মালদা: লকডাউন (Lockdown) অমান্য করার অভিযোগে এক কিশোরকে লকআপে তুলে এনে বেধড়ক মারধরের অভিযোগের উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পুলিশের মারে হাত ভেঙে যায় কিশোরের (Teenager boy)। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশচন্দ্রপুরের ভালুকা ফাঁড়ির অন্তর্গত গোবরাঘাট এলাকায়। গুরুতর আহত ওই কিশোর হরিশচন্দ্রপুর (Harishchandrapur) গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি।
প্রহৃত শেখ বেলাল নামের পনেরো বছরের ওই কিশোরের পরিবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে, ছেলেকে নৌকা পাহারা দিতে বলে খেতে গিয়েছিলেন শেখ জামাল। পেশায় মাঝি তিনি। বাবার কথামতোই ঘাটে বসে নৌকা পাহারা দিচ্ছিল বেলাল। সেইসময় টহল দিতে এসে ভালুকা ফাঁড়ির এএসআই তোফাজ্জল হক এসে তাকে ধরে নিয়ে যান। তারপর, থানায় নিয়ে লকআপে ঢুকিয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ সৌমজিৎ মল্লিক বেধড়ক মারধর(Beaten Blue) করেন বলে অভিযোগ। কোনওরকমে থানা থেকে উদ্ধার করে আনা হয় অসুস্থ বেলালকে। রাতে বাড়িতেই তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। অবস্থার ক্রমশ অবনতি হওয়ায় বেলালকে নিয়ে আসা হয় হরিশচন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।
আহত ওই কিশোর বলেছে, “রাতে ঘাট পাহারা দিতে এসেছিলাম।একজন পুলিশ এসে মালিকের কথা জিজ্ঞাসা করে।মালিকের সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দিই। তারপরে আমাকে থানায় তুলে নিয়ে যায়।বেধড়ক মারধর করে ভালুকা ফাঁড়ির ইনচার্জ।সারা শরীর ফুলে গিয়েছে। হাত ভেঙে গিয়েছে।”
মঙ্গলবার রাতেই গোটা ঘটনাটি তৃণমূলের (TMC) জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমানকে জানায় বেলালের পরিবার। জম্মু রহমান বলেন, “জামাল সাহেবের ছেলে ঘাট পাহারা দিচ্ছিল। সেই সময় ভালুকা ফাঁড়ির এএসআই তোফাজ্জল বাবু এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়। লকআপে তাকে বেধড়ক মারধর করে ফাঁড়ি ইনচার্জ সৌমজিৎ মল্লিক। ছেলেটিকে দেখলাম। হাতে ফ্র্যাকচার হয়ে গিয়েছে। খুব দুঃখজনক ঘটনা। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসির সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করব। আলোচনার ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভালুকা ফাঁড়ি ইনচার্জ। এই ঘটনায় ফোনে সৌমজিৎ মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “লকডাউন চলছে। তাই পুলিশের নজরদারি চলছে। লকডাউন অমান্য করলে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। কাউকে ডিটেনশন করলে তারপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। লকআপে আনার প্রশ্ন নেই। আর এইভাবে কাউকে মারধর করা হয়নি। সমগ্র ঘটনাটি খোঁজ নিতে হবে। খোঁজ নিয়েই বলতে পারব।”
ঘটনায়, হরিশচন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন বেলালের বাবা শেখ জামাল। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানিয়েছেন গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: ডেকেও সাড়া পাচ্ছিলেন না স্ত্রী, খুঁজতেই হাসপাতালেই মিলল করোনা আক্রান্ত স্বামীর ঝুলন্ত দেহ!