
বাঁকুড়া: সকালেও কাজে গিয়েছিলেন রাস্তা দিয়ে। সারাদিন কাজ কর্ম সামলেছেন। বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে কার্যত মাথায় হাত! একি একটা আস্ত রাস্তা গায়েব? এমনটাও সম্ভব? বাঁকুড়ার ইন্দাস ও পাত্রসায়ের ব্লকের মানুষজনের কাছে যদিও বিষয়টা নতুন নয়। এখানে নাকি একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা ভেঙে যায়। এবারও তেমনটাই হয়েছে। বৃষ্টি হতেই একটা রাস্তা পুরো ভেঙে গিয়েছে। যার জেরে বন্ধ হয়েছে যাতায়াত। এখন নদী পেরিয়ে মানুষ ঝুঁকির যাতায়াত করছেন।
বিকেল হলে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি নামছে মুষলধারে। তপ্ত গরম থেকে মিলছে মুক্তি। গত তিন দিন ধরে বাঁকুড়া জেলায় এমনটা চলার পর এবার দ্বারকেশ্বর নদের জল বেড়ে ঘটল বিপত্তি। জলের তোড়ে ভেসে গেল দ্বারকেশ্বর নদের প্রকাশ ঘাটের উপর থাকা অস্থায়ী রাস্তা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল দু’পাড়ের যোগাযোগ।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমা সদরের সঙ্গে ইন্দাস ও পাত্রসায়ের ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম প্রকাশ ঘাটের অস্থায়ী রাস্তা। নদের উপর মাটি ও বালি দিয়ে তৈরি অস্থায়ী রাস্তা দিয়েই ইন্দাস ও পাত্রসায়ের ব্লকের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন মহকুমা সদর বিষ্ণুপুরে যাতায়াত করেন। ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল কলেজে যাতায়াত থেকে শুরু করে এলাকার কৃষিজীবী মানুষ তাঁদের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য বাজারজাত করার জন্য এই অস্থায়ী রাস্তায় সারা বছর ব্যবহার করেন।
এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ওই রাস্তা দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে স্থানীয়রা দেখেন দারকেশ্বর নদের জলের তোড়ে ভেসে গেছে সেই অস্থায়ী রাস্তারই একাংশ। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই বিকেলের দিকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন অংশে। তার জেরে দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তরের উচ্চতা বেড়েছে। বেড়েছে স্রোতের বেগও। আর সেই স্রোতেই ভেসে গিয়েছে প্রকাশ ঘাটের ওই অস্থায়ী রাস্তাও।
বর্ষার আগেই এভাবে নদের দু’পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় মাথায় হাত পড়েছে ইন্দাস ও পাত্রসায়ের ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের। অগত্যা ইন্দাস ও পাত্রসায়ের ব্লকের ওই অংশের মানুষকে এখন বিষ্ণুপুর শহরে যেতে পাড়ি দিতে হচ্ছে প্রায় আট কিলোমিটার ঘুরপথ। অনেকে এই ঘুরপথ এড়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা রাস্তার পাশ দিয়ে দ্বারকেশ্বর নদের কোমর জল ডিঙিয়েই যাতায়াত করছেন।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী অচিন্ত হেমব্রম বলেন, “সকালে কাজের জন্য রাস্তা দিয়ে গেলাম। ফেরার পথে দেখছি সেই রাস্তাই আর নেই। একেবারে বুক জল। নদী পেরিয়ে শেষে পৌঁছলাম।”