NEET 2025: টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি, হারিয়েছেন বাবাকে, বাংলার সেই ছেলেই ডাক্তারি পরীক্ষায় পেলেন বিরাট সাফল্য

NEET 2025: দীপজ্যোতি সরকার। আলিপুরদুয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা।লকডাউনের সময় বাবা দুরারোগ্য ব্যাধিতে মারা যান। মা সরস্বতী দাস সরকার সেই থেকে সেলাই মেশিন চালিয়ে রোজগার করে সংসার চালাতে শুরু করেন।

NEET 2025: টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি, হারিয়েছেন বাবাকে, বাংলার সেই ছেলেই ডাক্তারি পরীক্ষায় পেলেন বিরাট সাফল্য
দীপজ্যোতি সরকারImage Credit source: Tv9 Bangla

| Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Jun 22, 2025 | 1:52 PM

আলিপুরদুয়ার: মাটির ছোট্ট কুঁড়ে ঘর। বর্ষাকালে কখনও ঘরের ভিতর জল ঢুকে যায়। খুবই কষ্টে দিনকাটে মা-ছেলের। আজ সেই বাড়িতেই আনন্দ আর আনন্দ। কারণ, অভাবকে দূরে ফেলে নিজের স্বপ্ন পূরণে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন দীপজ্যোতি। সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তিনি।

দীপজ্যোতি সরকার। আলিপুরদুয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা।লকডাউনের সময় বাবা দুরারোগ্য ব্যাধিতে মারা যান। মা সরস্বতী দাস সরকার সেই থেকে সেলাই মেশিন চালিয়ে রোজগার করে সংসার চালাতে শুরু করেন। যথেষ্ট মেধাবি ও কৃতি ছাত্র হওয়ায় ‘জওহর নবোদয় স্কুলে’ পড়ার সুযোগ পান দীপজ্যোতি। সেই থেকে ছেলেটার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার।

নবোদয় স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর একটি স্কলারশিপ পেয়ে পুনে চলে যান দীপজ্যোতি। সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়াশোনা করার সুযোগ পান। এরপর লাগাতার পরিশ্রম। দু’বারের মাথায় এল নিটে সাফল্য। ৭২০ মধ্যে ৫১২ পেয়েছেন তিনি। তাঁর র‍্যাংক ৩৯,৪১৬। কিন্তু তফসিলি জনগোষ্ঠী হওয়ায় তাঁর র‌্যাঙ্ক ৯১৪।

দীপজ্যোতি ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের সেবা করবেন। এই তাঁর ব্রত। কারণ টাকার অভাবে এক সময় বাবার চিকিৎসা করাতে পারেননি। তাই ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন তাঁকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছে।

রবিবার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব শান্তিনগর জিএস এফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা তাঁকে সংবর্ধনা দেন। ওই স্কুলেই তো পড়তেন দীপজ্যোতি। স্কুলের সভাপতি ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দেবনাথ বলেন, “আমরা অভিভূত। খুব গরিব একটা পরিবারের ছেলে নিটে সফল হয়েছে। ডাক্তার হচ্ছেন। আমরা গর্বিত। আমাদের ওয়ার্ড গর্বিত।”

দীপজ্যোতির নিটে সফল হওয়ায় খুশি মা সরস্বতী দাস সরকার। ছেলের স্বপ্ন সফল হওয়ায় তিনি খুশি। বলেন, “আমি বুঝতে পারছি না কী বলব। অনেক কষ্ট করে ওকে লেখা পড়া শিখিয়েছি। ছেলে তার মান রেখেছে।” অন্যদিকে, দীপজ্যোতি বলেন, “স্কলারশিপ পেয়ে পুণে যাই। প্রথমবার হয়নি। এইবার হয়েছে। গোটা দেশের মধ্যে আমার র‌্যাঙ্ক ৩৯, ৪১৬। তবে ক্যাটাগর র‌্যাঙ্ক এসেছে ৯১৪। আমি ছোট থেকে ডাক্তার হতে চাইতাম। ওদের কাজ আমায় মুগ্ধ করে। বাবার চিকিৎসা যেহেতু টাকার অভাবে করতে পারিনি, সেই কারণে এই আরও বেশি করে চাইতাম যাতে ডাক্তার হতে পারি।”