পূর্ব মেদিনীপুর: ভোটের পর বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী। আর তার কয়েকদিনের মাথায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা অধিকারী পরিবারকে। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছিলেন। চলতি সপ্তাহেই শাহি মন্ত্রকের আরও বাড়তি নিরাপত্তাপক্ষী চলে এসে শান্তিকুঞ্জে। ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেয়েছেন তৃণমূলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। এ বার কিছুটা প্রত্যাশিতভাবেই রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই দুই নেতা।
সূত্রের খবর, সোমবারই রাজ্য সরকারের দেওয়া নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কাঁথি এবং তমলুকের সাংসদ। বিষয়টি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য পুলিশের আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার আধিকারিকদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়। যদিও রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরপরও চাইলে পুলিশের নিরাপত্তা পেতে পারেন ওই দুই সাংসদ। তবে সূত্র জানাচ্ছে, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে নতুন করে সমন্বয়ের অভাব হোক তেমনটা চাইছেন না শিশির-দিব্যেন্দু। সেই কারণেই রাজ্যের দেওয়া নিরাপত্তা ত্যাগ করার বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন তাঁরা।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, শিশির বা দিব্যেন্দু কেউই এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে বিজেপিতে যোগ দেননি, বা তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়েননি। শিশির বিজেপির মঞ্চে দু-একবার শুভেন্দুর সঙ্গে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বিজেপির সদস্যতা গ্রহণ করেননি। ভোটের আগে দিব্যেন্দুও নরেন্দ্র মোদীর সভামঞ্চে যাবেন যাবেন করেও গাড়ির চাকা সেদিকে ঘোরাননি। তা সত্ত্বেও ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তাঁদের। ফলে এই দুই নেতার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ধন্দ বজায় রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে।
আরও পড়ুন: দমবন্ধ পরিবেশ পদ্ম বনেও! নাকি ‘বসন্তের কোকিল’ চিনতে ভুল করলেন মোদী-শাহরা
তবে পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ভোটের ফলাফল অন্যরকম হলে এই ছবিটা বদলে যেতে পারত। তখন সক্রিয়ভাবেই গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে মাঠে নামতেন অধিকারী পরিবারের এই দুই সদস্য। কিন্তু এখন যেহেতু বিজেপি ব্যাকফুটে, তাই বিশেষ করে দিব্যেন্দু বড় কোনও পদক্ষেপ করছেন না। তাতে শ্যাম ও কূল দুই-ই হারাতে পারেন এমন আশঙ্কা রয়েছে। কেননা বিজেপিতে গেলে বড় কোনও পদ পাওয়ার আশা তো আর নেই-ই। উল্টে হারাতে হতে পারে সাংসদ পদও।
উল্টোদিকে, শিশিরবাবু অনেকটাই ঝাড়া হাত-পা। নিজের রাজনৈতিক জীবনের সায়াহ্নে তিনি। ফলে তাঁর নতুন করে কিছু পাওয়ার বা হারানোর নেই। যে কারণে ভোটের আগে থেকেই শুভেন্দুর প্রতি খোলা সমর্থন দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। পক্ষান্তরে, দিব্যেন্দুর রাজনৈতিক কেরিয়ার এখনও শেষ হয়ে যায়নি। যে কারণে খুব মেপে পা ফেলতে চাইছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বুধেও শুনানি হবে না হাইকোর্টে, রাত পোহালেই নারদ মামলার বল সুপ্রিম কোর্টে