Mamata Banerjee: ‘ভিক্ষা চাই না, প্রাপ্য দিতে হবে’, হাসিমারা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব মমতা

Alipurduar News: এদিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, রাজ্যে একটা চকোলেট বোমা ফাটলেও NIA আসে।

Mamata Banerjee: 'ভিক্ষা চাই না, প্রাপ্য দিতে হবে', হাসিমারা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব মমতা
হাসিমারায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 19, 2023 | 7:13 PM

আলিপুরদুয়ার: হাসিমারায় সুভাষিনী চা বাগানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান। সেখান থেকে রাজ্যের উন্নয়ন-খতিয়ান তুলে ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চাকরি দিতে চাইলেও আদালতে গিয়ে বাধা দিচ্ছে বিরোধীরা। তিনি বলেন, কেন্দ্রের চাকরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, রেলে কোনও স্থায়ী চাকরি নেই। একইসঙ্গে এদিন আরও একবার ১০০ দিনের টাকায় বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভিক্ষা চাই না, প্রাপ্য দিতে হবে।”

  1. আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব একবার মঞ্চে আসতে। কারণ ও যখন এসেছে, তখন একবার নমস্কার করে তুমি নেমে যাও। কিন্তু একবার এসো। কারণ, ও কাল আমার সঙ্গে মেঘালয় গিয়েছিল। আমাকে বলছে, ‘না দিদি আমি যাব না’। আমি খুব পছন্দ করি এটা। সরকারি অনুষ্ঠানে পলিটিক্যাল লোক কেন থাকবে? যাঁরা আছেন, তাঁদের সকলের সরকারি পদ আছে। তবে একজন সংসদের সদস্য হিসাবে নিশ্চয়ই থাকতে পারে। : মমতা
  2. এখানে চা সুন্দরি বাড়িগুলি খুব সুন্দর। আমিও মুখ্যসচিবকে বলেছি, চা সুন্দরীর একটি ঘর আমার জন্য়ও রাখবেন। আমি কখনও কখনও এলে এখানে থাকতে চাই। মোট ৩ হাজার চা সুন্দরীর বাড়ির হবে। ১ হাজার ১১৭টা চাবি আজ দেওয়া হল। বাকি ২-৩ মাসের মধ্যে দেওয়া হবে। চা শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি আছে, জমির পাট্টা নিয়ে। মুখ্যসচিবকে বলেছি, কথাবার্তা শুরু করতে। চা বাগান জমি গ্রহণ করে যদি পাট্টা দিতে পারি, যদি সবাই একমত হয়। : মমতা
  3. ১১৩টা ক্রেশ তৈরি করে দিচ্ছি। সেখানে চা শ্রমিকের বাচ্চা থাকবে। মা কাজে যাওয়ার সময় ওখানে রেখে যাবে। সেখানে বাচ্চা থাকবে, পড়াশোনা করবে। ফেরার পথে মা নিয়ে যাবেন। আজই ৩৪টা চূড়ান্ত করে দিয়েছি। আগামিদিনে বাকিগুলি করে দিচ্ছি। হেলথ সেন্টার করছি নতুন করে। অ্যাম্বুল্যান্স দিচ্ছি ৪৩টা। পার্ট টাইম ডাক্তার দিচ্ছি। হয়ত সময় লাগবে। করে দেব। : মমতা
  4. অনেকে বলে উত্তরবঙ্গ কিছু পায় না। শুধুই অপপ্রচার করে, রাজনীতির কথা বলে মাথাটা খামচায়। এদের বলবেন, আলিপুরদুয়ার জেলাতেই শুধু লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৪ হাজার মহিলা। জলপাইগুড়ি জেলায় পেয়েছেন ৪ লক্ষ ৭৮ হাজার জন, কোচবিহার জেলায় পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৩৭ হাজার জন।
  5. কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সব ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজে যারা কাজ করেছেন, টাকা দেয়নি। ৬ হাজার কোটি টাকা পাই। জব কার্ড হোল্ডারদের টাকা দেয়নি। আমরা নিজেরা রাজ্যের থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে কাজ দিয়েছি। এটা নিয়ে ১০ কোটি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। ১০০ দিনে যাদের দিয়ে কাজ করালে টাকা দেবে না? বাহ! রাজ্যের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছ, তোমাদের টাকা নয়। ওদের নেতারা বলে, সব দিল কে, ওরা দিল। একেবারেই তা নয়। মাছের তেলে মাছ ভাজা। : মমতা
  6. রাজ্য সরকার কর নেয় না, কর নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই টাকার ৬০ শতাংশ আমরা পাই। সেই টাকা পর্যন্ত দেয় না। এখান থেকে ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে যাচ্ছে, আবার রেইডও করা হচ্ছে। কাস্টমস ডিউটি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আবার রেইডও হচ্ছে। একটা শাড়ির দোকানে গেলে, একটা জিএসটি দিতে হয়, সেটাও তুলে নিয়ে যাচ্ছ। এরপর তো নকুলদানা কিনতেও কর লাগবে। আমি ভিক্ষা চাইব না, আমি ভিক্ষা চাওয়ার লোক নই। দেখব এটা কতদিন চলে। ভিক্ষা করলে মানুষের কাছে চাইব, ওদের কাছে নয়। : মমতা
  7. ইতিমধ্যে বাংলার আবাস যোজনা, ১১ লক্ষ বাংলার বাড়ি আমরা তৈরি করেছি। সেই টাকাও দেয়নি। প্রায় ৫০ লক্ষ আবেদন পড়ে আছে। তার মধ্যে অনেকের প্রাপ্য নয়, তবু পেয়েছিল বলে সার্ভে করে ১৭ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছি। যারা পাওয়ার উপযুক্ত ১১ লক্ষ জনকে আমরা দিয়েছি। যদি কেন্দ্রীয় সরকার না দেয়, আগামিদিনে আমরা আমাদেরটা বুঝে নেব। আমরা লড়াই করে দেখিয়ে দেব, মানুষের জন্য লড়াই আমরা করতে পারি। : মমতা
  8. গ্রামীণ রাস্তার টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। নদীর ভাঙন টাকা দিচ্ছে না। বন্যা হলে টাকা দেয় না। আমি জেলাশাসক, মুখ্যসচিব সকলকে বলছি, চাষিদের বড় সমস্যা। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের কিছুটা চাষের জল পায় না। চেষ্টা করুন, চেকড্যাম, ক্যানেলগুলো কাজে লাগাতে। ক্যানেলের জল যেন চাষের জমিতে যায়। : মমতা
  9. আমাদের বাংলায় ১৭ শতাংশ ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণ আছে। আমাদের সরকার এসে এটা করেছি। তবে কোনও জেনারেল কাস্টের কোটা থেকে নিইনি। ওবিসির জন্য প্রজেক্ট ছিল। স্কলারশিপ পেত ওরা। কেন্দ্রীয় সরকার সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে। ৮০০ টাকা করে পেত। তবে আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের পাহারাদার হিসাবে আমি থাকি সবসময়। আমি শুধু ইলেকশনের সময় কথা বলি না। সবসময় বলি। এই ওবিসি স্কলারশিপের টাকা আমরাই দেব, তোমার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যখন বন্ধ করে দিয়েছ, ভোটের সময় বলতে এসো না ওবিসি ভোট দাও। যারা ওবিসিদের টাকা বন্ধ করেছে তারা পাপ করতে পারে, আমি পারি না। : মমতা
  10. আমি কুকুর কাউকে বলছি না, একটা প্রবাদ বলছি, কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড় দিয়েছে গায়। তা বলে কী কুকুরে কামড়ানো মানুষের শোভা পায়? প্রবাদের মধ্যে দিয়ে আমি এটাই বলতে চাই, দিও না তুমি কিছু, সব বন্ধ করে দাও। কিন্তু নিও না কিছু। আর যাতে কিছু না নিতে পার তার ব্যবস্থার জন্যও আমরা তৈরি থাকব। : মমতা
  11. সবকিছুতে একজনের মুখ। আরে ছবি সব কথা বলে না। ছবি তাদেরই টাঙানো যায়, যে ছবি মানুষের মনের ভাষা বোঝে। মানুষ যাকে শ্রদ্ধা করে। আমরা ভোটের সময় বলে বাকি সময় পালিয়ে যাই না। আমরা পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। আমরা যা বলব, তা করে দেখাব।: মমতা
  12. এবার দুয়ারে সরকারে আমরা ২০ লক্ষের মতো আবেদন পেয়েছি। প্রায় ১৯ লক্ষ গ্রহণ করেছি। যাদের ভুলভ্রান্তি আছে আবার যখন দুয়ারে সরকার হবে জানাবেন। গত লোকসভা ভোটের আগে বলে গেল, বান্দাপানি থেকে শুরু করে সব চা বাগান খুলে দেবে। আজও করেনি। গালি দেয় আর ঝামেলা লাগায়। : মমতা
  13. একটা উইপোকা কামড়ালেও দেখবেন এখন দিল্লির একটা টিম চলে আসছে। বার কাউন্সিল দিল্লির বার কাউন্সিল। কলকাতায় কোনও সমস্যা হলে প্রধান বিচারপতি দেখবেন বিষয়টা। আমরা আছি, আমাদের বার কাউন্সিল দেখবে। দিল্লি থেকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কারও বাড়িতে একটা চকোলেট বোমা ফাটলে NIA পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর বিএসএফ যখন গুলি করে কোচবিহার বর্ডারে মারে, দক্ষিণ দিনাজপুরে মারে, তখন তোমরা কটা টিম পাঠাও? এখানে যখন মেয়েদের উপর অত্যাচার হয় ক’টা টিম পাঠাও? তোমার উত্তর প্রদেশে যখন মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়, কটা টিম পাঠাও। কৃষকদের খেতে দাওনা, কটা টিম পাঠাও। এসব নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। খালি মিথ্যা কথা বলে, কুৎসা করে। : মমতা
  14. দুয়ারে সরকার একদিকে চলছে। আমি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান হিসাবে একটা কথা বলব, দিদির সুরক্ষা কবচ যাবে। দিদির দূতরা আপনাদের কাছে যাবে। যদি মনে করেন কারও একটা কাস্ট সার্টিফিকেট আপনি চেষ্টা করেও পাননি, তাদের বলবেন। আপনার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর দিদির দূতকে বলবেন। সে নোট করে নিয়ে আসবে। সেগুলো আমার কাছে সরাসরি এসে পৌঁছবে। যেটা যেটা হয়নি, কোনটা কোনটা করা যায়, কেন হয়নি, আমি নিজে এগুলোকে দেখব। : মমতা
  15. এখন তো কারও বাড়িতে চকোলেট বোমা ফাটলেই এনআইএ-কে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বিএসএফ যখন গুলি করে কোচবিহার বর্ডারে মারে, দক্ষিণ দিনাজপুরে তখন তোমরা কটা টিম পাঠাও? এখানে যখন মেয়েদের উপর অত্যাচার হয় তখন কটা টিম পাঠাও? তোমার উত্তরপ্রদেশে যখন মেয়েদের উপর অত্যাচার হয় তখন কটা টিম পাঠাও? কৃষকদের খেতে দাও না। আজকে কৃষকরা ফার্টিলাইজার পাচ্ছে না, সে বিষয়ে কোনও চিন্তা নেই। শুধু মিথ্যা কথা বলে কুৎসা করে। : মমতা 
  16. আমি মনে করি উত্তরবঙ্গ একদিন বাংলায় পর্যটনের ক্ষেত্রে এক নম্বরে স্থানে পৌঁছাবে। কারণ পশ্চিমবাংলায় পাহাড় আছে, পশ্চিমবাংলায় জঙ্গল আছে। পশ্চিমবাংলায় সমুদ্র আছে। পশ্চিমবাংলায় গঙ্গাসাগার আছে, জল্পেস মন্দির আছে, পশ্চিমবাংলায় কালীঘাট আছে, পশ্চিমবাংলায় দক্ষিণা কালী আছে, দক্ষিণেশ্বর আছে, তারাপিঠ আছে, দেবী চৌধুরানির মন্দির আছে, মহাকাল মন্দির আছে। কী নেই! : মমতা 
  17. আমি চাই হাসিমারায় এয়ারপোর্ট হোক। কোচবিহারে ইতিমধ্যেই আমরা ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছি এয়ারপোর্টের জন্য। বালুরঘাটে হচ্ছে। মালদায় হচ্ছে। পুরুলিয়াতেও হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। : মমতা 
  18. যেখানেই কর্মখালি রয়েছে আমরা চাকরি দিতে চাই। আর যে লোকগুলো রোজ গালাগালি দেয় আমাদের তাদের বলব ভেরি ব্যাড। আর বেশি কিছু বললাম না। কথায় কথায় গিয়ে একটা করে কেস করছে। আমি কোর্টের দোষ দিই না। শুধু সেই নেতাদের বলি যদি দশ হাজার ছেলে চাকরি পায় তাহলে তোমার আপত্তি কোথায়? তুমি কটা চাকরি দিয়েছ? তোমার রেলের চাকরিতে ভ্যাকেন্সি বন্ধ। তোমার কোল ইন্ডিয়ায় কোথায় চাকরি? এয়ার ইন্ডিয়া উঠিয়ে দিচ্ছ। সবকিছু তুমি উঠিয়ে দিচ্ছ। আমরা যখন ঘরের ছেলেদের চাকরি দিচ্ছি তখন ওরা গিয়ে বন্ধ করে দেয়। এটাই ওদের কাজ। আমি এখনও মনি করি মানুষের কাজ নিয়ে, মানুষের ক্ষুধা নিয়ে, মানুষের দুঃখ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। : মমতা 
  19. কোথাও পড়ানোর নাম করে আপনার মাথাটা খাচ্ছে। কোথাও কম্বল দেওয়ার নাম করে আপনার মাথাটা খাচ্ছে। মানুষের ভবিষ্যত নষ্ট করতে চাইছে। আর আমরা চাই আমার উত্তরবঙ্গ, আমার পশ্চিমবঙ্গ, আমার দক্ষিণবঙ্গ, আমার সোনার বাংলা, আমার রূপসী বাংলা বেঁচে থাক। সবাই ভাল থাক। আমি দেখতে চাই কারও ঘরে যেন কোনও ক্ষুধা না থাকে। : মমতা 
  20. আমি বছরে ২০ থেকে ২৫ বার আসি উত্তরবঙ্গে। কারণ আমরা জানি আমরা যত বেশি করে যাব তত বেশি কাজ হবে। মানুষ উৎসাহ পাবেন। আমি মানসিকভাবে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা। আমি যতটা উত্তরবঙ্গকে চিনি কেউ চেনে না। আমি যতটা পারব করব। সব কাজ সবাই করতে পারে না। কিন্তু, চেষ্টা করার মানসিকতা থাকা উচিত। ওবিসিদের সব বন্ধ করে দিয়েছে। আমি বলেছি ৮০০ টাকা করে দেব। রাজ্য সরকার দেবে। তার নাম দিয়েছি মেধাশ্রী। কন্যাশ্রী আছে, শিক্ষাশ্রী আছে, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ আছে। তাই ওবিসিদের টাকা যেহেতু আমরা দেব তাই তাদের জন্য একটা নাম দেওয়া উচিত। তাই আমি নাম দিয়েছি মেধাশ্রী। আজ থেকে ওবিসারা পাবেন মেধাশ্রী স্কলারশিপ। : মমতা