বিদ্রোহে-বিপ্লবে শক্তির উপাসনা, আন্দোলনেই এ বছর অকাল বোধন?

TV9 Bangla Digital | Edited By: Tapasi Dutta

Sep 15, 2024 | 11:02 PM

দুর্গাপুজোর আর এক মাসও বাকি নেই। কিন্তু সেই উৎসবের আবহ স্তিমিত। তার বদলে অন্য এক উৎসব উদযাপিত হচ্ছে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে। শহরজুড়ে আন্দোলনের ঢেউ। শারদীয়ার আগেই তারুণ্যের উৎসব। আরব সাগর থেকে প্যারিস, প্রতিবাদের ঝড়। নতুন প্রজন্মেও একাত্তরের সুর?

Follow Us

শরৎকাল এসেছে। আকাশে পেঁজা তুলোর মত মেঘ জমতে শুরু করেছে। কাশফুলও উঁকি মারছে মাঠঘাটের ধরে। ব্যস্ততা বাড়ছে কুমোরটুলিতে। এই সব কিছুকে একটা শব্দে বাঁধলে, পুজো আসছে। বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব, বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। কিন্তু এখনও দোকান বাজারে ভিড় নেই, পুজোর কেনাকাটা নেই। পুজোর জন্য গড়িয়াহাট, ধর্মতলায় ট্রাফিক জ্যাম নেই! শারদীয়া কোথায়? কোথায় পুজোর গন্ধ? আরজি করে ঘটে যাওয়া নারকীয় ধর্ষণ ও হত্যার রেশ কি ফিরতে দেবে মানুষকে উৎসবে? তিলোত্তমার চোখের কোনে লেগে থাকা রক্তই যেন আজ দেবীর রক্তচক্ষু। সমাজের যে অসুরেরা একটা ফুলের মত মেয়ের এই পরিণতি করলো তাঁদের ভুলে গিয়ে মানুষ প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরতে পারবে? রাতজাগা স্লোগানে পোস্টারে আজ শুধু একটাই আওয়াজ, বিচার, তিলোত্তমার বিচার। সেই বিচারের দাবিতে আন্দোলনই কি এই বাংলার নতুন উৎসব? এই বাংলায় নতুন করে ঘুম ভাঙার গান গাওয়া কি নতুন উৎসব? উত্তর খুঁজবো আজকের নিউজ সিরিজে।

আজকের নিউজ সিরিজে ৪টি পর্ব রয়েছে। আবেগের নাম আরজি কর, পড়শি দেশে প্রতিবাদ, আরব বসন্ত, উজ্জ্বল বিদ্রোহে প্রাণের উৎসব।

আবেগের নাম আরজি কর

মহালয়ার ভোরে বীরেন ভদ্র শোনান মহামায়ার সৃষ্টিরহস্য। অঙ্গপ্রতঙ্গ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দেবী দূর্গা তৈরী হন অসুর দমনে। এবছর কী মহালয়া একটু আগে চলে এল? সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে স্বাস্থ্য ভবন। রাস্তাটুকু হেঁটে গেলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ডাক্তারবাবুদের হাতে মস্তিস্ক। মানে মগজ। একসপ্তাহ আগে লালবাজারের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় তাদের হাতে ছিল শিরদাঁড়া। পুলিশকে শিরদাঁড়া, স্বাস্থ্যকর্তাদের মগজ ডাক্তারবাবুরা কী সিস্টেমের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে নেমেছেন? নাকি দেবতারা যেভাবে দুর্গাকে তৈরী করেছিলেন অঙ্গে-অস্ত্রে সাজিয়ে, তেজে ভরিয়ে সেভাবে সিস্টেমকে তৈরী করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা?

পড়শি দেশে প্রতিবাদ

একটা একটা করে দিন কেটে যাচ্ছে। আজও তদন্ত অগাধ জলে। বিচার-বিচার। মিলবে কি বিচার? নৃশংস খুনের বিচার, টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার বিচার, প্রমান লোপাটের বিচার, প্রশাসনিক ক্ষমতায় আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করার বিচার। পথে শুধুই মুখের ভিড়। তারা সবাই আজ তিলোত্তমার স্বজন। স্বজন এই সমাজে মাথা হেঁট করে বাঁচা সব নারীর। এক নতুন যৌবনের ডাকে পথে গোটা বাংলা। এক নতুন, এক অন্য আগমনীর বার্তা এই যৌবনের রাত জাগা মিছিলে। এই আন্দোলন যেন শাসককে জুজু দেখাচ্ছে। জুজু গণ অভ্যুথানের। ভয় এক ঢেউয়ের। যে ঢেউ উথাল পাথাল করেছে পড়শি বাংলাদেশকে। এমনকি আন্দোলনের ঝাঁঝ যত বেড়েছে শাসকের মুখেও বারবার এসেছে বাংলাদেশের নাম। ফিরে দেখবো, সেই আন্দোলনের উৎসবের ছবি আজকের দ্বিতীয় পর্বে।

আরব বসন্ত

সেপ্টেম্বর ৯। তিলোত্তমার মৃত্যুর ঠিক একমাস। রাজ্য থেকে দেশ জুড়ে আন্দোলনের ঝড়। রাজপথে ধুলো উড়িয়েছে একের পর এক মিছিল। তখনই শাসকের তরফ থেকে এল উৎসবে ফেরার প্রস্তাব। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যখন একথা বলছেন তখন দেবী দুর্গার বোধনেও বাকি ঠিক একমাস। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী। পুরাণমতে ষষ্ঠীর বোধনে দেবীর ঘুম ভাঙ্গানো হয়। সেদিনই শুরু হয় মাতৃশক্তির উদযাপন। তবে এবছর? এবছর দেবীর ঘুম ভেঙেছে অনেক আগেই। যেদিন সমাজের ঘৃণ্য অসুখ আরেক দেবীকে দিয়েছিল যন্ত্রণার ঘুম। তিলোত্তমার মৃত্যুর ঠিক দুইমাস পর যে মহাষষ্ঠীর বোধন, সেদিন উৎসবের চেহারাটা ঠিক কি হবে? সেই উৎসব প্রতিবছরের মত সাজগোজ, প্যান্ডেল হপিং ? নাকি সেই উৎসব হবে ইনকিলাবের উৎসব, যেমনটা ভগৎ সিং বলে গিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, শোষণের চেহারা যতবার চরম সীমায় পৌঁছেছে, বিদ্রোহ হয়ে উঠেছে মানুষের উৎসব। সেই দিনগুলোয় কীভাবে হয়েছে বিদ্রোহের উদযাপন? কীভাবে হয়েছে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে মহাশক্তির বোধন? দেখাব আজকের তৃতীয় পর্বে।

উজ্জ্বল বিদ্রোহে প্রাণের উৎসব

সমাজের বুকে ক্ষত। গভীর ক্ষত। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ক্ষত। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই রাস্তায় নেমেছে কিছু দামাল ছেলেমেয়ে। সমাজকে সাফ করার নেশায় মত্ত তারা। ঝড় জল রোদ মাথায় তারা ঠায় বসে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে। সেখানে স্লোগানে স্লোগানে একটাই দাবি বিচার। এই বেনিয়মের বিচার। ওরা নাছোড়বান্দা। ওদের জেদ, বিদ্রোহের আগুন মনে করাচ্ছে সেই সাতের দশক। সেদিন ছিল তেমনই বিদ্রোহের উৎসব। জীবনের পরোয়া না করে সমাজ বদলের উৎসব। শাসকের গুলি আর বেয়োনেট রেয়াত করেনি সেই বিপ্লবের স্বপ্নে মেতে থাকা যৌবনকে। কিন্তু গানে, কবিতায়, নাটকে,স্লোগানে। কেমন ছিল সময়টা? আজকের সঙ্গে তার কতটা মিল?

শরৎকাল এসেছে। আকাশে পেঁজা তুলোর মত মেঘ জমতে শুরু করেছে। কাশফুলও উঁকি মারছে মাঠঘাটের ধরে। ব্যস্ততা বাড়ছে কুমোরটুলিতে। এই সব কিছুকে একটা শব্দে বাঁধলে, পুজো আসছে। বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব, বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। কিন্তু এখনও দোকান বাজারে ভিড় নেই, পুজোর কেনাকাটা নেই। পুজোর জন্য গড়িয়াহাট, ধর্মতলায় ট্রাফিক জ্যাম নেই! শারদীয়া কোথায়? কোথায় পুজোর গন্ধ? আরজি করে ঘটে যাওয়া নারকীয় ধর্ষণ ও হত্যার রেশ কি ফিরতে দেবে মানুষকে উৎসবে? তিলোত্তমার চোখের কোনে লেগে থাকা রক্তই যেন আজ দেবীর রক্তচক্ষু। সমাজের যে অসুরেরা একটা ফুলের মত মেয়ের এই পরিণতি করলো তাঁদের ভুলে গিয়ে মানুষ প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরতে পারবে? রাতজাগা স্লোগানে পোস্টারে আজ শুধু একটাই আওয়াজ, বিচার, তিলোত্তমার বিচার। সেই বিচারের দাবিতে আন্দোলনই কি এই বাংলার নতুন উৎসব? এই বাংলায় নতুন করে ঘুম ভাঙার গান গাওয়া কি নতুন উৎসব? উত্তর খুঁজবো আজকের নিউজ সিরিজে।

আজকের নিউজ সিরিজে ৪টি পর্ব রয়েছে। আবেগের নাম আরজি কর, পড়শি দেশে প্রতিবাদ, আরব বসন্ত, উজ্জ্বল বিদ্রোহে প্রাণের উৎসব।

আবেগের নাম আরজি কর

মহালয়ার ভোরে বীরেন ভদ্র শোনান মহামায়ার সৃষ্টিরহস্য। অঙ্গপ্রতঙ্গ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দেবী দূর্গা তৈরী হন অসুর দমনে। এবছর কী মহালয়া একটু আগে চলে এল? সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে স্বাস্থ্য ভবন। রাস্তাটুকু হেঁটে গেলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ডাক্তারবাবুদের হাতে মস্তিস্ক। মানে মগজ। একসপ্তাহ আগে লালবাজারের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় তাদের হাতে ছিল শিরদাঁড়া। পুলিশকে শিরদাঁড়া, স্বাস্থ্যকর্তাদের মগজ ডাক্তারবাবুরা কী সিস্টেমের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে নেমেছেন? নাকি দেবতারা যেভাবে দুর্গাকে তৈরী করেছিলেন অঙ্গে-অস্ত্রে সাজিয়ে, তেজে ভরিয়ে সেভাবে সিস্টেমকে তৈরী করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা?

পড়শি দেশে প্রতিবাদ

একটা একটা করে দিন কেটে যাচ্ছে। আজও তদন্ত অগাধ জলে। বিচার-বিচার। মিলবে কি বিচার? নৃশংস খুনের বিচার, টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার বিচার, প্রমান লোপাটের বিচার, প্রশাসনিক ক্ষমতায় আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করার বিচার। পথে শুধুই মুখের ভিড়। তারা সবাই আজ তিলোত্তমার স্বজন। স্বজন এই সমাজে মাথা হেঁট করে বাঁচা সব নারীর। এক নতুন যৌবনের ডাকে পথে গোটা বাংলা। এক নতুন, এক অন্য আগমনীর বার্তা এই যৌবনের রাত জাগা মিছিলে। এই আন্দোলন যেন শাসককে জুজু দেখাচ্ছে। জুজু গণ অভ্যুথানের। ভয় এক ঢেউয়ের। যে ঢেউ উথাল পাথাল করেছে পড়শি বাংলাদেশকে। এমনকি আন্দোলনের ঝাঁঝ যত বেড়েছে শাসকের মুখেও বারবার এসেছে বাংলাদেশের নাম। ফিরে দেখবো, সেই আন্দোলনের উৎসবের ছবি আজকের দ্বিতীয় পর্বে।

আরব বসন্ত

সেপ্টেম্বর ৯। তিলোত্তমার মৃত্যুর ঠিক একমাস। রাজ্য থেকে দেশ জুড়ে আন্দোলনের ঝড়। রাজপথে ধুলো উড়িয়েছে একের পর এক মিছিল। তখনই শাসকের তরফ থেকে এল উৎসবে ফেরার প্রস্তাব। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যখন একথা বলছেন তখন দেবী দুর্গার বোধনেও বাকি ঠিক একমাস। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী। পুরাণমতে ষষ্ঠীর বোধনে দেবীর ঘুম ভাঙ্গানো হয়। সেদিনই শুরু হয় মাতৃশক্তির উদযাপন। তবে এবছর? এবছর দেবীর ঘুম ভেঙেছে অনেক আগেই। যেদিন সমাজের ঘৃণ্য অসুখ আরেক দেবীকে দিয়েছিল যন্ত্রণার ঘুম। তিলোত্তমার মৃত্যুর ঠিক দুইমাস পর যে মহাষষ্ঠীর বোধন, সেদিন উৎসবের চেহারাটা ঠিক কি হবে? সেই উৎসব প্রতিবছরের মত সাজগোজ, প্যান্ডেল হপিং ? নাকি সেই উৎসব হবে ইনকিলাবের উৎসব, যেমনটা ভগৎ সিং বলে গিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, শোষণের চেহারা যতবার চরম সীমায় পৌঁছেছে, বিদ্রোহ হয়ে উঠেছে মানুষের উৎসব। সেই দিনগুলোয় কীভাবে হয়েছে বিদ্রোহের উদযাপন? কীভাবে হয়েছে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে মহাশক্তির বোধন? দেখাব আজকের তৃতীয় পর্বে।

উজ্জ্বল বিদ্রোহে প্রাণের উৎসব

সমাজের বুকে ক্ষত। গভীর ক্ষত। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ক্ষত। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই রাস্তায় নেমেছে কিছু দামাল ছেলেমেয়ে। সমাজকে সাফ করার নেশায় মত্ত তারা। ঝড় জল রোদ মাথায় তারা ঠায় বসে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে। সেখানে স্লোগানে স্লোগানে একটাই দাবি বিচার। এই বেনিয়মের বিচার। ওরা নাছোড়বান্দা। ওদের জেদ, বিদ্রোহের আগুন মনে করাচ্ছে সেই সাতের দশক। সেদিন ছিল তেমনই বিদ্রোহের উৎসব। জীবনের পরোয়া না করে সমাজ বদলের উৎসব। শাসকের গুলি আর বেয়োনেট রেয়াত করেনি সেই বিপ্লবের স্বপ্নে মেতে থাকা যৌবনকে। কিন্তু গানে, কবিতায়, নাটকে,স্লোগানে। কেমন ছিল সময়টা? আজকের সঙ্গে তার কতটা মিল?

Next Video