Israel: ইজরায়েলের পরের টার্গেট কি ইরান?
হিজবুল্লা চিফ লেবাননের রাজধানীতে ছিলেন। লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে আইডিএফ। হিজবুল্লা নাসারাল্লার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। সংবাদসংস্থা এপি টপ হিজবুল্লা সোর্সকে কোট করে লিখেছে যে শুক্রবার রাত থেকেই নাসারাল্লার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
শুক্রবার গভীর রাত থেকেই ইজরায়েলের নানা প্রান্তে আরম্ভ হয়ে যায় সেলিব্রেশন। কারণ, খবরটা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল। আজ অফিসিয়ালি ইজরায়েলি সেনা এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছে, Hassan Nasrallah will no longer be able to terrorize the world. Hassan Nasrallah is dead. নিহত হয়েছেন নাসারাল্লার সঙ্গে থাকা তাঁর মেয়ে জায়নাব। শুক্রবার বিকেল থেকে বেরুটে এয়ার স্ট্রাইকের তীব্রতা বাড়ায় আইডিএফ।
সেইসময় হিজবুল্লা চিফ লেবাননের রাজধানীতে ছিলেন। লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে আইডিএফ। হিজবুল্লা নাসারাল্লার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। সংবাদসংস্থা এপি টপ হিজবুল্লা সোর্সকে কোট করে লিখেছে যে শুক্রবার রাত থেকেই নাসারাল্লার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। দেখুন, হাসান নাসারাল্লার নিহত হওয়াকে যুদ্ধের এক বছরের মাথায় ইজরায়েলের বড় সাফল্য বলতে হবে। হামাস চিফ ইসমাইল হানিয়ের পর এবার হিজবুল্লা চিফকেও কোট আনকোট এলিমিনেট করে দিতে পারল ইজরায়েলি সেনা। আপনাদের বলে রাখি, নাসারাল্লার কথাতেই কার্যত লেবানন চলতো। তাঁর কোনও পাবলিক অফিস ছিল না। তিনি টেলিভিশন অ্যাড্রেসে ডিকটাম জারি করতেন। মধ্য ষাটের এই শিয়া নেতা সাতের দশকে লেবানিজ সিভিল ওয়ারে অংশ নেন। ১৯৮৩ সালে ইরানের মদতে হিজবুল্লা তৈরি হওয়ার সময় তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তারপর ১৯৯২ সাল থেকে এক টানা ৩২ বছর সংগঠনের প্রধান। আপাতত শোনা যাচ্ছে হিজবুল্লার রাজনৈতিক শাখার মাথা হাসেম সইফুদ্দিন নাসারাল্লার জায়গায় আসবেন। তবে সবই নির্ভর করছে তেহেরানের সবুজ সঙ্কেতের ওপর।
যদিও, নাসারাল্লা নিহত হওয়ার পরে ইরান নিজেই এখন স্বস্তিতে নেই। রয়টার্স জানিয়েছে হামলার আশঙ্কায় ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা খামেনেইকে তেহরান থেকে কোনও গোপন জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এইবারে প্রশ্ন হল, নাসারাল্লার মৃত্যুর পর হিজবুল্লাকে একেবারে মাটিতে মিশিয়ে দিতে ইজরায়েলি সেনা কি লেবাননে পা রাখবে। গাজার মত লেবাননেও শুরু হয়ে যাবে আইডিএফের গ্রাউন্ড অপারেশন। গত ৬ দিনে লেবাননে ইজরায়েলি এয়ার স্ট্রাইকে নিহতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। ইজরায়েলি সেনা ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছে বসতি এলাকায় বাড়ি, স্কুল, ধর্মীয় স্থান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মিসাইল মজুত করে রেখেছে হিজবুল্লা।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। ফলে একবার গ্রাউন্ড অপারেশন শুরু হলে মৃতের সংখ্যা ৮০০ থেকে কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, তা নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে লেবাননের মাটিতে ইজরায়েলি সেনার সামনে কড়া চ্যালেঞ্জও অপেক্ষা করছে। কারণ, লেবাননে কার্যত হামাসের মতোই আন্ডার গ্রাউন্ড মিসাইল সিটি বানিয়ে ফেলেছে হিজবুল্লা। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমে খবর, মাটির নীচে লুকিয়ে আছে তাদের গেরিলা বাহিনী। মাইলের পর মাইল লম্বা সুড়ঙ্গে মজুত করা আছে সাংঘাতিক সব মিসাইল। হিজবুল্লার এইসব সুড়ঙ্গ এত চওড়া যে এর ভিতরে অনায়াসে ট্যাঙ্ক ও ভারি সামরিক যান চলাচল করতে পারে। সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আচমকা ইজরায়েলি সেনার ওপর হামলা চালিয়ে মুহূর্তের মধ্যে সুড়ঙ্গে ঢুকে হাপিশ হয়ে যেতে পারেন হিজবুল্লা যোদ্ধারা। রিপোর্ট বলছে তারা হামাসের চেয়ে গেরিলা যুদ্ধে বেশি দক্ষ আর গাজার চেয়ে লেবাননে সুড়ঙ্গের পরিকাঠামোও অনেক বেশি উন্নত।