
বাঁকুড়া: সীমিত পরিকাঠামোতেই অসাধ্য সাধন। চোখ ধাঁধানো সাফল্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যালে। পড়শি রাজ্যের এক রোগীর মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকেরা বের করে আনলেন বড়সড় এক টিউমার। সপ্তাহখানেক আগে হয়েছে সেই অস্ত্রোপচার। এখন অনেকটাই সুস্থ ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার ছিরুডি এলাকার বছর সাঁইত্রিশের বাসিন্দা আলপনা মাহাতো। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন থেকেই তিনি মাথা যন্ত্রণার সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। হঠাৎ হঠাৎ অচেতনও হয়ে পড়তেন। সঙ্গে আরও নানাবিধ শারীরিক সমস্যাও ছিল। কিছুদিন আগে থেকে আবার জলপান করতেও সমস্যা হচ্ছিল। ঝাড়খণ্ডের নানা জায়গায় চিকিৎসাও করান ওই গৃহবধূ। প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও ধরা পড়ছিল না রোগ।
এরইমধ্যে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে আসেন আলপনা। সেখানেই ফের একবার বিশদে হয় পরীক্ষা। রিপোর্ট এলেই জানা যায় আলপনা মাহাতোর মস্তিষ্কে বড়সড় একটি টিউমর রয়েছে। রিপোর্ট দেখেই উদ্বেগ বাড়তে থাকে পরিবারে। একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায় অপারেশন করতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ। কিন্তু আলপনা মাহাতোর স্বামী অরুণ মাহাতো কোনওরকমে চাষবাস করে সংসার চালান। কোথা থেকে অত টাকা পাবেন তা ভেবেই কূলকিনারা পাননি। শেষ পর্যন্ত বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৭ নভেম্বর বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের নিউরো সার্জেন চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে চলে অপারেশন। শেষ পর্যন্ত টিউমারটিকে বের করে আনা সম্ভব হয়। তারপর থেকে হাসপাতালেরই পর্যবেক্ষণে রয়েছে ওই গৃহবধূ। ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছেন। স্বল্প পরিচারের মধ্যেই এই বড়সড় অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় খুশি চিকিৎসকেরাও। নিউরো সার্জেন চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, কলকাতার বাইরে কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন অস্ত্রোপচারের ঘটনা অত্যন্ত বিরল।