বাঁকুড়া: প্ল্যাটফর্মের পাশে লাইনের ধারে আর পাঁচ জনের সঙ্গেই ঘোরাফেরা করছিল বছর তেইশের মেয়েটা। তাঁর কোলে ছিল একটা ছোট্ট শিশু। বয়স বড়জোড় ৯ মাস। বাকি লোকজন ভেবেছিলেন, হয়তো ট্রেনে উঠবেন। ট্রেন আসতেই লাইনের ওপর বাচ্চা কোলে ঝাঁপ দেন তিনি। শিশু-সহ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় দেহটা। দৃশ্যটা দেখে বেশ কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে যান প্রত্যক্ষদর্শীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রেলপুলিশ। চলন্ত ট্রেনের সামনে ন’মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন মা। বাঁকুড়া মশাগ্রাম লাইনের রামপুর তেঁতুলতলা ফটকের মর্মান্তিক এই ঘটনায় বুধবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকবছর আগে বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার কোচডিহি রুইদাস পাড়ার বাসিন্দা রিপন রুইদাসের সঙ্গে বিয়ে হয় সীমা রুইদাসের। বছর পাঁচেক আগে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তারপর ৯ মাস আগে মেয়ে হয়। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন টুকটাক ঝামেলা হত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। ইদানীং তা বেড়েছিল। বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সীমা।
পরিবারের তরফে জানা যায়, দুধ কিনতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে যান সীমা। তারপর দীর্ঘক্ষণ ফেরেননি। পরিবারের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ শুরু করা হয়। পরে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এই কথা জানতে পারেন তাঁরা। বাঁকুড়া মশাগ্রাম লাইনের রামপুর তেঁতুলতলা ফটকের সামনে মেয়েকে কোলে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন সীমা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। পরিবারের দাবি বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভূগছিলেন সীমা। সে কারনেই এই জোড়া আত্মহত্যা। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এর পিছনে অন্য কোনও কারন রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “বুঝতে পারছি না কেন এমনটা করল? সমস্যা থাকেই সব পরিবারে। একটা বাচ্চা ছেলে আছে ওর। এভাবে কেউ চলে যায়?”
আরও পড়ুন: Governor On The Kashmir Files: ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ সকলের দেখা উচিত’, মন্তব্য রাজ্যপালের