হুগলি: ‘মারছ না কেন? আপকে ঘর ম্যায় বঁটি নেহি হ্যয়, কাটারি নেহি হ্যয়? ওসব লেকে মারো উসকো…’, সাধারণ মানুষকে এমনই নিদান দিচ্ছেন খোদ শাসকদলের বিধায়কের। কিন্তু কাদের কে মারতে বলেছেন তিনি? বিধায়কের টার্গেট রেলের কর্মীরা।
ঘটনার হুগলি জেলার ব্যান্ডেল এলাকার। অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় এসেছে ব্যান্ডেল স্টেশন। তাই সেখানে বদলের হাওয়া। বদলে যাবে স্টেশনের খোলনলচে। উন্নত হবে পরিবেশ-পরিস্থিতি। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন স্টেশন সম্প্রসারণ। তাই রেলের আওতায় থাকা ব্যান্ডেল আম-বাগান, লোকোপাড়া এলাকায় পরিত্যক্ত জমিতে কাজ শুরু করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সেই এলাকাতেই বছর বছর ধরে পরিত্যক্ত কোর্য়াটারগুলি দখল করে বসবাস করছেন বহু মানুষ। রেলকর্মীরা উঠে গেলেও, মাথার উপর ছাদ জোগাতে দখলদারি নিয়েই সেখানে থাকছেন তারা। মূলত, দিনমজুর ও পরিযায়ী শ্রমিকদেরই ওখানে বসবাস বেশি।
এদিকে, ব্যান্ডেল স্টেশনের সম্প্রসারণে সেই পরিত্যক্ত কোয়ার্টার এলাকা হাতছাড়া করতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। তাই সম্প্রতি লোকোপাড়া বসবাসকারীদের দেওয়া হয়েছে উচ্ছেদের নোটিস। আর সেই ইস্যুতেই সুর চড়িয়েছেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।
কিছুদিন আগেই এই রেলের উচ্ছেদ নোটিস জারি করা নিয়ে একটি বৈঠক করেন তৃণমূল নেতা। তাঁর দাবি, যথাযথ পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না। সোমবার, সেই প্রসঙ্গেই ওই এলাকায় যান অসিত মজুমদার। গিয়ে দেখেন ইতিমধ্যেই কোয়ার্টার ভাঙার কাজ শুরু করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই যেন ক্ষেপে লাল হয়ে যান বিধায়ক। সেখানে দাঁড়িয়েই বাসিন্দাদের বলেন, ‘ঘরে বঁটি, কাটারি আছে? তাহলে মারছেন না কেন? মারুন ওদের।’ উচ্ছেদ আটকাতে কার্যত ‘হিংসার’ পথকেই যেন বেছে নিতে বলেন বিধায়ক।
তাঁর আরও দাবি, ‘বাড়ির কুকুর তাড়ানো যায় না। ৪০-৫০ বছর ধরে এরা এখানে আছে। এই ভাবে উচ্ছেদ করা যায় নাকি? রেলকে এদের পুনর্বাসন দিতে হবে।’ এরপর তিনি বলেন, ‘মারতে বলেছি, ঠিক করেছি। দাদা আছে, দাদাগিরি এখানে চলবে না।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই পরিত্যক্ত এলাকা থেকে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ ও সম্প্রসারণের টেন্ডার নিয়েছেন নাকি একজন তৃণমূল কর্মীই। সেই কথা শুনতেই বিধায়ক বলেন, ‘তৃণমূলটা করে খাওয়ার জায়গা নয়। আমি যদি খবর পাই, তৃণমূলের কোনও কাজে তাকে রাখব না।’
অবশ্য এই উচ্ছেদের প্রসঙ্গে বিজেপি হুগলি সাংগাঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘সেখানে যে সব কোয়ার্টারে রেলের কেউ থাকেনা। তাদের উচ্ছেদের কথা বলেছে।বিধায়ক রাজ্য সরকারের জায়গায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক। তা না করে আইন হাতে তুলে নিতে বলছেন।’