Sukanta Majumder: স্বাস্থ্যসাথী কি ফেল? বাংলায় আয়ুষ্মাণ প্রকল্প পথেই হাঁটবেন মমতা, ভবিষ্যদ্বাণী সুকান্তর

Swastha Sathi: সোমবারই শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্য নিচ্ছে না। এমনটা হলে আগে চিহ্নিত করুন।"

Sukanta Majumder: স্বাস্থ্যসাথী কি ফেল? বাংলায় আয়ুষ্মাণ প্রকল্প পথেই হাঁটবেন মমতা, ভবিষ্যদ্বাণী সুকান্তর
মমতাকে তোপ সুকান্তের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2021 | 4:47 PM

আলিপুরদুয়ার: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গে সফর শেষেই আগেই  আলিপুরদুয়ারে এলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ফের মমতাকেই বাক্যবাণে বিঁধলেন সুকান্ত।

এদিন সুকান্ত বলেন, “রাজ্যের  অধিকাংশ মানুষের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হয়নি।  রাজ্যে তাঁরা হাসপাতালে চিকিত্‍সা পাবেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছেন।  একটা হাসপাতাল তো কোর্টে গিয়েছে। কোটি কোটি টাকার বকেয়া হয়ে রয়েছে। রাজ্য সরকার টাকা দিতে পারছে না। কত নার্সিং হোমের বিল মেটায়নি। এমন চলতে থাকলে তো নার্সিংহোমগুলোই উঠে যাবে। তাই দিদি এখন যা পারছেন করছেন। আমি ভবিষ্যতবাণী করছি, মুখ্য়মন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রীর আয়ুষ্মান প্রকল্প চালু করার। ”

প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swastha Sathi) থাকলে ফেরানো যাবে না কোনও রোগীকে। সোমবারই শিলিগুড়ি থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইদিনই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ স্কিম কার্ড নিয়ে নতুন অ্যাডভাইজারি প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর অধীনস্থ স্বাস্থ্যসাথী কমিটি। আগামী ৩ নভেম্বর স্বাস্থ্য সাথী (Swastha Sathi) কার্ডে রোগী ফেরানো নিয়ে স্বাস্থ্য কমিশনের বিশেষ শুনানিও রয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসায় এই সিদ্ধান্ত বলেই দাবি স্বাস্থ্য কমিশনের।

স্বাস্থ্যসাথী সমিতির তরফে দু’টি অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছে। একটি মূলত বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির জন্য। দ্বিতীয় অ্যাডভাইজারিটি সরকারি হাসপাতালের জন্য। প্রথম যে অ্যাডভাইজারি তাতে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি ‘স্পেসিফায়েড প্যাকেজ’ রয়েছে। অর্থাৎ যে রোগই হোক না কেন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এরকম ১৯০০ প্যাকেজ রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য সমিতি সেলের পর্যবেক্ষণ, প্যাকেজ বহির্ভূত টাকা নিয়ে রোগীর চিকিৎসা করছে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল। প্যাকেজ বহির্ভূত এই খরচ নিয়েই অ্যাডভাইজারিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি প্যাকেজ আছে। রোগীর যে রোগই হোক না কেন, তা কোনও না কোনও প্যাকেজের আওতায় অনায়াসে চলে আসে। যদি এমার্জেন্সি হয়, সে ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মেডিসিন ও সার্জারিতে প্যাকেজ বহির্ভূত বিল করা যাবে। বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়। সরকার মানুষের সুবিধার জন্যই এই প্রকল্প চালু করেছে। এদিকে যদি ‘আনস্পেসিফায়েড প্যাকেজ’-এও রাশ টানা দরকার বলে মনে করছে স্বাস্থ্যসাথী সমিতি।

সোমবারই শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্য নিচ্ছে না। এমনটা হলে আগে চিহ্নিত করুন। দ্রুত তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। দরকার হলে আমি তাদের লাইসেন্স বাতিল করব।”

এর আগে রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্যবীমার জন্য যে প্রকল্প সরকার নিয়ে এসেছিল, তা নানাভাবে শিরোনামে উঠে এসেছে। কখনও ইতিবাচক কারণে। তবে অবশ্যই রোগী প্রত্যাখানের জেরে বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক কারণে।তবে এই প্রকল্পে বিরাট টাকার গরমিলের অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।

প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে একটি জনস্বার্থ মামলায় দায়ের করার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। গোটা ঘটনায় ক্যাগ তদন্তের দাবি করেছেন আবেদনকারী অজিত কুমার প্রসাদ। তাঁর দাবি, গরমিল হয়েছে ১৮৮ কোটি টাকার।

রাজ্যের ২৩ টি জেলার একাধিক জেলায় খোঁজখবর নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গড়ে ১০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৯০ জনই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাননি। যারা কার্ড পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ আবার পরিষেবা পাচ্ছেন না। আবেদনকারীর দাবি, প্রত্যেক মাসে যে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসা হচ্ছে তার মধ্যে রোগীর সংখ্যা ও তাঁদের পিছনে কত খরচ হচ্ছে তার ভুল হিসেব দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্যাগের তদন্ত দাবি করা হয়েছিল। স্বাস্থ্যসাথী থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে বেনিয়মের ছবি উঠে এসেছে। এ বার, সেই বেনিয়ম নিয়েই রাজ্যকে তোপ বিজেপি নেতার।

আরও পড়ুন: BJP: নির্বাচনী আবহে আক্রান্ত হয়েছিলেন, অবশেষে দল ছাড়তে চললেন বাবু মাস্টার