বিষ্ণুপুর: সিকিমের গাড়ি দুর্ঘটনায় শহিদ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সেনা জওয়ান, গোপীনাথ মাকুড়ের কফিনবন্দি দেহ অবশেষে রবিবার এল তাঁর গ্রাম, ভালুকায়। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান গ্রামবাসী থেকে সেনা আধিকারিক ও জেলা পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। এরপর গ্রামের পাশেই একটি শ্মশানে গান স্যালুট দিয়ে চোখের জলে বিদায় জানানো হয় সকলের প্রিয় গোপীনাথ মাকুড়কে।
গত বৃহস্পতিবার উত্তর সিকিমের চাটেন থেকে থাংগু যাচ্ছিল সেনা-জওয়ানদের তিনটি গাড়ি। জেমার কাছাকাছি দুর্গম পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় সেই তিনটি গাড়ির একটি। ওই গাড়িতে মোট ২০ জন জওয়ানের সঙ্গেই ছিলেন গোপীনাথ মাকুড়। এই দুর্ঘটনায় ওই গাড়িতে থাকা ২০ জওয়ানের মধ্যে ১৬ জনেরই মৃত্যু হয়। আহত হন বাকি ৪ জন। মৃত ১৬ জনের মধ্যেই ছিলেন গোপীনাথ মাকুড়।
এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে গোপীনাথ মাকুড়ের মৃত্যু সংবাদ তাঁর ভালুকা গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে সেনা জওয়ান গোপীনাথের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা ভালুকা গ্রাম। তার পর থেকে গোটা গ্রাম কার্যত চোখের জলে অপেক্ষা করতে থাকে, কখন গ্রামে ফিরবে শহিদের দেহ। অবশেষে এদিন বেলা ১১টা নাগাদ সেনার গাড়িতে করে কফিনবন্দি হয়ে নিহত গোপীনাথ মাকুড়ের মৃতদেহ এসে পৌঁছয় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের ভালুকা গ্রামে।
গোপীনাথ মাকুড়ের দেহ গ্রামে পৌঁছানোর বহু আগে থেকেই গোটা এলাকার মানুষ শহিদকে শেষবারের মতো একবার দেখতে রাস্তার দু-পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর তেরঙায় মুড়ে তাঁর কফিনবন্দি দেহ গ্রামে পৌঁছতেই গ্রামবাসীর আবেগের বাধ ভেঙে পড়ে। এরপর সেনা জওয়ানেরা কাঁধে করেই শহিদের মৃতদেহ নিয়ে যান গ্রামের অদূরে থাকা শ্মশানে। সেখানেই গান স্যালুটে বিদায় জানানো হয় গোপীনাথ মাকুড়কে।