কুমারগঞ্জ : খনন কাজ চলছিল পুকুরে। খোঁড়াখুঁড়ি সময়েই আচমকা পুকুরের নীচ থেকে উঠে এল প্রাচীন বিষ্ণু মূর্তি। তাতেই শোরগোল গোটা গ্রামে। বিষয়টি নজরে আসতেই সেই মূর্তিটি নিজেদের হেফাজতে রাখার চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে শনিবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তিটি (Ancient Vishnu idol) উদ্ধার করে নিয়ে আসে থানায়। এ ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ থানার সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম দেউন গ্রামে। উদ্ধার হওয়া বিষ্ণুমূর্তিটি কষ্টিপাথরের বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, কুমারগঞ্জ সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম দেউনে গত কয়েকদিন ধরেই একটি পুকুর খননের কাজ চলছে। সেই পুকুর খনন করার সময় গতকাল মাটির নীচ থেকে একটি প্রাচীন মূর্তি বের হয়। মূর্তিটি নজরে আসতেই সেটিকে মাটি থেকে তুলে পরিষ্কার করেন গ্রামবাসীরা। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় ৫ ফুটের মতো বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি নিজেদের হেফাজতে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তবে গোপন সূত্র খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে থানায়। ওই পুকুরে আরও এমন কোনও মূর্তি রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। মূর্তিটি কতটা পুরনো, এর সঙ্গে কতটা ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে তা জানতে জেলার ইতিহাসবিদদের সহযোগিতা নিতে চলেছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।
এ বিষয়ে কুমারগঞ্জ থানার আইসিই সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গতকাল খবর পেয়ে মূর্তিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাচীন এই মূর্তিটি বিষ্ণু মূর্তি বলেই মনে হচ্ছে। কোথা থেকে কীভাবে মূর্তিটি সেটা জানার চেষ্টা করছি আমরা।” এ বিষয়ে ইতিহাসবিদ তথা শিক্ষক সমীত ঘোষ বলেন, “এটা কষ্টিপাথরের বিষ্ণুমূর্তি। এখনও অবধি যত প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি পাওয়া গিয়েছে সাম্প্রতিককালে তার বেশিরভাগই পাল আমলের। তবে সেন আমলেরও বিষ্ণুমূর্তি পাওয়া গিয়েছে। লক্ষ্মণ সেন নিজে বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন। তবে এদিন যেটা উদ্ধার হয়েছে সেটা পাল আমলের বলে মনে হচ্ছে।” যে পুকুরে খনন কাজ হচ্ছিল তার মালিক সাইফুল মোল্লা বলেন, “জেসিবি দিয়ে পুকুর কাটা হচ্ছিল। তখনই মূর্তিটা উদ্ধার হয়। ওটা দেখা মাত্রই আমরা নিজেরাই ওটা সাইড করে রেখেছিলাম। পরে পুলিশ এসে আমাদের থেকে ওটা নিয়ে যায়। তবে এর আগে এরকম ঘটনা আমাদের এখানে ঘটেনি।”