
বাঁকুড়া: শিশু পাচারের অভিযোগে চার বছর আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকার জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। দীর্ঘ চার বছর আইনি লড়াই শেষে অবশেষে তাঁকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত। বুধবার তাঁকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে আদালত।
২০২১ সালের ১৮ জুলাই বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায় থাকা জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া সহ মোট আট জনকে শিশু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা সহ ৩ জন মহিলাও ছিলেন। ধৃতদের কাছ থেকে মোট ৫ জন শিশু উদ্ধার হয় বলে দাবী করে পুলিশ। এই ঘটনাকে ঘিরে সে সময় উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি।
অভিযোগ সামনে আসতেই তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে সাসপেন্ড করে জহর নবোদয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাঝে তৎকালীন অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে বাদ দিয়ে বাকি সকলেই জামিনে মুক্ত হন। গত ৪ বছর ধরে জেলে থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে যান ধৃত কমল কুমার রাজোরিয়া। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। কিন্তু কোনওভাবেই প্রাক্তন ওই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি সরকারপক্ষ।
শেষ পর্যন্ত গতকাল কমল কুমার রাজোরিয়াকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে আদালত। বাঁকুড়া জেলা আদালত প্রাক্তন অধ্যক্ষকে বেকসুর খালাসের রায় দেয়। আদালতের রায় ঘোষণার পর প্রাক্তন অধ্যক্ষ দাবি করেন চাপের মুখে পড়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যর জয় হয়েছে। আদালতের রায়ে অবশেষে প্রাক্তন অধ্যক্ষ বেকসুর খালাস হওয়ায় খুশি তাঁর পরিবারও। প্রাক্তন অধ্যক্ষের পক্ষের আইনজীবীর দাবি, ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগের মামলায় ৪ বছর কারাবাস করতে হয়েছে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। এজন্য মানহানির মামলা করা হবে কিনা সে বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিজেপির দাবি, জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের মতো একটি নামী বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষকে ষড়যন্ত্র করে এভাবে ফাঁসিয়েছিল রাজ্যের শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে যেভাবে ৪ বছর ধরে কারাবাস করানো হল তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?