Atin Ghosh: লিফটে আধঘণ্টা আটকে ডেপুটি মেয়র!
Deputy Mayor of Kolkata: ডেপুটি মেয়র সহ মোট ১২-১৪ জন সরকারি হাসপাতালের ভিতর লিফটের মধ্যে ২৫-৩০ মিনিট আটকে থাকলেন। এমনকি অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ায় কার্যত অচৈতন্য হয়ে পড়লেন ডেপুটি মেয়র। কম বেশি অসুস্থ হলেন বাকিরাও।
বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের লিফটের ত্রুটিগত সমস্যা নিয়ে বারবার রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা অভিযোগ করেছেন। কোথাও লিফট চালু নেই। কোথাও আবার লিফট মাঝপথে আটকে গিয়েছে রোগীকে নিয়েই। এবার সেই সমস্যার খোদ সাক্ষী থাকলেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ অতীন ঘোষ।
তিনি সহ মোট ১২-১৪ জন সরকারি হাসপাতালের ভিতর লিফটের মধ্যে ২৫-৩০ মিনিট আটকে থাকলেন। এমনকি অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ায় কার্যত অচৈতন্য হয়ে পড়লেন ডেপুটি মেয়র। কম বেশি অসুস্থ হলেন বাকিরাও। শুক্রবার কলকাতা পৌরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে এমনই বিপত্তির শিকার হলেন ডেপুটি মেয়র। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়াল যে হাসপাতালের তরফে দমকলকে ডাকতে হয়। যদিও দমকলের আধিকারিকরা আসার আগে হাসপাতালে স্থানীয় কর্মীদের অদম্য চেষ্টায় লিফটের গেট খুলে আটকে পড়া প্রত্যেককে উদ্ধার করতে হয়।
এরপর অতীন ঘোষ সহ বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসকরা শারীরিক পরীক্ষা করে দেখেন। হাসপাতালে তরফে জানানো হয়েছে, লিফটের যা লোক বহনের ক্ষমতা তার তুলনায় বেশি হয়ে যায়। যে কারণেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় লিফটে। তখনই এই বিপত্তি ঘটে যায়। হাসপাতালে পাঁচতলা থেকে তিন তলা হয়ে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নামছিলেন তখন অতীন বাবুরা। ফার্স্ট ফ্লোর এবং গ্রাউন্ড ফ্লোরের মাঝখানে আটকে যায় লিফট।
লিফটের ভিতরে তখন অতীন বাবু ছাড়াও ছিলেন কলকাতা পৌরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ ডক্টর দেবাশিস বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক বিশ্বজিৎ রায় সহ মোট ১৪ জন। অতীন ঘোষ পরে শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ার পর বলেন, ‘ঈশ্বরের কৃপায় কোনভাবে বেঁচে এসেছেন। নইলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছিল। প্রায় আধ ঘন্টার কাছাকাছি আটকে থাকায় অক্সিজেনের সমস্যা হচ্ছিল। আমার রক্ত চাপের সমস্যা হয়। বাকিরা ও কমবেশি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।’ হাসপাতালে সুপার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অতিরিক্ত লোক বহন করার জন্যই লিফটে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। প্রত্যেকেই আটকে পড়েছিলেন তাঁরা।’
যদিও এই ঘটনা আগে হাসপাতালে বিভিন্ন অংশ ডেঙ্গির লার্ভা জন্মাচ্ছে কিনা তা পরিদর্শন করেন ডেপুটি মেয়র। হাসপাতালে চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করলেও হাসপাতালের সীমানার বাইরে থাকা একাধিক নির্মীয়মান বহুতল এবং আবাসন থেকে আবর্জনা এবং পরিত্যাক্ত সামগ্রী জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলা হয় হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির জল জমে থেকে মশার লার্ভা জন্ম দিয়েছে। একাধিক পরিত্যক্ত পাত্র থেকে মশার ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা পাওয়া যায়।
এদিন ডেপুটি মেয়র হাসপাতাল সংলগ্ন বিভিন্ন অংশ ঘুরে মাইকিং করেন। কলকাতা পুরসভার ৭ নম্বর বরোর অন্তর্গত ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে ডিঙ্গির অবস্থা সব থেকে ভয়াবহ। আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। অতীন ঘোষ এই ওয়ার্ডে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের কারণ হিসেবে মানুষের অসচেতনতাকেই দায়ী করেন। তিনি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, অভিযুক্ত নির্মীয়মান বহুতল এবং বিভিন্ন আবাসনকে এই ধরনের আবর্জনা ফেলে ডেঙ্গির লার্ভার আতর ঘর হিসেবে তৈরি করার জন্য পুরসভার নোটিশ দিতে।