দমবন্ধ পরিবেশ পদ্ম বনেও! নাকি ‘বসন্তের কোকিল’ চিনতে ভুল করলেন মোদী-শাহরা

'কোকিলদের' মধ্যে কেউ কেউ অন্য সুরে গাইতে শুরু করেছেন। আরও কয়েকজন আগামী সময় অন্য সুরে গাইবেন, তা আন্দাজ করে নেওয়াই যায়।

দমবন্ধ পরিবেশ পদ্ম বনেও! নাকি 'বসন্তের কোকিল' চিনতে ভুল করলেন মোদী-শাহরা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 24, 2021 | 9:19 PM

কলকাতা: কত ভোট এল, কত ভোট গেল। কিন্তু অন্য কোনও নির্বাচনের আগে একুশের মতো দল বদলের খেলা বাঙালি দেখেছে বলে মনে পড়ে না। এ রাজ্যের শাসকদলের একটা বড় অংশও বুঝি ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসছে বিজেপিই। যে কারণে বড় পদ, হেভিওয়েট মন্ত্রিত্ব ছেড়ে অনেকেই নাম লিখিয়েছিলেন পদ্মশিবিরে। কিন্তু যে খাতে জল বইছিল, ভোট মিটতেই এখন উল্টো স্রোত বইতে শুরু করেছে। ছোট ফুল ছেড়ে বড় ফুলে চলে যাওয়া নেতাদের কেউ কেউ ঘর ওয়াপসির জন্য আকুল। বিড়ম্বনায় গেরুয়া শিবিরও।

বঙ্গ বিজেপি নেতারা এখন বলছেন, “যাঁরা তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন, তাঁরা বসন্তের কোকিল। ক্ষমতালোভী। মতাদর্শ বলে কিছু নেই।” ঠিক এখানেই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য, যখন তাঁদের ঝাঁকে ঝাঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল, তখন কি নীতি আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করা হয়নি? বিজেপির নেতাদের কথাকে ধার করেই সওয়াল তোলা যায়, তাহলে কি কোথাও গিয়ে ‘কোকিল’ চিনতে ভুল করেছিল মুরলীধর সেন লেন? ইতিমধ্যেই সেই ‘কোকিলদের’ মধ্যে কেউ কেউ অন্য সুরে গাইতে শুরু করেছেন। আরও কয়েকজন আগামী সময় অন্য সুরে গাইবেন, তা আন্দাজ করে নেওয়াই যায়।

এই ‘বেসুরো কোকিলদের’ জন্যই বঙ্গ বিজেপিতে উপক্ষিত হতে হয়েছিল এমন কিছু নেতাদের, যারা কোনও প্রত্যাশা ছাড়াই গত কয়েক দশক ধরে গেরুয়া ঝাণ্ডা বয়ে চলেছেন। প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় থেকে শুরু করে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ আদি বিজেপি নেতা রাজকমল পাঠকদের মতো ব্যক্তিরা প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করেছেন। অনেকেই প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না, কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় তুলোধোনা করছেন ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা গোবলয়ের নেতাদের। সব মিলিয়ে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে এখন ক্রোধ, ক্ষোভ, অভিমানের ঢল নেমেছে বলা যায়।

আরও পড়ুন: ‘আমফানের থেকেও বেশি হবে ঝড়’, সতর্কতায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, জানালেন মমতা

এ রাজ্যে ভোটে লড়তে নামার আগেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা একটা মস্ত বড় ভুল চাল খেলে দেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, তৃণমূল থেকে আসা নেতা-কর্মীদের দলে জায়গা দিয়ে, টিকিট দিয়ে ক্ষমতা দখল করা যাবে। অমিত শাহের স্ট্র্যাটেজি ছিল স্পষ্ট। যার জেতার সম্ভবনা বেশি, তাঁকেই দলে নিয়ে টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা যে এমনভাবে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে, তা কল্পনাতীত ছিল ভোট রাজনীতির অধুনা ‘চাণক্যের’ কাছে। ফলে যেটা প্রত্যাশিত ছিল তাই হচ্ছে। ক্ষোভ উগরে দিতে আর রাখঢাক করছেন না বহু বিজেপি নেতা। পাশাপাশি ভোটের পর দলীয় কর্মীরা যখন আক্রান্ত, তখন কেন্দ্রীয় নেতারা ফিরে যাওয়ার ফলেও বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

ভোটের আগে এক গুচ্ছ নেতাদের রীতিমতো জামাই আদর চাটার্ড বিমানের ব্যবস্থা করে অমিত শাহের হাত ধরিয়ে দলে যোগ দেওয়ানো হয়। বিজেপির অন্দরের খবর, তৃণমূল থেকে বানের জলের মতো লোক নেওয়ার প্রশ্নে রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন অংশের আপত্তি ছিল। কিন্তু, কেন্দ্রীয় নেতাদের সায় থাকার কারণেই তাঁরা মুখ খুলতে পারেননি।

আরও পড়ুন: মুখ্যসচিবের পদে মেয়াদ বাড়ল আলাপনের, মমতার আবেদনে সাড়া মোদীর