বহরমপুর: ভারত সীমন্তে প্রবেশ করে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপর নৃশংস হামলা চালাল বাংলাদেশের একদল পাচারকারী। একেবারে রড এবং ধারাল অস্ত্র দিয়ে জওয়ানদের মাথা কোপানো হল। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মুর্শিদাবাদের ৩৫ ব্যাটেলিয়নের সীমা চৌকি নির্মলচর এলাকায়। বাংলাদেশ পাচারকারীদের এই হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুই জওয়ান সহ ৩ জন। যার মধ্যে এক জওয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
BSF সূত্রে খবর, আহত জওয়ানেরা বিএসএফ-এর ৩৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সদস্য। বাংলাদেশি পশুপালকদের হাত থেকে ভারতীয় কৃষকদের জমি রক্ষা করতে অস্থায়ী পোস্ট তৈরি করার সময়ই জওয়ানদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। জনা ১০-১২ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধারাল অস্ত্র নিয়ে জওয়ানদের উপর হামলা চালায় এবং জওয়ানদের থেকে দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের পরিচয় স্পষ্ট না হলেও তারা গোরু পাচারকারী বলেই দাবি বিএসএফ-এর। ৩৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার সতীশ ডোগরা বলেন, “ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি BGB-র নজরে এনেছি। সীমন্তে এই ভাবে দুষ্কৃতী হামলা চলতে দেওয়া যাবে না।”
সীমন্ত রক্ষী বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে ১০-১২ জন বাংলাদেশি দুষ্কৃতী মহিষের পাল নিয়ে ভারত সীমান্তে উত্তর নির্মল চর এলাকায় প্রবেশ করে এবং স্থানীয় জমির ফসল খাইয়ে দিচ্ছিল। এলাকার জমির পাহাড়াদাররা বাধা দিতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় আহত হন পাহাড়াদার মুক্তার শেখ। তাঁর চিৎকার শুনে সীমান্তে টহলদারী জওয়ান শ্রী কাজরমল এবং সিবি বর্গীস ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা পাল্টা তাঁদের উপর চড়াও হয়। জওয়ানদের বেধড়ক পেটানোর পাশাপাশি ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁদের মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। তারপর তাঁদের চিৎকার শুনে গ্রামবাসী ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর গ্রামবাসীই রক্তাক্ত অবস্থায় জখম দুই জওয়ান ও পাহাড়াদারকে উদ্ধার করে প্রথমে নশিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে দুজনের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও এক জওয়ানের মাথায় অনেকগুলি সেলাই পড়েছে এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, গত পাঁচ মাসে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অন্তর্গত এলাকায় গরু পাচারকারীরা এভাবেই জওয়ানদের মারধর করে মোট পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল লুঠ করে নিয়ে গেল বলে বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে।