বাঁকুড়া: সবে জেলা থেকে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর সফর শেষ হতেই বাঁকুড়া জেলায় সাংগঠনিক রদবদল। অভিষেকের নির্দেশেই বদলানো হল চার অঞ্চল সভাপতিকে। হঠাৎ কেন এই রদবদল, তা নিয়েও রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে বাঁকুড়া জেলা সফর শেষ হতেই বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল ঘটে তৃণমূলে। বাঁকুড়া দু নম্বর ব্লকে বদলে দেওয়া হল চার অঞ্চল সভাপতিকে। তৃনমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই রদবদল। সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তার পিছনে দায়ী, দাবি নেতৃত্বেরই একাংশের। অন্যদিকে, এই রদবদলকে ইস্যু করতে ছাড়েনি যুযুধান প্রতিপক্ষ। বিজেপির দাবি, কাটমানির বখরা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই বদল।
বেশ কয়েকমাস আগে বাঁকুড়া জেলায় বেশ কয়েকটি ব্লকে ব্লক সভাপতি পদে রদবদল করা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচি ঘোষণার ঠিক আগে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অঞ্চল সভাপতি পদেও কিছু রদবদল ঘটে। সেসময় বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের সাতটি অঞ্চলের মধ্যে জুনবেদিয়া, মানকানালি, সানবাঁধা ও বিকনা অঞ্চলে অঞ্চল সভাপতি পদে বদল ঘটানো হয়নি।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার কর্মসূচিতে বাঁকুড়ায় গিয়ে দু’নম্বর ব্লকের বলরামপুর মাঠে অধিবেশন ও রাত্রিবাস করেন। পরে তিনি নবজোয়ার যাত্রা নিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে যান। এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য জেলায় যেতেই তড়িঘড়ি বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের ওই চারটি অঞ্চলে বদলে ফেলা হয় অঞ্চল সভাপতি। কিন্তু কেন এই তড়িঘড়ি বদল? তৃনমূল নেতৃত্বের দাবি, সাংগঠনিক প্রয়োজনেই অভিষেকের নির্দেশেই এই রদবদল। নতুন দায়িত্ব পাওয়া অঞ্চল সভাপতিদের দাবি, পুরানো অঞ্চল সভাপতিরা সাংগঠনিক কাজে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়াতেই এই রদবদল।
বিজেপির দাবি, কাটমানির বখরা নিয়ে গন্ডগোল ও দলের অন্তর্কলহেই এই রদবদল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে পুরানো অঞ্চল সভাপতিদের কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একই পদে তাঁরা থেকে গেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে এই আশঙ্কাতেই তড়িঘড়ি এই রদবদল।
বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিধান সিংহ বলেন, “এটা কোনও হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি চলছিল, আমরা ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। শীর্ষ নেতৃত্ব যখন বৈঠকে বসেছিলেন। তখন আমাদের সুবিধা অসুবিধার কথা জানাই। দলের সংগঠনের ওপর নজর রেখেই শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল, “নব নিযুক্ত ব্লক সভাপতির সঙ্গে পুরনো অঞ্চল সভাপতির বখরা নিয়ে মতের মিল হচ্ছিল না। তাই এই রদবদল। তৃণমূলের এটাই উদ্দেশ্য।”