেউ, ওইসব সার্টিফিকেট ইস্যু করেনি পঞ্চায়েত। ওই সব কাগজ নকল বলে দাবী করার পাশাপাশি ওই কাগজ নকল বলে তার দাবী। তবে নথি নকল হোক বা আসল, ওই সব কাগজ দেখিয়ে বৃদ্ধের ৭৫ শতক জমির মালিকানার রেকর্ড পরিবর্তন করা হয়েছিল ছেলেদের নামে তাও স্বীকার করেছেন প্রধান। যদিও ছেলেদের দাবী তারা নির্দোষ, সবটাই কাকাদের ষড়যন্ত্র। কিন্তু যাই হোক না কেনও বুধবার দুপুরেও ওই বৃদ্ধকে দেখা গেল করনদিঘি ব্লক অফিস ও করনদিঘি থানায় ঘুরে বেড়াতে৷ তার দাবী সরকারি তাকে জীবিত বলে দিক প্রশাসন, ফিরিয়ে দিক তার জমির মালিকানা।
“মৃত” থুড়ি, জীবিত ওই বৃদ্ধের নাম আব্দুল কালাম, বাড়ি করনদিঘি ব্লকের লাহুতাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাবধান এলাকায়। এই মুহুর্তে গৃহহীন ওই বৃদ্ধ তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে রাত কাটাচ্ছেন৷
আর দিনের বেলায় নিজেকে জীবিত প্রমানিত করতে ঘুরছেন প্রশাসনের দরজায় দরজায়। বৃদ্ধের স্ত্রীর অভিযোগ যারা জীবিত বাবার মৃত্যুর প্রমানপত্র বানিয়ে ফেলতে পারে, তারা ওই কাগজে কলমে মৃত ব্যক্তিকে যখন তখন মেরে ফেলতে পারে৷ তাই স্বামীকে জীবিত প্রমানের ব্যবস্থা গ্রহনের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, করনদিঘি থানার লাহুতারা-১, গ্রাম পঞ্চায়েতের সাবধানের বাসিন্দা, পেশায় কৃষক আব্দুল কালামের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আর তারপর থেকেই প্রথম পক্ষের ছয় ছেলের সাথে তার জমি নিয়ে বিবাদ ও পারিবারিক অশান্তি বাড়ে।নিজস্ব বসত ভিটার জমির প্রায় ২০ শতক জায়গা ছেলেদের দিয়ে ও চার শতক তার ছোটভাইকে দিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে তিনি আগে অন্যত্র চলে যান। এরপর প্রায় মাস পাচেক বাদে ফিরে তার নিজের বাকি ৭৫ শতক জমি বিক্রি করতে গেলে জমির ক্রেতাদের মারফৎ জানতে পারেন যে তার প্রথম পক্ষের নিজের ছয় ছেলে তাদের বাবা অর্থাৎ আব্দুল কালামের ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে তার জমি নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে। করে নিয়েছেন সরকারী রেকর্ড ও বলে দাবী তাদের৷আর এরপর নিজের ডেথ সার্টিফিকেটের প্রতিলিপি নিজের হাতে পেয়ে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানদের নিয়ে ভিটেমাটি হারা হয়ে কার্যত ভবঘুরের মত অবস্থা হয়েছে তার৷ করনদিঘি থানা ও ব্লক প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইতিমধ্যেই। কিন্তু এখনো কার্যত সরকারিভাবে নিজেকে জীবিত প্রমান করতে পারবেন কিনা সেই চিন্তাতেই দিশেহারা বৃদ্ধ এখনো প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন।