
বাঁকুড়া: নদীর ধারে বাস। কিন্তু সারাবছরই তীব্র জলকষ্টে ভুগছে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বাঁকি গ্রাম। গরম পড়তেই সেই গ্রামে শুরু হয়েছে জলের জন্য হাহাকার। পার্শ্ববর্তী নদী দিয়ে বয়ে যাওয়া নোংরা জল এবং প্রশাসনের তরফে পাঠানো ছোট্ট একটি ট্যাঙ্কারের জলে কোনওক্রমে গৃহস্থের চাহিদা মেটাচ্ছে গ্রামের প্রায় তিনশো পরিবার।
বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের বাঁকি গ্রাম। জলসঙ্কট কোনও নতুন ঘটনা নয়। গ্রামে বাড়ি বাড়ি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু সেই নলকূপের জল এতটাই দূষিত যে তা দিয়ে পানীয় জলের চাহিদা পূরণ তো দূরের কথা স্নান, কাপড় কাচা, বাসন ধোয়া সহ কোনও কাজই প্রায় হয় না। গ্রামে বাড়ি বাড়ি পাইপ লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে কলও।
বছর দু’য়েক আগে পাইপ লাইন বসানোর পর মাস খানেক সেই কল দিয়ে জল পড়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে দুবছরে এক ফোঁটা জলও পড়েনি সেই কলগুলি দিয়ে বলে অভিযোগ। গ্রামে সে অর্থে পুকুর নেই। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গন্ধেশ্বরী নদী দিয়ে বর্ষায় জল বয়ে গেলেও বাকি সময় সেই নদী দিয়ে বয়ে যায় শহরের বর্জ্য নোংরা জল। বাধ্য হয়ে সেই জলেই স্নান, কাপড় কাচা থেকে শুরু করে বাসন মাজা সহ গৃহস্থালীর বিভিন্ন কাজ সারেন গ্রামের মানুষ।
স্থানীয়দের দাবি নোংরা জল ব্যবহারের ফলে বছরভর ত্বকের সমস্যা সহ বিভিন্ন ধরনের অসুখে ভুগতে হয় তাদের। বারংবার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আনেন স্থানীয়রা। একাধিকবার আন্দোলনও করেন তারা। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে প্রশাসনের তরফে গ্রামে ট্যাঙ্কে করে জল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয় গ্রামবাসী সোমা গরাই বলেন, “এত দূর থেকে জল আনতে হয় কী বলব। গরমের সময় খুবই কষ্ট হয়। বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।”