আলিপুরদুয়ার: কথায় বলে না ইচ্ছা থাকলে কী না হয়! এই গল্পটা তেমননি। অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর জেদের কাছে বাধা যে তুচ্ছ তা বলার অপেক্ষা রাখে। একদিকে অভাবের সংসার অন্যদিকে দুই ছোট বোনের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা। তারমধ্যেও নিজের লক্ষে স্থির থেকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এই মেয়ে। ডাব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ফল করে আর শীঘ্রই অফিসার পদে কাজে যোগ দিতে চলেছেন তিনি।
কাকলি মণ্ডল। আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের চাপড়েরপাড় ২ গ্রামপঞ্চায়েতের নোনাই গ্রামের বাসিন্দা। ডব্লিউবিসিএস সি গ্রুপে ৫৯ র্যাঙ করেছেন তিনি। শীঘ্রই যোগ দেবেন কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার পদে। কাকলির এই সাফল্যে খুশি গোটা গ্রাম। তবে এই পর্যায়ে পৌঁছানোর রাস্তা এতটাও সহজ ছিল না।
কাকলি মণ্ডল বলেন, “এটা একদিনের পরিশ্রম নয়, দীর্ঘ বহু বছরের পরিশ্রম। আমি অনেক ছোটবেলা থেকে আমার গ্রামের, চারপাশের এবং পরিবারের পরিস্থিতি দেখে বড় হয়েছি। তখন থেকেই আমি মনের মধ্যে স্থির করে নিয়েছিলাম আমায় বড় হতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। সেই কারণে ঠিক করি যতরকম কষ্ট আসুক না কেন আমি জয় করব। তাই পড়াশোনা করে গিয়েছি।”
কাকলিদেবীর বাবা খুশিগোপাল মণ্ডল। খুবই অসুস্থ তিনি। দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী বিছানায়। ফলত পাঁচ জনের সংসারের ভার কাকলির উপর। শুধু তাই নয় সঙ্গে রয়েছে লেখা পড়াশোনা দুই বোন ও নিজের লেখাপড়ার খরচ মেটানোর তাগিদ। কিন্তু এই সকল প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন এই মেয়ে। কাকলি আলিপুরদুয়ার কলেজ থেকে জুলজিতে অনার্স নিয়ে বিএসসি পাশ করেন প্রথম বিভাগে। মাধ্যমিক,উচ্চমাধ্যমিকেও তার নজরকাড়া ফল ছিল।
আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, “কাকলি আমাদের গ্রামের গর্ব,জেলার গর্ব।মনে জেদ এবং লক্ষ্য ঠিক থাকলে যে সফলতা আসে সেটা কাকলি প্রমাণ করে দিল।”